৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা বড় হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয়বারের মতো এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। গতকালও তিনি জানিয়েছেন যে, মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করা হবে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, নতুন নারী সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হওয়ার পর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন করা হবে। সে হিসাবে চলতি মাসের শেষ দিকে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হতে পারে। মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন আরও অন্তত ১০ জন নতুন মুখ—এমনটাই মনে করছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, নতুন মন্ত্রিসভায় কারা থাকবেন, কারা থাকবেন না—সে বিষয় নিয়ে নানা রকম জল্পনা কল্পনা থাকলেও বিষয়টি একান্তই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারের বিষয়ে। প্রধানমন্ত্রী তার স্বীয় বিবেচনায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তবে মন্ত্রিসভায় কারা থাকতে পারেন, না পারেন—এ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনুমান করা হচ্ছে এবং নানা রকম সমীকরণ মেলানো হচ্ছে। যেমন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতা মির্জা আজম, যিনি সাত বার এমপি হয়েছেন। এবার তিনি হুইপ হননি। সংসদীয় কোন কমিটির চেয়ারম্যানও হয়নি। কাজেই সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় তার অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে মনে করছেন বিভিন্ন মহল। গত রোববার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎও হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। যদিও এই সাক্ষাতে কী আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে মন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে আলোচনায় থাকা নাম সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ একটি সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে তার মনোনয়ন প্রাপ্তির সম্ভাবনা অনেক কমে গেছে। এখন নারী সংসদ সদস্যরা চূড়ান্ত হলে সেখানে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কোন একজনের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার নাম আলোচিত হচ্ছে। তিনি সংরক্ষিত আসনে শেষপর্যন্ত এমপি নির্বাচিত হলে সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসাবে তার উপস্থিতি দেখা যেতে পারে।
ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং বিশ্ব ব্যাংকে বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ড. আহমদ কায়কাউস পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগ পত্র বিশ্ব ব্যাংকে খুব শীঘ্রই গৃহীত হতে যাচ্ছে। ড. কায়কাউস অর্থ প্রতিমন্ত্রী হতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে বিভিন্ন সরকারি মহলে। এছাড়াও আওয়ামী লীগের যারা বিভিন্ন সময়ে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন তাদের ব্যাপারেও কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে শ্রম মন্ত্রণালয় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় হিসাবে সামনে এসেছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ে এখন পর্যন্ত কাউকে দেওয়া হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের কোন সিনিয়র গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে শ্রম মন্ত্রণালয় দেওয়া হতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণমন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টিও বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। এছাড়াও কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে তরুণ মন্ত্রীদেরকে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা যদি নারী সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তাহলে তার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণমন্ত্রী অথবা একজন উপমন্ত্রী দেওয়া হতে পারে এমন আলাপ আলোচনা চলছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রীর বিষয়টি নিয়েও বিভিন্ন মহলে আলাপ আলোচনা শোনা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রিসভার রদবদলের সঙ্গে সঙ্গে দপ্তর পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়েও কেউ কেউ কথা বলছেন। কিন্তু বিভিন্ন মহল মনে করছেন যে, মাত্র এক মাস বয়সী মন্ত্রিসভার দপ্তর পরিবর্তন প্রধানমন্ত্রী করবেন না। বরং তাদেরকে কিছু সময় দিতে চান। তবে পরিকল্পনা সহ কিছু স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে যে প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ হতে যাচ্ছে সেটি মোটামুটি নিশ্চিত।