ইনসাইড পলিটিক্স

ফখরুলের মুক্তিতে কি চাঙ্গা হবে বিএনপি?


প্রকাশ: 14/02/2024


Thumbnail

অবশেষে সবগুলো মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার এখন মুক্তিতে বাধা নেই। আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেই তিনি মুক্তি পাবেন। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির নারকীয় তাণ্ডবের পরদিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তার গ্রেপ্তারের পর আন্দোলনের গতি আস্তে আস্তে স্তিমিত হয়ে যায়। আর কোন নেতাই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি। সাড়ে তিন মাস সময় কারান্তরীণ থাকার পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বিরুদ্ধে করা ১১ টি মামলার জামিন পেলেন। 

এখন প্রশ্ন উঠেছে যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিনের পর মি ম্রিয়মান হতাশ, বিধ্বস্ত বিএনপি কি নতুন করে চাঙ্গা হবে? বেগম খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হয়ে উঠেছিলেন বিএনপির প্রধান নেতা এবং বিএনপির আন্দোলন এবং অন্যান্য কর্মসূচিগুলো তাকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছিল। যদিও বিএনপির মধ্যে বেশির ভাগ নেতাই মনে করেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসলে একজন পুতুল। যে ভাবে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেভাবে তারেক জিয়া তাকে আদেশ করেছেন সেভাবেই তিনি বিএনপিকে পরিচালনা করেছেন। এখানে তার কোন কৃতিত্ব নেই। কিন্তু মহাসচিব সক্রিয় থাকার ফলে আস্তে আস্তে বিএনপি শক্তিশালী হচ্ছিল এবং বিএনপিকে আগের চেয়ে স্বতঃস্ফূর্ত দেখাচ্ছিল বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও এক্ষেত্রে মির্জা ফখরুল অবদান কতটুকু তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন রয়েছে। 

তবে মহাসচিব হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সার্বক্ষণিক ছিলেন। তিনি দলকে সময় দিয়েছেন এবং দলের নেতাকর্মীদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। আর একারণেই অনেকে মনে করেন, বিএনপির প্রধান দুই নেতা কার্যকর না থাকার কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হয়ে উঠেছিলেন বিএনপির প্রধান নেতা। বেগম খালেদা জিয়া ২০১৮ সাল থেকেই রাজনীতিতে নেই। অন্যদিকে তারেক জিয়া লন্ডনে পলাতক। বাংলাদেশে আর যাই হোক বিদেশে বসে হুকুম দিয়ে রাজনীতি করা যায় না এবং সংগঠনও তৈরি করা যায় না। যার প্রমাণ বিএনপি। 

মির্জা ফখরুল আলমগীর গ্রেপ্তারের পর বিএনপিতে বিভিন্ন রকম নেতৃত্বে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও মির্জা ফখরুল গ্রেপ্তারের পরপরই বলা হয়েছিল যে, একজন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয়নি। শেষের দিকে অবশ্য ড. মঈন খান অঘোষিত ভাবে মহাসচিবের ভূমিকা পালন করেছিলেন। কিন্তু একজন একাডেমিক লোক যিনি মাঠের রাজনীতির সঙ্গে তেমন ভাবে সম্পৃক্ত নন, তিনি বিএনপির মতো একটি সংগঠনের মহাসচিবের ভূমিকায় যে সফল হতে পারে না তার প্রমাণ রেখেছেন ড. মঈন খান। 

মঈন খান মূলত কূটনীতিকপাড়ায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। মাঠের হাজারো নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ, তাদেরকে প্রেরণা দেওয়া এবং বিভিন্ন কর্মসূচির ব্যাপারে কথাবার্তা বলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে মঈন খানের ভূমিকা ছিল খুবই অসফল। অন্যদিকে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা রুহুল কবির রিজভী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গ্রেপ্তারেরর পর ম্রিয়মান হয়ে পড়েছিলেন। তিনি সংগঠক নন, নিজস্ব ইমেজ বৃদ্ধির জন্যই কাজ করেন এমন অভিযোগ বিএনপিতে তার বিরুদ্ধে রয়েছে। এর ফলে নির্বাচনের পরে বিএনপি আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত এগিয়ে নিতে পারেনি। এই বাস্তবতায় বিএনপি সংগঠনটি আস্তে আস্তে হতাশায় ডুবতে থাকে। এই অবস্থায় নির্বাচনের পরবর্তীতে আন্দোলন নয় বরং সংগঠন টিকিয়ে রাখাই তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। আর এই চ্যালেঞ্জ কিভাবে বিএনপি মোকাবিলা করবে সে নিয়ে বিএনপির মধ্যেই দেখা দিয়েছিল নানা রকমের হতাশা। আর এরকম পরিস্থিতিতে অবশেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্তি পেলেন। এখন দেখার  বিষয় ফখরুলের মুক্তি বিএনপিতে গতি আনতে পারে কিনা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭