ফুটবলে নারী-পুরুষ বৈষম্য কমাতে ফিফার যুগান্তকারী উদ্যোগ

ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে ফুটবল যেন এক আবেগের নাম। আর সেই আবেগের মহাযজ্ঞ হিসেবে ধরা হয় বিশ্বকাপকে। তবে এই বিশ্বকাপে রয়েছে নারী-পুরুষ ভেদে বৈষম্য। যার জন্য বারবার সমালোচিত হতে হয়েছে ফিফাকে। আর তাই আগামীতে বিশ্বকাপে নারী-পুরুষের সমতা বজায় রাখতে যুগান্তকারী উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক এই সংস্থাটি।

১৯৩০ সাল থেকে পুরুষ বিশ্বকাপ ও ১৯৯১ সালে নারী বিশ্বকাপ শুরু হয়। পুরুষদের চেয়ে ৬১ বছর পর নারীরা বিশ্বকাপের মঞ্চে আসে। তবে অল্প সুবিধা পেলেও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে নারী ফুটবলাররা। তাই মাঠে এবং মাঠের বাইরের সব ক্ষেত্রেই নারী অচিরেই সমান অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করছে ফিফা।

যার জন্য তারা বিশ্বকাপের প্রতীক ট্রফিটি দিয়ে শুরু করতে চায়। নানান সময়ে পুরুষদের স্বর্ণে মোড়ানো ট্রফি ও নারীদের রুপায় মোড়ানো ট্রফি নিয়ে বেশ সমালোচনায় পড়তে হয়েছে ফিফাকে। যে কারণে এবার নারী ও পুরুষদের একই ট্রফি দেওয়ার ভাবনায় ফিফা।

২০২২ সালে কাতারে ছেলেদের এবং গত বছর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে মেয়েদের সর্বশেষ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছেলেদের ২২টি ও মেয়েদের ৯টি বিশ্বকাপ আসর হয়ে গেলেও সব মানদণ্ডেই ট্রফিগুলো ছিল আলাদা।

আকার, ওজন, উপাদান, মূল্য সব মানদণ্ডেই ট্রফিতে সমতা আনতে গবেষণা চালাচ্ছে ফিফা। আগামী ১৭ মে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ফিফার ৭৪তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পুরুষ ও নারীদের বিশ্বকাপ ট্রফি একই রকম করার প্রস্তাব পেশ করবে ফিফা।

এমনটাই খবর স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম দারিও ডিএসের। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপেই এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে চায় সংস্থাটি। ট্রফির পাশাপাশি অর্থ পুরস্কারেও (প্রাইজ মানি) সমতা নিয়ে আসার পরিকল্পনা ফিফার।

পুরুষ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হাতে এখন যে ট্রফিটা দেওয়া হচ্ছে, তা ক্রীড়াজগতের ইতিহাসে এখনও সবচেয়ে ব্যয়বহুল। ১৮ ক্যারেট সোনার তৈরি ট্রফিটার বর্তমান দাম দুই কোটি মার্কিন ডলার (২১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা)।

অন্যদিকে, মেয়েদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল যে ট্রফি পেয়ে থাকে, সেটাতে ২৩ ক্যারেট সাদা ও হলুদ সোনার প্রলেপ দেওয়া থাকে। দাম মাত্র ৩৭ হাজার ৪০০ ডলার (৪১ লাখ টাকার কিছু বেশি)। তবে টিভি স্বত্ব ফিফার এ সমতা নীতি কার্যকরে বাধা হতে পারে।

পুরুষদের বিশ্বকাপে যে পরিমাণ টিভি দর্শক হয়, নারী টুর্নামেন্টে তা হয় না। তাই নারীদের বিশ্বকাপ থেকে ফিফার আয়ও অনেক কম হয়। তবে নারীদের সর্বশেষ বিশ্বকাপে টিভি দর্শক ও মাঠে দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড হয়েছে। এরপরও বিশাল ব্যবধান রয়েই গেছে।