ইনসাইড পলিটিক্স

ধীরে ধীরে নতুন সরকারকে মেনে নিচ্ছে বিরোধী দলগুলো?


প্রকাশ: 15/02/2024


Thumbnail

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত ১১ জানুয়ারির নতুন সরকার এক মাসের কিছু বেশি সময় অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে ৭৩ টির বেশি দেশ-সংস্থা নতুন সরকারকে স্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে এই সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি বা মেনে নেয়নি। বরং এই সরকারকে যেন আন্তর্জাতিক মহল স্বীকৃতি না দেয় কিংবা বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই আহ্বানই জানিয়ে আসছে বিরোধী শিবিরগুলো। বিএনপি সহ তার সমমনা দলগুলো নির্বাচনের পরও এক দফা আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। বাস্তবতা সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মুখে যাই বলুক না কেন তারা ধীরে ধীরে নতুন সরকারকে মেনে নিচ্ছে বলেই মনে করছেন কোন কোন বিশ্লেষক। তারা এরকম বক্তব্যের স্বপক্ষে বেশ কিছু যুক্তিকেও সামনে আনছে।

কোন কোন মহল দাবি করছে যে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এখন আস্তে আস্তে নতুন সরকারকে মেনে নিচ্ছে। যা প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ঘটনাবলির মাধ্যমে। এর মধ্যে অন্যতম হলো বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সহ বিএনপির একাধিক নেতার কারামুক্তি। উল্লেখ্য যে, গত প্রায় এক সপ্তাহে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের প্রায় এক ডজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। সর্বশেষ আজ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী কারামুক্ত হলেন। এর আগে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোর জামিন শুনানি শেষ করেই কারামুক্তির বিষয়টি সম্পন্ন হয়। অথচ বিএনপি গত ডিসেম্বরে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা করেছিল। যেখানে দলের হাইকমান্ড থেকে বলা হয়েছিল যেন দলের নেতাকর্মীরা আদালতে হাজিরা না দেন, এই সরকারকে অসহযোগিতা করেন ইত্যাদি। কিন্তু এখন দলটি সেই অবস্থান স্পষ্টত সরে এসেছে। যদিও বিএনপির এখন পর্যন্ত অসহযোগ আন্দোলন স্থগিত বা প্রত্যাহার করেনি। কিন্তু দলের নেতাকর্মী এখন নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন, সরকারকে সহযোগিতা করছেন। বড় ধরনের কোন রাজনৈতিক কর্মসূচিও চোখে পড়ছে না। 

শুধু বিএনপি একা নয়, বিএনপির সাথে থাকা সমমনা দলগুলোও এখন সরকারের কাছে বশ্যতা স্বীকার করতে শুরু করেছে। সরকারকে সহযোগিতা করছে। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। আজ আদালত অবমাননার অভিযোগে হাইকোর্টে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করেছেন তিনি। যদিও আদালত তাকে ক্ষমা করেননি। ক্ষমার আবেদন নাকচ করে মুচলেকা দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত। উল্লেখ্য যে, গণঅধিকার পরিষদ বিএনপির সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বিএনপির সমান্তরালে প্রতিটি কর্মসূচি পালন করে আসছিল গণঅধিকার পরিষদ। শুধু তাই নয়, বিএনপির নেতাদের মতো নুরুল হক নুরও আদালত দলীয়করণ করার অভিযোগ তুলেছিল। সরকারকে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল, যেকোন মুহুর্তে সরকারের পতন ঘটানোর ঘোষণাও দিয়েছিল একাধিকারবার। অথচ সেই নুর এখন সরকারের বশ্যতা স্বীকার করলো। যেখানে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছিল নির্বাচনের পরপর। কিন্তু এখন যেভাবে আদালত পাড়ায় বিএনপি সহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের আদালতে উপস্থিতি বেড়েছে তাতে একে সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার নামান্তর বলা যায় কিনা সেটি প্রশ্ন এখন সামনে আসছে। যদিও বিএনপির নেতাকর্মীরা এটি অস্বীকার করেছেন। তারা বলছে যে, এটা সরকারকে স্বীকার করে নেওয়া নয়। বরং আন্দোলনের কৌশল হিসেবে দলের নেতাকর্মীদের জামিনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭