ইনসাইড পলিটিক্স

ডিসেম্বরে কাউন্সিল করতে চায় বিএনপি


প্রকাশ: 17/02/2024


Thumbnail

আন্দোলন এবং সংগঠন দুটিই পাশাপাশি চালাতে চায় বিএনপি। একদিকে যেমন সরকার বিরোধী আন্দোলনকে অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি, অন্যদিকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সংগঠন গোছানোরও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি এখন সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য সাংগঠনিক বিন্যাস ঠিক করার ওপরই সবচেয়ে বেশি নজর দিচ্ছে। আর এই নজর দেওয়ার প্রেক্ষিতেই আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে অষ্টম কাউন্সিল করতে চায় বিএনপি। আর এই কাউন্সিলের ব্যাপারে ইতোমধ্যে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে বলে বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত বৃহস্পতিবার কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন। শুক্রবারই তার সাথে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার কথা হয়েছে এবং এই আলোচনায় সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি এবং সংগঠনকে গোছানোর বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। 

বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন যে, কৌশলগত কারণে বিএনপি এখন সংগঠন গোছাতে মনোযোগ দেবে। প্রথমত, সামনের দিনগুলোতে আন্দোলন করা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ, ক’দিনের মধ্যে রোজা শুরু হচ্ছে। এরপর পবিত্র ঈদুল ফিতর। তারপর বর্ষাকাল। এই সময় বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তুললেও তা সফল হবে না। এছাড়া ২৮ অক্টোবরের পর থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা রকম সঙ্কট, সমস্যা এবং হতাশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সফলভাবে নির্বাচন করার পর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বেড়ে গেছে। 

বিএনপির অনেকেই মনে করছেন, তাদের রাজনৈতিক কৌশল ভুল ছিল। এর ফলে অনেক নেতাই এখন দলে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। তাছাড়া বিএনপির মাঠ পর্যায়ের বহু নেতা কারাগারেই আছেন অথবা আত্মগোপন করে আছেন। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির পক্ষে এই সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলা প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার। আর এটি বিএনপির শীর্ষ স্থানে তারা অনুভব করছেন। 

তবে বিএনপির নেতারা মনে করছেন যে, মাঠ থেকে উঠে আসলে সেটি আরও সর্বনাশ হবে। এজন্য মাঠের আন্দোলন অব্যাহত রাখতে চায় বিএনপি। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের চেয়ে বিএনপি জোর দেবে বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে। যেমন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস সংকট ইত্যাদি বিষয়কে সামনে নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছে দলটি। 

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, সামনে রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে একটি অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। আর এই পরিস্থিতিতে বিএনপি কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করতে চায়। ইস্যু ভিত্তিক কর্মসূচির মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুটিকেও তারা বাঁচিয়ে রাখতে চায়। এ রকম একটি পরিস্থিতিতে আস্তে আস্তে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানোটাই বিএনপির প্রধান লক্ষ্য। এই আন্দোলনের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য বিএনপি একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছে। আগামী সাতদিনের মধ্যে এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে বলে বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন। 

তৃণমূল থেকে শুরু করে ঢাকার কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা, জেলা উপজেলা পর্যায়ের কমিটি করা, যারা অকার্যকর এবং নিষ্ক্রিয় তাদেরকে বসিয়ে দিয়ে মাঠে যারা রাজনীতি করছেন, দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করছেন তাদেরকে নেতৃত্বে আনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। একই ভাবে স্থায়ী কমিটিতে নতুন মুখ সংযোজন করা, স্থায়ী কমিটিকে আরও কার্যকর করা এবং এর ধারাবাহিকতায় একটি কাউন্সিল অধিবেশন ডিসেম্বরের মধ্যে করার পরিকল্পনা নিচ্ছে বিএনপি।

বিএনপি মনে করছে যে, এই কাউন্সিলের পর থেকেই বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে জোরেশোরে আন্দোলন করবে এবং সেই আন্দোলনের মাধ্যমেই তারা কিছু অর্জন করতে পারবে। এখন আন্দোলন নয় সংগঠনের ওপরই বেশি মনোযোগ দিতে চায় বিএনপি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭