ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নিয়ে উত্তপ্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল


প্রকাশ: 17/02/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, দলে কোন্দল-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভা ডেকে সবাইকে সতর্ক করেছেন। এরপর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে বা দলে বিভক্তি তৈরির চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা, উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি-কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। অনেক জায়গায় এখন আওয়ামী লীগ মুখোমুখি অবস্থানে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, উপজেলা নির্বাচনে প্রতিটি উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের অন্তত চার থেকে পাঁচ জন প্রার্থী প্রার্থী দাঁড়াতে পারেন। যদিও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এমপি কোন প্রার্থীকেই সমর্থন দিতে পারবেন না। কিন্তু বাস্তবতা হলো যে, এমপিরা ইতোমধ্যেই তাদের নির্বাচনী এলাকায় কে উপজেলা চেয়ারম্যান হবে, তার পছন্দের ব্যক্তি হিসেবে কে নির্বাচনে দাঁড়াবে তা ঠিকঠাক করে দিচ্ছেন। সবগুলো উপজেলাতেই এমপিদের পছন্দের ব্যক্তি যে প্রার্থী হচ্ছেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত।

এমপিরা যখন তাদের নিজেদের মতো করে প্রার্থী ঠিক করে দিচ্ছেন, তখন আওয়ামী লীগের অন্যান্য প্রভাবশালী নেতারা কেমন করে চুপচাপ বসে থাকবেন, তারাও তাদের মতো করে প্রার্থী দিচ্ছেন। এই উপজেলা নির্বাচনে একটি বড় বৈশিষ্ট্য দেখা যাবে যে, অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা উপজেলার জন্য স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হবেন। বিশেষ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ করা যে সমস্ত তরুণরা আপাতত এমপি হতে পারছেন না, সংগঠনে তাদের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ নয়, তাদের মধ্যে নানা না পাওয়ার বেদনা এবং হতাশা রয়েছে, এরা এবার উপজেলা নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছেন। এই সমস্ত তরুণদের নিজস্ব কর্মীবাহিনী আছে। অতীতে ছাত্রলীগ বা যুবলীগ করার জন্য তাদের নিজস্ব বলয় তৈরি হচ্ছে এবং এই বলয়ের মাধ্যমে তারা নির্বাচনে একটি বড় ধরনের চমক দেখাতে চায়।

তবে স্থানীয় বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে যে, যুবলীগ বা ছাত্রলীগের প্রাক্তন নেতারা নির্বাচনে দাঁড়ালে নির্বাচন সহিংস হয়ে উঠবে। কারণ, এই তরুণরাই তাদের শক্তি। এরা এমপি এবং আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্বাচন করতে পারবে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদিও উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে স্বতন্ত্রভাবে। তারপরও আওয়ামী লীগের নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। একইভাবে আওয়ামী বিরোধী ভোটব্যাংক রয়েছে। আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী বিজয়ী হলে বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী বা জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী বাড়তি সুবিধা পাবে। কারণ যারা আওয়ামী লীগের সমর্থন করেন বা আওয়ামী লীগের যে সমস্ত প্রার্থীরা নির্বাচনে দাঁড়াবেন তাদের ভোটগুলো ভাগ হয়ে যাবে।

অন্যদিকে বিএনপি বা জাতীয় পার্টি তাদের নিজেদের ভোটগুলো যদি অখন্ড রাখতে পারেন তাহলে সেই উপজেলাগুলোতে তাদের জন্য একটি সুবিধাজনক অবস্থা তৈরি হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই উপজেলাগুলোকে জটিল সমীকরণে নিয়ে গেছে, এই লড়াইয়ের ফলে উপজেলা নির্বাচন সহিংস হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি উপজেলায় আওয়ামী লীগ বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭