ইনসাইড বাংলাদেশ

ড. ইউনূসকে নিয়ে সরব হচ্ছে কূটনীতিকপাড়া


প্রকাশ: 17/02/2024


Thumbnail

নির্বাচনের আগে কূটনীতিক পাড়া সরব ছিল। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে উঠে বিভিন্ন দূতাবাসগুলোর দৌড়ঝাঁপ ছিল দৃষ্টিকটু। নির্বাচনের পর অবশ্য সেই দৃশ্য পাল্টে যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বললেও আস্তে আস্তে নতুন সরকারকে মেনে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, কূটনীতিকপাড়াও এখন নতুন সরকারের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ এর হিড়িক পড়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই ড. ইউনূস ইস্যু যেন একটি বড় ধাক্কা দিয়েছে।

কূটনীতিকরা যখন নতুন সরকারের সাথে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে, বিভিন্ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করছেন ঠিক সেই সময় ড. ইউনূস ইস্যুটি সামনে উঠে এসেছে এবং ইউনূস ইস্যুতে সরব হচ্ছে কূটনীতিকপাড়া। যদিও ড. ইউনূস এক ধরনের প্রতারণামূলক বক্তব্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সহানুভূতি আদায় করার চেষ্টা করছেন কিন্তু গ্রামীন ব্যাংক বা অর্থ মন্ত্রণালয় ড. ইউনূসের মনগড়া অভিযোগ গুলোর যথাযথ জবাব দিতেও ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে যে সমস্ত বক্তব্যগুলো আসছে, সেই বক্তব্যগুলো গণমাধ্যমে গুরুত্ব পাচ্ছে না। বরং ইউনূসের আর্তনাদ এবং তার পক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব সহ বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, কূটনীতিকপাড়ায় অন্তত আটটি দেশের কূটনীতিকরা ড. ইউনূস ইস্যু নিয়ে এক অনির্ধারিত বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। ড. ইউনূসের সঙ্গে অবিচার করা হচ্ছে, তার গ্রামীণ কল্যাণ দখল করা হয়েছে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। সরকার ড. ইউনূসের প্রতি কেন অবিচার করছে সেই প্রসঙ্গটিও আলোচনা হয়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, জাতিসংঘের মহাসচিবের বক্তব্যের সূত্র ধরেই এই ধরনের অনির্ধারিত বৈঠক হয়েছে। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, ড. ইউনূস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবের কারণেই ইউনূস ইস্যুতে বাংলাদেশের পশ্চিমা দূতাবাসগুলো সরব হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইউনূসের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিবৃতি দিয়েছে। 

তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, ইউনূসের বিষয়ে সরকারের কিছু করণীয় নেই। এটি গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে গ্রামীণ কল্যাণের বিরোধ। গ্রামীণ ব্যাংক যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কল্যাণের জন্যই গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু গ্রামীণ কল্যাণ শেষ পর্যন্ত ইউনূসের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, যেটি ছিল এক ধরনের প্রতারণা এবং জালিয়াতি। কিন্তু কূটনীতিকদের মধ্যে থেকে প্রশ্ন উঠেছে যে, এতদিন পর কেন বিষয়টি নিয়ে সরকার তৎপর হচ্ছে। এর জবাবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, বিষয়টি সরকারের না, বিষয়টি গ্রামীণ ব্যাংকের এবং ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে সরে যাওয়ার পরও তার প্রভাব বলয় সেখানে ছিলো। আর এ কারণেই কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এখন ড. ইউনূসের বিষয়টি নিয়ে কূটনীতিক মহলে সরকারের সঙ্গে কিভাবে বোঝাপড়া করবে সেটি দেখার বিষয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি পশ্চিমা দেশের কূটনীতিক বলেছেন যে, ইউনূসকে নিয়ে সরকার কিছুটা বাড়াবাড়ি করছে বলে তারা মনে করছে। বিশেষ করে তার দণ্ড, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা এবং অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। তবে কূটনীতিকরা ড. ইউনূসের ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কিভাবে দেনদরবার করবেন সেই বিষয়টি এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭