ইনসাইড পলিটিক্স

রওশনের পাশে কেউ নেই


প্রকাশ: 17/02/2024


Thumbnail

আলাদা জাতীয় পার্টি করার স্বপ্ন ধূসর হয়ে যাচ্ছে রওশন এরশাদের। একই তিনি তিনি বয়স্ক, নানা রকম অসুখ বিসুখে ন্যুব্জ হয়ে আছেন। অন্যদিকে যারা তাকে উস্কে দিয়েছিল জাতীয় পার্টি ভাঙার জন্য এবং তাকে সংরক্ষিত আসনের এমপি বানানোর জন্য তারাও এখন পিছু টান দিয়েছেন। ফলে রওশন পাশে কেউ নেই। রওশন এখন একা। অন্যদিকে জি এম কাদের রাজনৈতিক কৌশলে জয়ী হয়েছেন। তিনি তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরকে মনোনয়ন দেননি। আর এই মনোনয়ন না দেওয়ার ফলে জাতীয় পার্টির একটি অংশ যারা শেরীফা কাদেরের বিরোধী ছিল, জি এম কাদের তার স্ত্রীকে কেন সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেবেন- এ নিয়ে উত্তপ্ত ছিল, তারাও এখন নমনীয় হয়েছেন। ফলে আপাতত জাতীয় পার্টিতে ভাঙনের যে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল সেটি কেটে গেছে। 

রওশন এরশাদ কোনোভাবেই একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই—এমনটাই মনে করছেন জাতীয় পার্টির জি এম কাদের বিরোধীরা। তারা আরও মনে করছেন যে, যদি রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি ভাগ হয় তাহলে সেটিকে সরকারও সমর্থন দেবে না। বরং সরকার জি এম কাদেরের সঙ্গে একটি সমঝোতাপূর্ণ সম্পর্ক রেখে সংসদকে কার্যকর করতে চায় আগামী পাঁচ বছর। কারণ এই সংসদ কতটুকু কার্যকর বা অর্থবহ তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সবসময় নজর রাখছে। সে কারণেই জি এম কাদেরকে এখন দূরে ঠেলে দিতে রাজি নয় সরকার। বরং জি এম কাদেরকেই সরকার এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। রওশন এরশাদকে তারা আমলে নিচ্ছে না।

রওশন এরশাদের সঙ্গে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ ইতোমধ্যে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যরাও যারা আছেন বা নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছেন তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন যে, জাতীয় পার্টির সিংহভাগ নেতাকর্মীরা রওশন এরশাদের সঙ্গে নেই। এ রকম একটা বাস্তবতায় রওশন এরশাদের পৃথক জাতীয় পার্টি করার উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। রওশন এরশাদ যে জাতীয় পার্টি থেকে জি এম কাদের এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সেটি অকার্যকর হয়েছে। জাতীয় পার্টির সিংহভাগ নেতাই মনে করেন যে, রওশন এরশাদের চেয়ে জি এম কাদের দলের জন্য অনেক কার্যকর এবং রওশন এরশাদ দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করলে দলের জন্য খুব একটা ইতিবাচক হবে না। বরং এমনি সাংগঠনিক ভাবে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হতে থাকা দলটি আরও ক্ষয়িষ্ণু হয়ে প্রায় নিঃশেষ হয়ে যাবে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, রওশন এরশাদ আশা করেছিলেন তিনি যখন আলাদা জাতীয় পার্টি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করবেন, তখন তার এই প্রক্রিয়ায় সরকারও সমর্থন দেবে। কারণ জি এম কাদেরকে চাপে রাখার জন্যই সরকার রওশন এরশাদকে সক্রিয় রাখতে চাইবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে সরকার সেই পথে পা বাড়ায়নি। বরং জি এম কাদেরকে বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। জি এম কাদের যেন সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করে সে ব্যাপারেও সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। সরকারের সাথে নির্বাচনের আগে জি এম কাদেরের যে সন্দেহ অবিশ্বাস এবং টানাপোড়েন ছিলো তা কেটে গেছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল। আর এ রকম বাস্তবতায় জি এম কাদেরই এখন প্রধান এবং একমাত্র জাতীয় পার্টি হিসেবে থাকছে। অন্যদিকে রওশন এরশাদের পাশে কেই নেই। ফলে জাতীয় পার্টির ভাঙন আপাতত বন্ধই থাকছে। জাতীয় পার্টিকে যারা ভাঙতে চেয়েছিলো তারাও এখন গুটিয়ে গেছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭