ইনসাইড বাংলাদেশ

কক্সবাজারে পর্যটকের চাপে হোটেল ভাড়া কয়েকগুণ বৃদ্ধি


প্রকাশ: 18/02/2024


Thumbnail

কক্সবাজারে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। অতিরিক্ত পর্যটকের চাপে কোথাও হোটেলের রুম খালি নেই। ফাগুনের শুরু এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কক্সবাজার এখন পর্যটকের দখলে। পর্যটকের ভিড়  বাড়ার সাথে সাথে হোটেল ভাড়া ও বেড়েছে কয়েকগুণ। ৮০০ টাকার হোটেল রুম ভাড়া এখন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা।

 

পর্যটক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যটক থাকবে কক্সবাজারে। বিশেষ করে চলতি সপ্তাহে ২১ ফেব্রুয়ারী। এক দিন পর আবার সাপ্তাহিক দুইদিনের ছুটি। সুতরাং আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত কক্সবাজারে অধিকাংশ হোটেলে রুম খালি নেই।

 

শীতের শেষে বসন্তের আগমনে বেড়েছে পর্যটক, এছাড়া সপ্তাহিক ছুটির দিনে কক্সবাজারে ছুটে এসেছেন কয়েক লাখ পর্যটক। অফ সিজনে ডিসকাউন্ট থাকলে ও ভরা মৌসুমে হোটেল ভাড়া কয়েকগুণ বাড়িয়ে মনোপলি ব্যবসা করছেন হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকরা। 

 

ঋতুরাজ বসন্তের প্রারম্ভে সপ্তাহিক ছুটিতে কক্সবাজারে ঘুরতে আসা পর্যটক ঢাকা ধানমন্ডির ব্যাংকার হাসনাত আবদুল হালিম জানান, স্বপরিবারে কক্সবাজার এসেছি। উদ্দশ্য ছিল এক সপ্তাহ থাকবো কিন্তু হোটেল ভাড়া, খাবার যানবাহন ভাড়াসহ জিনিসপত্রের যে দাম তাতে সংক্ষিপ্ত করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন অসংখ্য পর্যটক।  

 

বরিশাল থেকে আসা শারমিন চৌধুরী পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, শুক্রবার অনেক চেষ্টা করে ৭ জনের টীম নিয়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজার এসেছি।  কোথাও রুম নেই। হোটেলে রুম না  পেয়ে একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়েছি। তিনের জন্য তিনটি রুম ১৭ হাজার টাকা। 

 

ঢাকা থেকে আসা আরেক পর্যটক সজীব বলেন, ‘ফ্যামিলি নিয়ে ঘুরতে আসছিলাম। এখানে কোথাও রুম খালি নেই। যেসব রুম খালি আছে সেগুলো কোনো মানের না। রুমগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। তার মধ্যে ৫ হাজার টাকা চাই। কী করবো বুঝতে পারছি না’। 

 

কক্সবাজারে বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী নোমান শরীফ বলেন, ‘আমরা ঢাকা থেকে কয়েকজন বন্ধু বেড়াতে এসেছি। হোটেলে রুম না পেয়ে  ঘুরতে ঘুরতে কয়েকটি কটেজ দেখলাম। দাম আকাশচুম্বী। আর একদিনের জন্য ভাড়া ও দেবেন না।রুমগুলো দেখে মনে হলো এটি সর্বোচ্চ ১ থেকে দেড় হাজার টাকা হবে। তারা আমাদের কাছ থেকে দুই দিনের জন্য প্রতিটি কক্ষের ভাড়া নিয়েছেন সাড়ে তিন হাজার টাকা করে।পর্যটক বেশি আসায় হোটেল ব্যাবসায়ীরা এমন আচারণ করছে’।

 

ব্যবসায়ীদের এসব আচরণে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে শঙ্কা করছেন কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা।

 

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, হোটেল-মোটেলে নির্ধারিত ভাড়ার চার্ট রাখার নিয়ম থাকলেও কোনো হোটেলেই তা নেই। 

 

হোটেল রয়েল বীচ রিসোর্টের মালিক জয়নাল আবেদীন বলেন, আমার হোটেলে কোন ভাড়া বাড়ানো হয়নি। হয়তো কোন কোন হোটেলে রুম ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। তবে সেটি সঠিক আমার জানা নেই। তবে আমরা অফ সিজনে ডিসকাউন্ট দিয়েছি, এখন তা দিতে পারছিনা।

 



কক্সবাজার গেস্ট এবং রেষ্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, ‘বৃহস্পতিবার থেকে সব হোটেলের রুম বুকিং। তাই পর্যটকরা রুম পাচ্ছেন না। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সেটি আমার জানা নেই। তবে কিছু অসাধু ব্যাবয়াসী এমন ভাড়া নিচ্ছে। 

 

কলাতলী হোটেল মোটেল জোনের সাধারণ সম্পাদক মুকিম খাঁন জানান, ‘শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) থেকে মূলত পুরো ফেব্রয়ারী মাস পর্যন্ত প্রচুর পর্যটকের আনাগোনা থাকবে কক্সবাজারে’। 

 

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ‘প্রচুর পর্যটক আসছেন কক্সবাজারে। গেল মাসের তুলনায় এই মাসে পর্যটক বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শনিবার ১৭ ফেব্রুয়ারি - ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব সেক্টরে  অন্তত শত কোটি টাকার বানিজ্য হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে’।

হোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা বলেন, ‘রুম ভাড়া বেশি  নেওয়ার অভিযোগটি আমরা অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নিচ্ছি। পর্যটক হয়রানি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ পর্যন্ত কোন পর্যটক মৌখিক কিংবা লিখিত অভিযোগ করেননি’।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭