ইনসাইড পলিটিক্স

মন্ত্রী ছাড়া নেতাদের দাম কমছে আওয়ামী লীগে


প্রকাশ: 18/02/2024


Thumbnail

সরকার এবং দলকে আলাদা করার লক্ষ্য নিয়ে গত চার মেয়াদে মন্ত্রিসভা সাজাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কারণেই যারা মাঠের নেতা, সংগঠনের জন্য পূর্ণকালীন সময় দেন তাদেরকে মন্ত্রিসভা থেকে পরিকল্পিত ভাবেই দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। কয়েকজন মন্ত্রী আছেন, যারা সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তাদের মাধ্যমে দল এবং সরকারের সেতুবন্ধন রচনা করা হয়েছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়া কতটুকু সফল হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা  মনে করছেন যে, মন্ত্রী যদি না থাকেন একজন নেতা তাহলে তার কাছে যাওয়ার আগ্রহ কর্মীদের কম থাকে। কর্মীরা সেই নেতার কাছে গিয়ে কোন সমস্যার সমাধান পান না। 

বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা চালু থাকলেও এখন পর্যন্ত সরকার পরিচালনার কাঠামো মন্ত্রিসভা কেন্দ্রিক। সমস্ত ক্ষমতা মন্ত্রীদের হাতে। এমনকি সংসদীয় কমিটিগুলো তেমন কোন কার্যকর নয়। একজন মন্ত্রী যখন আমলাদেরকে বা ঊর্ধ্বতন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কোন নির্দেশনা দেন, কোন পরামর্শ দেন তখন সেটি তারা যত গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিপালন করেন, একজন গুরুত্বপূর্ণ আওয়ামী লীগের নেতার পরামর্শ সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। তাছাড়া বিভিন্ন প্রান্তিক পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকে, থাকে দাবিদাওয়া। কারও রাস্তাঘাট নির্মাণ, কারও স্কুলে অনুদান, কারও মাদ্রাসা নির্মাণ সহ নানা রকম স্থানীয় সমস্যা দাবিদাওয়া থাকে। অনেকে চাকরির তদবির করেন, অনেকে ব্যবসা তদবির করেন। এই সমস্ত তদবিরের নেতাদের নেতাদের ভূমিকা খুবই গৌণ হয়ে উঠেছে। নেতারা কাউকে কোন অনুরোধ করলে সেটি শোনা হয় খুবই কম এবং এই ধারা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। 

একজন মন্ত্রী যেকোন মন্ত্রণালয়ে থাকুন না কেন, তার যদি ন্যূনতম গ্রহণযোগ্যতা থাকে তাহলে তার কথা অন্যরা শোনেন। আর এ কারণেই মন্ত্রীদের গুরুত্ব এখন আস্তে আস্তে বেড়েছে। দেখা যাচ্ছে যে সমস্ত মন্ত্রীরা দলের সাংগঠনিক কাজের সঙ্গেও জড়িত এবং মন্ত্রিসভায় রয়েছেন তারা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন। তাদের কাছে এখন নেতাকর্মীদের ভিড় বেশি। আর যারা নেতা নন কিন্তু মন্ত্রিসভার সদস্য হয়েছেন তারা কর্মীদেরকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। আর শুধুমাত্র নেতা কিন্তু মন্ত্রী নন, এমন নেতৃত্ব আওয়ামী লীগের কর্মীদের কাছে জনপ্রিয়, তবে তাদের কাছে কোন দেন দরবার বা তদবিরে কোন লাভ হয় না এমনটি মন্তব্য করেছেন অনেকে। এখন তাই নেতাদের মধ্যেও এক ধরনের হতাশা দেখা দিয়েছে। তারাও বলতে শুরু করেছেন যে, সরকারের মন্ত্রী না হয়ে যত বড় নেতাই হন না কেন তার কর্মীদের জন্য কিছু করতে পারবেন না। নেতারা মনে করছেন যে, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কিছু অনুরোধ করা হলে তারা মন্ত্রীদের কথাই শোনেন, তাদের কথা নয়। আর এ কারণেই মন্ত্রী ছাড়া যারা নেতা আছেন তাদের গুরুত্ব কমে যাচ্ছে। তাদের কাছে লোকজনের ভিড়ও কমে যাচ্ছে।

শুধু তাই নয়, তারা সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে যে নির্দেশনা দিচ্ছেন সেই নির্দেশনা প্রতিপালনের হারও এখন উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। কারণ সংগঠনের কর্মীরাও এখন জানেন যে, নেতাদের কথায় কাজ হয় না। কাজেই তাদের কথা শোনে লাভ কি। আর এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের যে সংকট এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল সেটি নিরসনে শুধু যারা নেতা তারা কতটুকু কার্যকর হবেন সেই প্রশ্ন উঠেছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭