ইনসাইড পলিটিক্স

দ্যা ম্যাজিশিয়ান অফ পলিটিক্স


প্রকাশ: 18/02/2024


Thumbnail

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিউজউইক সাময়িকী ‘দ্যা পোয়েট অব পলিটিক্স’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন রাজনীতির কবি। আর এখন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে দ্যা ম্যাজিশিয়ান অফ পলিটিক্স উপাধ্যায় ভূষিত করা যেতেই পারে। জাতীয় গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এখন তিনি সকলের মধ্যমণি হয়েছেন। বিশ্ব নেতাদের কাতারে শান্তি, সৌভাতৃত্ব এবং নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন। রাজনীতিতে তিনি যেরকম প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন তা একজন জাদুকরের পক্ষে সম্ভব। ম্যাজিশিয়ানের মতো তিনি একটি সংকটময় মুহূর্তকে অতিক্রম করেছেন অবলীলায়। সবাই যখন ভেবেছে সংকট অনিবার্য এবং এই সংকট থেকে উত্তরণের কোনো পথ নেই, ঠিক সেই সময় শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় যেন ম্যাজিক দেখিয়েছেন।  

২০১৪’র নির্বাচনের কথাই ধরা যাক। ২০১৪ সালের নির্বাচনে সকলে ভেবেছিল যে, বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া এই নির্বাচন টিকবে না। সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী। একটি নাম কা ওয়াস্তে নির্বাচন হচ্ছে। এই নির্বাচনের পর আরেকটি নতুন নির্বাচন করতেই হবে, অতীতে যেমনটি হয়েছে। ১৯৮৮ সাল বা ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু শেখ হাসিনা ম্যাজিশিয়ান। তার রাজনীতিতে প্রতি মুহূর্তে একটি করে ম্যাজিক আছে এবং ২০১৪ নির্বাচনের পর ম্যাজিশিয়ান শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন যে জনগণ সঙ্গে থাকলে, জনগণের ভাষা বুঝলে গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যহত রাখা যায়। 

২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। তার আগেই ঘটে অন্য ঘটনা। বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। সকলেই বলেছিল যে, বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার কররে সারা দেশে আগুন জ্বলে যাবে। সরকার শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকতে পারবে না। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়াকে দিব্যি দু বছর কারাগারে রাখা হয়েছিল কোন রকম রাজনৈতিক আন্দোলন বা কোন ধরনের বিপর্যয় ঘটেনি সরকারের। 

রাজনৈতিক প্রজ্ঞাশীল, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন একজন ব্যক্তি বোঝেন কার জনপ্রিয়তা কি, কাকে কি করলে কি হবে। আর সে কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব হয়েছিল। সাকা চৌধুরীর বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হবে খুব কম মানুষ বিশ্বাস করেছিলেন। কিন্তু দ্যা ম্যাজিশিয়ান শেখ হাসিনা তার সংকল্পে অটুট ছিলেন এবং সেই সংকল্প তিনি বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। 

পদ্মা সেতুর কথাই ধরা যাক। পদ্মা সেতু নিজের অর্থায়নে করা যাবে এটা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। এমনকি তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিত পর্যন্ত বলেছিলেন, ইম্পসিবল! কিন্তু ইম্পসিবলকে পসিবল করাই একজন ম্যাজিশিয়ানের কাজ। সেই ম্যাজিশিয়ান শেখ হাসিনা। 

২০২৪-এর যে নির্বাচন সেই নির্বাচন নিয়েও অনিশ্চয়তা কম ছিল না। বাংলাদেশের এই নির্বাচনের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেবে, আন্তর্জাতিক মহল থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এমন কথা বলার লোকের অভাব হয়নি। খুব কম মানুষই বিশ্বাস করেছিল যে, বিএনপিকে ছাড়া ৭ জানুয়ারি নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা একজন ম্যাজিশিয়ান। তার ম্যাজিকে আওয়ামী লীগ সরকার টানা চতুর্থবারের মতো এবং মোট পঞ্চমবারের মতো তার নেতৃত্বে সরকার গঠন করেছে এবং গোটা বিশ্ব এখন তাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার মিছিল নেমেছে বিশ্বে। এ তো গেল বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনের কথা। নিজ প্রজ্ঞায়, রাজনৈতিক মেধায় এবং বিচক্ষণতায় তিনি একজন ম্যাজিশিয়ানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে পঁচাত্তরের এবং একাত্তরের অপশক্তিকে পরাজিত করেছেন। এখন তাদের নির্মূল করার অপেক্ষা। 

বাংলাদেশের গণ্ডিতে শেখ হাসিনা অপ্রতিদ্বন্দ্বী অপ্রতিরোধ্য। শুধু দেশের গণ্ডিতে নয়, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন তিনি বিশ্ব নেতায় পরিণত হয়েছেন। বাংলাদেশই বিশ্বের বিরল দেশগুলোর একটি, যারা একাধারে চীন এবং ভারতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে। মিয়ানমারের উস্কানির পরও বাংলাদেশ কোন পক্ষ হয়নি। নিরপেক্ষ এবং শান্তির পতাকা ঊর্ধ্বে তুলেছেন ম্যাজিশিয়ান শেখ হাসিনা। এবার তিনি আরেকটি চমক দেখালেন। জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে তিনি বিশ্ব শান্তির যে বার্তা দিলেন সেই বার্তাটি আর কেউই দিতে পারেননি। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে রাশিয়ার বন্ধুত্ব এবং একাত্তরে তার ভূমিকাকে স্বীকার করে জেলেনস্কি সঙ্গে বৈঠক করার দৃঢ়তা এবং সাহস কজনের আছে। দা ম্যাজিশিয়ান শেখ হাসিনা প্রমাণ করলেন বাংলাদেশ সেই কূটনীতিতে বিশ্বাস করে যে কূটনৈতিক ধারা প্রবর্তন করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব। এই নীতিতে তিনি এখন বিশ্ব নেতায় আর্বিভূত হয়েছেন। বিশ্বের সব নেতারা আজ যা ভাবেন শেখ হাসিনা গতকাল তা ভেবেছেন। শেখ হাসিনা আজ যা ভাবেন বিশ্ব ভাবে তা আগামীকাল। এটাই হলো শেখ হাসিনার রাজনীতির ম্যাজিক। রাজনীতিতে তাকে দ্যা ম্যাজিশিয়ান উপাধিতে ভূষিত করা যেতেই পারে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭