ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশে চীনকে ঠেকাতে কাজ শুরু করেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র


প্রকাশ: 19/02/2024


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত অবিভিন্নভাবে বাংলাদেশকে চীনের বলয় থেকে মুক্ত করতে চায়। আর এই লক্ষ্যে দুটি দেশ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত যে অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশে কাজ করছে তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র সাম্প্রতিক বক্তব্য থেকে। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা ও মিয়ানমারে চলমান অস্থিরতার কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে এর প্রভাব অব্যাহত থাকবে।

তিনি এটাও বলেছেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতির সহসাই উন্নতি হচ্ছে না। তাই বাংলাদেশের জন্য এবং সম্ভবত ভারতের জন্য শরণার্থী সংকট এবং নিরাপত্তার সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তা সামনে আরও গভীর হতে পারে। 

বিভিন্ন কূটনৈতিক মহল বলছেন, মিয়ানমার ইস্যুতে চীন দ্বৈত নীতি অনুসরণ করছে। একদিকে যেমন তারা মিয়ানমার সামরিক জান্তা সরকারকে সহযোগিতা করছে, অন্যদিকে আরাকান আর্মি সহ বিদ্রোহীদের প্রতি পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। মিয়ানমার নিয়ে চীনের একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। আর এই পরিকল্পনায় আলাদা রাখাইন বা আরাকান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনাও অমূলক নয় বলে মনে করছেন কোন কোন কূটনেতিক বিশ্লেষকরা। এরকম একটি পরিস্থিতি হলে এই অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব আরও খর্ব হবে। 

শুধু মার্কিন প্রভাবই খর্ব হবে না। এর ফলে ভারতের অবস্থাও নাজুক হয়ে পড়বে। আর এই কারণেই মিয়ানমার ইস্যুতে তাকে সামনে রেখে চীনের ব্যাপারে এককাট্টা হয়েছে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। এখন ডোনাল্ড লু’র এই বিবৃতি সুস্পষ্ট ভাবে ইঙ্গিত করল এই অঞ্চলকে ঘিরে বিশেষ করে মিয়ানমার ইস্যুকে সামনে রেখে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে একসাথে কাজ করবে তা।

বিভিন্ন মহল মনে করছেন, মিয়ানমারের ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে চাপে ফেলা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটকে কাজে লাগিয়ে চীন বাংলাদেশে একটি মালদ্বীপ বা শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। তবে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে সজাগ রয়েছে বলেই কূটনীতিক সূত্র থেকে বলা হচ্ছে। বাংলাদেশ কখনোই চীনের ঋণের জালে পা দেবেন না। কিন্তু মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের জন্য নিরাপত্তার হুমকি তৈরি হতে পারে এবং শরণার্থী চাপ তৈরি হতে পারে। সে কারণেই বাংলাদেশ এখন থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে অভিন্ন ভাবে কাজ শুরু করতে চায় বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

তাছাড়া চীনের ওপর অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ এখন পশ্চিমা দেশগুলো এবং বিশ্ব ব্যাংক, এডিবিসহ অন্য দেশের আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়টিও জোর দিচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে চীনের যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর একটা শ্লথ গতি লক্ষ্য করা যেতে পারে। বাংলাদেশ এখন চীনের নতুন নতুন প্রকল্প প্রস্তাবের ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করছে। অন্যদিকে তেল, গ্যাস উত্তোলন সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রস্তাবগুলোর ব্যাপারে তারা ইতিবাচক মনোভাব পোষন করছেন। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিষয় আস্তে আস্তে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি অভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে। এখন দেখা যাক এই লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে চীন পাল্টা কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭