ইনসাইড পলিটিক্স

১৪ দলের পরিণতি কি ২০ দলের মতো হচ্ছে?


প্রকাশ: 19/02/2024


Thumbnail

২০১৮ সালের নির্বাচনের পর আস্তে আস্তে ২০ দল থেকে সরে যায় বিএনপি। ২০১৮ নির্বাচনের আগেই ২০ দলকে প্রায় গুরুত্বহীন করে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিলো। তবে নির্বাচনের সময় ২০ দলের শরিকদেরকে ভুলে যায়নি বিএনপি। তারা জামায়াতকে ২০ টি আসন ছেড়ে দিয়েছিল। এ নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে তীব্র সমালোচনা এবং প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল। তারপরও জামায়াতকে সেই আসনগুলো দিয়েছিল বিএনপির নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তে। এটি ছিল বিএনপি এবং জামায়াতের যা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত। সেই নির্বাচনে বিএনপি এবং জামায়াতের ভরাডুবি ঘটে। নির্বাচনের পর আন্তর্জাতিক চাপ এবং দলের ভিতরে সমালোচনার কারণে বিএনপি এবং জামায়াতের প্রকাশ্য সম্পর্ক আলগা হয়ে যায়। ২০ দল অকার্যকর হয়ে যায়। ২০ দল থেকে আন্দালিব রহমান পার্থর বিজেপি সহ বেশ কয়েকটি দল বেরিয়ে যায়। এরপরে কাগজে কলমে বিলুপ্ত ঘোষণা করলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে ২০ দল অকার্যকর হয়ে যায়। ২০ দলের কোনো বৈঠক এবং কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়নি। 

বিএনপি যখন পরবর্তীতে আন্দোলন শুরু করে সরকারের বিরুদ্ধে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তখনও ২০ দলকে সক্রিয় করেনি বিএনপি। একটি বড় কারণ ছিল জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অস্বস্তি।ঠিক তেমনি ভাবে ১৪ দলকেও আওয়ামী লীগ নিষ্ক্রিয় করে ফেলছে? 

নির্বাচনের আগে থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার শরিকদের টানাপোড়েন লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। বিশেষ করে মনোনয়ন নিয়ে দলের ভিতরের অস্বস্তি প্রকাশ্য রূপ লাভ করেছিল। আর এই অস্বস্তির কারণেই শেষ পর্যন্ত মাত্র ৬ টি আসন দেওয়া হয়েছিল ১৪ দলের শরিকদেরকে। এ নিয়ে ১৪ দলে অসন্তোষ কম ছিল না। শুধু তাই নয়, যে আসনগুলোতে শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল সেই সবগুলো আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রার্থী হয়েছিল আওয়ামী লীগের প্রচ্ছন্ন সমর্থন নিয়ে। আর স্বতন্ত্রদের বসানোর জন্য ১৪ দলের নেতারা কম চেষ্টা করেননি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বতন্ত্রদেরকে না বসানোর ব্যাপারে অনড় অবস্থানে ছিলেন। এ নিয়ে নির্বাচনের পরও দলের মান অভিমান কমেনি। বিশেষ করে জাসদ এবং ওয়ার্কার্স পার্টি আওয়ামী লীগের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট হয়েছিল। 

নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ একলা চলো নীতি অনুসরণ করে চলছে। ১৪ দলের শরিক থেকে কাউকে মন্ত্রী করা হয়নি। এমনকি সংরক্ষিত আসনে যে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সেই মনোনয়নেও ১৪ দলের কাউকে রাখা হয়নি। যদিও নির্বাচনের আগে একটা ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল যে, শিরীন আখতারকে সংরক্ষিত আসনে এমপি করা হবে। আর শিরীন আখতারকে মনোনয়ন না দেওয়ার মধ্য দিয়ে ১৪ দলের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক অবজ্ঞা এবং অস্বীকৃতি আওয়ামী লীগ জানালো কি না সেই প্রশ্নটি উঠেছে। 

আওয়ামী লীগ এখন মনে করছে যে, ১৪ দল অপ্রয়োজনীয়। ১৪ দলের নেতারা শুধু নেন, কিন্তু সংকটের সময় বা বিরোধী দলের আন্দোলনের সময় তাদের কোন ভূমিকায় দেখা যায় না। তাছাড়া ১৪ দলের বিভিন্ন আবদার মেটাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সবকিছু মিলিয়ে ১৪ দলকে আওয়ামী লীগই নিষ্ক্রিয় করে তুলেছে এমন আভাস ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ১৪ দলের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে যে, তারা ১৪ দলকে সংগঠিত করা, সক্রিয় করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে দেন দরবার করলে তারা এ ব্যাপারটি তেমন কোন ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। যার ফলে ১৪ দলের একটি নীবর মৃত্যু হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭