এডিটর’স মাইন্ড

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে হেভিওয়েট নেতাকে আনা হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে?


প্রকাশ: 20/02/2024


Thumbnail

সরকারের এখন সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ দ্রব্যমূল্য। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে কথা বলছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এখন দম ফেলার সময় নেই। তারা বিভিন্ন রকমের উদ্যোগ, কর ছাড়, শুল্ক ছাড় সহ নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু তারপরও এখন পর্যন্ত তারা দ্রব্যমূল্যে লাগাম টেনে ধরতে পারেনি। দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরাই সরকারের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, তার সরকার বসে নেই। দ্রব্যমূল্য মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। রমজান আসতে অল্পদিন বাকি রয়েছে। এর মধ্যে যদি দ্রব্যমূল্যকে সহনীয় না রাখা যায়, অন্তত স্থিতিশীল রাখা না যায় তাহলে পরিস্থিতি সামনের দিকে খারাপ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরকম বিষয়টি নিয়ে সরকারের নীতি নির্ধারক মহলে আলোচনা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতো একটা স্পর্শকাতর মন্ত্রণালয়ে একজন তরুণ প্রতিমন্ত্রীকে দেওয়াটা কতটুকু নিরাপদ এবং যুক্তিসঙ্গত সেটি নিয়েও কোন কোন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। 

নতুন প্রতিমন্ত্রী অবশ্য যথেষ্ট পরিশ্রম করছেন এবং আগের পূর্ণমন্ত্রীর চেয়ে এখন পর্যন্ত তিনি সংযত এবং তার দৃশ্যমান চেষ্টা লক্ষণীয়। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারে যারা বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী আছে তাদের সঙ্গে দর কষাকষি করে তাদের লাভের লাগাম টেনে ধরার মতো কঠিন কাজটা একজন আওয়ামী লীগের তরুণ নেতার পক্ষে কতটুকু সম্ভব এ নিয়ে কোন কোন মহলে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক মহলেও এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এই কারণেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে একজন হেভিওয়েট নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে এমন গুঞ্জন রয়েছে। 

আওয়ামী লীগের মধ্যে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের প্রায় সবাই মনে করেন যে, মন্ত্রিসভায় আছেন বা মন্ত্রিসভার বাইরে আছেন এমন একজন ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রিয় নেতাকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কারণ এই মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে কথাবার্তা বলতে হয়, তাদের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হয় এবং একজন রাজনৈতিক নেতার পক্ষে এটাই যতটা সহজ অন্য কারও পক্ষে ততটা সহজ নয়। 

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা তোফায়েল আহমেদের উদাহরণ দিয়েছেন। দুই মেয়াদে তোফায়েল আহমেদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন এবং এসময় দ্রব্যমূল্যকে নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে তিনি যথেষ্ট সফল ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক থাকাটাকে তিনি কাজে লাগিয়েছিলেন। আর অন্যদিকে টিপু মুনশি এবং ২০০৮ এর আংশিক সময়ে ফারুক খান এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছেন, রীতিমতো ব্যর্থ হয়েছেন। 

ফারুক খানকে একটা পর্যায়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও টিপু মুনশি পাঁচ বছর ধরে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে সরকারের এবং নিজের বদনাম করেছেন মাত্র। এখন দলের যদি কোন সিনিয়র নেতাকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার যে কতটা আগ্রহী এবং সর্বাত্মক সেরকম একটি বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে। 

বিভিন্ন মহল মনে করেন এখন যারা মন্ত্রিসভায় আছেন তাদের মধ্যে অন্তত তিনজন আছেন যারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চেহারা দৃশ্যমান ভাবে পালন করতে পারবেন। আবার অনেকে মনে করেন মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হননি এমন কোন নেতারাও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে চালাতে পারবেন। তবে কোন টেকনোক্র্যাট বা আমলা নন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একজন জনপ্রিয় গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদের আসা উচিত বলে মনে করেন অধিকাংশ সাধারণ মানুষ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭