ইনসাইড বাংলাদেশ

বিদেশে বসেই ঢাকায় ডাকাত দল চালায় ইলিয়াস


প্রকাশ: 21/02/2024


Thumbnail

মাদারীপুর জেলার কালকিনির খাসের হাট এলাকায় বাড়ি ইলিয়াস হোসেন, থাকেন সৌদি আরব। সেখান থেকে হোয়াটস্ অ্যাপের মাধ্যমে ঢাকায় ডাকাত দল পরিচালনার করে সেই টাকায় এলাকায় কিনেছেন বাড়ি ও জমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপ খুলে সুদূর মধ্যপ্রাচ্যে বসে দেশের ডাকাত দলের সদস্যদের দেন নানা নির্দেশনা। কেউ গ্রেপ্তার হলে জামিনের ব্যবস্থা করেন, ডাকাতির টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করেন প্রবাস থেকেই।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনসূত্র বলছে, গত বছর অক্টোবরে রাজধানীর ডেমরা থেকে ডিবি পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে গাড়িতে তুলে সাড়ে ৩৬ লাখ টাকা লুট করে এই ডাকাতরা। ওই ঘটনায় করা মামলা তদন্তে ইলিয়াসের ডাকাত দলের সন্ধান পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ।

ডিবি সূত্র জানায়, এই ডাকাতরা হোয়াটসঅ্যাপে বিদেশি মোবাইল অপারেটরের নম্বর ব্যবহার করে। ইলিয়াস এসব নম্বর সংগ্রহ করে হোয়াটসঅ্যাপ চালু করে তাদের জন্য পাঠায়। এরপর তারা ভিন্ন রাউটার ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। ডাকাতিতে ব্যবহৃত গাড়িটিতে ভুয়া নম্বর প্লেট বসায়। চক্রটি রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফুট, সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, আবদুল্লাহপুর ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ডিবি ও র্যাব পরিচয়ে ডাকাতি করত। প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করায় তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির বাইরে ছিল।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, প্রবাসী ব্যক্তি বা নতুন গাড়ি এলে বা ব্যাংক থেকে কেউ টাকা তুললে, জমি বিক্রি করলে ডিবি পরিচয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ আসে। এ ধরনের করেন এক ব্যবসায়ী। তদন্ত করতে গিয়ে ওই ডাকাত দলের সন্ধান মেলে। এরই মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান ও আবুল কাশেম ওরফে জাহিদ নামে দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডিবিপ্রধান বলেন, গ্রেপ্তারদের তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, চক্রের মালিকানাধীন অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এবং মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। ডাকাতির টাকায় তারা এসব গাড়ি কেনে। অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

ডিবির ওয়ারী বিভাগের এডিসি শাহিদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, গত বছর ৮ অক্টোবর ব্যবসায়ী জাকির হোসাইন ও তার সহযোগী সজীব নারায়ণগঞ্জ থেকে ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তাদের প্রাইভেটকারটি সুলতানা কামাল সেতুতে উঠলে মাইক্রোবাস দিয়ে গতিরোধ করে ডাকাতরা। এরপর দুজনের চোখ বেঁধে এবং হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরে তাদের কাছ থেকে সব টাকা রেখে পূর্বাচলে ফেলে রেখে যায়। ওই ঘটনায় ডেমরা থানায় মামলা হলে ডিবি ছায়াতদন্ত শুরু করে।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার আবুল কাশেম ওরফে জাহিদ এরই মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অন্য সদস্য মোস্তাফিজকে গতকাল মঙ্গলবার দুদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

ডিবির ডেমরা জোনাল টিমের এডিসি খন্দকার আরাফাত লেলিন গণমাধ্যমকে বলেন, মামলাটির তদন্তে মূলহোতা ইলিয়াস হোসেন শনাক্ত হয়। তাকে ধরতে গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখানে গিয়ে জানা যায়, ইলিয়াস সৌদি থাকেন। এরপর গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত সর্দার ইলিয়াসের নাম সামনে আসে। ইলিয়াসের বিরুদ্ধে ডাকাতির ৬ থেকে ৭টি মামলা রয়েছে। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে ডেমরায় ডাকাতির নেতৃত্বেও ছিল সে। এরপর সৌদি চলে যায়। কিন্তু দলের কাজ থেমে যায়নি। তার চক্র পরেও বেশ কয়েকটি ডাকাতি করে। আর ইলিয়াস সৌদি বসেই দেশের ডাকাত দলকে পরামর্শ ও নির্দেশনা দেয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭