ইনসাইড হেলথ

ত্রিশোর্ধ্ব নারীদের ভ্রূণ হত্যার প্রবণতা বেশি: বিবিএস


প্রকাশ: 21/02/2024


Thumbnail

প্রথমবারের মতো গর্ভবতী নারীদের নিয়ে জরিপ করা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বলছে, ৩৫ বছর বয়সী (ত্রিশোর্ধ্ব) নারীদের মধ্যেই ভ্রূণ হত্যার প্রবণতা বেশি। ২০২২ সাল থেকে চলা এ জরিপের নারীর গর্ভধারণ, মাতৃমৃত্যু, ভ্রূণ হত্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশ করেছে বিবিএস। 

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রে জানা যায়, ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স ২০২২’ প্রকল্পের আওতায় এ তথ্য সংগ্রহ করেছে বিবিএস। মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের মৃত্যুর সঠিক হিসাব বের করতেই মূলত এ জরিপ করে সরকার। সারাদেশে ৯ হাজার ৯৪৩ জন গর্ভবতী নারীর তথ্য সংগ্রহ করেছে বিবিএস। গর্ভবতী হওয়ার পর থেকে শিশু পৃথিবীতে আসা পর্যন্ত এ তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

বিবিএস জানায়, প্রথমবারের মতো প্রশ্নপত্রে অন্তর্ভুক্ত গর্ভবতী রেজিস্টার তফসিলের মাধ্যমে ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে খানায় বসবাসরত ১০ থেকে ৬০ বছর বয়সী নারীদের বর্তমান গর্ভধারণ অবস্থা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। গর্ভবতী রেজিস্টারে যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- গভর্বর্তী নারীর নাম, বর্তমান (জরিপকালীন) বয়স, তাদের পূর্ববর্তী মাসে গর্ভাবস্থা, বর্তমান গর্ভাবস্থা, সর্বশেষ গর্ভাবস্থা শেষ হওয়ার সময়, সর্বশেষ গর্ভাবস্থার ফলাফল। এছাড়া গর্ভপাত করা শিশুর লিঙ্গ, বর্তমান গর্ভধারণের সময়ে মায়ের বয়স, গর্ভধারণ নিশ্চিত হওয়ার পদ্ধতি, সম্ভাব্য ডেলিভারির তারিখ, সারাজীবনে জীবিত ও মৃত মিলিয়ে জন্ম দেওয়া মোট শিশুর সংখ্যা এবং বর্তমানে জীবিত মোট শিশুর সংখ্যার তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

প্রতিবেদনটি বলছে, ৩৪ বছর বয়সী নারীদের বড় অংশের ক্ষেত্রে গর্ভপাত করা বেশিরভাগ ভ্রূণ ছিল ছেলে। যদিও ৩৫ বছর ও তার বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে গর্ভপাত করা বেশিরভাগ ভ্রূণ মেয়ে। তবে গর্ভপাত করা ভ্রূণের লিঙ্গের বিষয়ে উত্তর দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন ৪৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীরা।

এছাড়াও ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে এমন নারীদের মধ্যে সারাজীবনে যে কোনো ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে এমন নারীদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার ৫৭ দশমিক ৩ শতাংশ। বিয়ের সময়ে বয়স ২৫ থেকে ২৯ বছর ছিল এমন নারীদের মধ্যে এ হার আরও কম। ফলে দেখা যাচ্ছে বিয়ের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের প্রবণতা কমেছে।

গর্ভবতী নারীদের মধ্যে সারাজীবনে নির্দিষ্ট ধরনভিত্তিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫৫ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যবহার করেছেন ওরাল পিল (খাবার বড়ি)। গর্ভবতী নারীদের মধ্যে সারাজীবনে নির্দিষ্ট ধরনভিত্তিক ও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহারের ক্ষেত্রে কনডম দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। এটি ব্যবহারকারীর হার ২২ দশমিক ৪ শতাংশ।

তবে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে নির্দিষ্ট ধরনভিত্তিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে সারাজীবনে কনডম ব্যবহারের হার ২৭ দশমিক ৯ শতাংশ। এই বয়সীদের ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ ব্যবহার করেন ওরাল পিল। এছাড়া সারাজীবন নির্দিষ্ট ধরনভিত্তিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে ইনজেকশন ব্যবহার করেছেন ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ ও ইমপ্ল্যান্ট শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। ৩৫ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে এ পদ্ধতির ব্যবহার সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (এমসিএইচ- সার্ভিসেস) ডা. মো. মুনিরুজ্জামান সিদ্দীকী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলাদেশে গর্ভপাত আইন (১৮৬০-এর ব্রিটিশ পেনাল কোড) অনুযায়ী অন্তঃসত্ত্বার জীবন বাঁচাতে মাসিক নিয়মিত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ ভ্রূণ হত্যা করতে পারবে না। কেউ এটা করলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ভ্রূণ হত্যা করতে পারবে না। বেশিরভাগ ক্লিনিকে এটা হচ্ছে, এটা বন্ধে কাজ করছে সরকার।’



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭