ইনসাইড বাংলাদেশ

আফরিনের সফর নিয়ে সরব সুশীল সমাজ


প্রকাশ: 21/02/2024


Thumbnail

নির্বাচনের পর প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিক প্রতিনিধি আসছেন আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি। তিনদিনের সফরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারের সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তেমন কোন উত্তাপ নেই। সরকার অন্যান্য বারের মতো আফরিন আক্তারের সফর নিয়ে তেমন উৎসাহী নয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি একটি রুটিন সফর। এই সময় তিনি পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নের কৌশল নিয়ে তারা নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তার অংশ হিসেবেই এই সফর বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। 

অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে মার্কিন কূটনীতিকের ঢাকা সফর নিয়ে তেমন কোন উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। কারণ বিএনপি গত দুই বছর ধরেই আন্দোলন করছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভরসা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি আদায়ে বাধ্য করবে, শেষ পর্যন্ত সরকার একতরফা নির্বাচন করতে পারবে না—এমন প্রত্যাশা ছিল বিএনপির। 

মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন কেন্দ্রিক তৎপরতার কারণে বিএনপির মধ্যে আশার প্রদীপ জ্বেলেছিল। কিন্তু ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর সেই প্রদীপ নিভে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ নিয়ে কিছুই করেনি। বরং ভারতের কথা মতো নতুন সরকারকে মেনে নিয়েছে। তাই বিএনপি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই কূটনীতিক কর্মকর্তা সফর নিয়ে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তবে আফরিন আক্তারের সফর নিয়ে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে। তারা মনে করছেন যে, এই সফরের মধ্য দিয়ে একটা নতুন মাত্রা পাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ হিসেবে বলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এখনও তৈরি করেনি। তাছাড়া বাংলাদেশে বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন, সুশীল সমাজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তারা তাদের অবস্থান এবং বক্তব্য অব্যাহত রেখেছে। এরকম একটি বাস্তবতায় শেষ পর্যন্ত সুশীল  সুশীল সমাজের কণ্ঠস্বরগুলো আফরিন আক্তারের কাছে সঞ্চালিত হবে এবং আফরিন আক্তার সুশীল সমাজের পক্ষে অবস্থান নেবেন—এমন একটি প্রত্যাশা সুশীলা করছে। বিশেষ করে ড. ইউনূস ইস্যুতে বাংলাদেশে সুশীল সমাজের মধ্যে যে আতঙ্ক এবং অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তার প্রেক্ষিতে আফরিন আক্তারের এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। 

সাম্প্রতিক সময়ে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতের একটি মামলার রায় হয়েছে। ওই মামলার রায়ে ড. ইউনূস ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। একই সাথে দুর্নীতি দমন কমিশন ড. ইউনূসের অর্থপাচার বিষয়ে তদন্ত করে চার্জশিট প্রদান করেছে। মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে এসেছে গ্রামীণ কল্যাণের মালিকানা। গ্রামীণ কল্যাণের মালিকানা গ্রহণ করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। সবকিছু মিলিয়ে চাপে আছে সমাজের শিরোমণি ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর এর প্রেক্ষিতে সুশীল সমাজও  নানারকম অস্বস্তিতে আছে কিন্তু তারা কথা বলতে পারছেন না। অন্যদিকে সুশীল সমাজের অন্যতম মূখ্যপাত্র হিসেবে পরিচিত ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক গৃহকর্মীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এবং হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়ে কারাগারের রয়েছেন। তার জামিনের আবেদন গতকাল নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। ডেইলি স্টার এখন তার নির্বাহী সম্পাদককে বাঁচানোর জন্য প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন আঙ্গিকে উপ সম্পাদকীয় লিখছে। একজন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ডেইলি স্টারের কৌশল সকলকে বিক্ষুব্ধ করেছে, হতবাক করেছে। সবকিছু মিলিয়ে সুশীল সমাজ চাপে আছে। তারা মনে করছে যে, আফরিন আক্তারের এই সফর তাদের চাপ মুক্তির ক্ষেত্রে একটা বড় ধরনের সহায়তা দিবে। সুশীল সমাজের পাশে যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থাকে তাহলে তারা আবার নতুন করে বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ার জন্য সচল হতে পারেন। এই প্রত্যাশায় আফরিনের সফর নিয়ে সুশীল সমাজের মধ্যে একটি চ্যাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭