ইনসাইড পলিটিক্স

দ্রব্যমূল্য-বিদ্যুতের মূল্য ইস্যুতে মাঠে নামছে বিরোধী দল


প্রকাশ: 21/02/2024


Thumbnail

বিরোধী দলগুলো রাজনৈতিক আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তন করছে। বিরোধী দলগুলো ইতোমধ্যে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের গতিপথ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি এবং অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ইত্যাদি বক্তব্য থেকে সরে এসে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চাইছে। বিএনপি ছাড়া অন্যান্য বিরোধী দলগুলো ২৮ অক্টোবরের পর থেকে আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করে এবং জনগণের সঙ্গে তাদের দূরত্বের বাস্তবতা বিবেচনা করে এখন ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলনের জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছে। 

যদিও বিএনপি প্রথম দিকে এ ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছিল। তারা বলেছিল যে, একদফা দাবি থেকে বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসা হবে না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা যারা জেল থেকে বেরোচ্ছেন, তারাও বাস্তবতা অনুভব করতে পারছেন। তারা মনে করছেন যে, আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল জনসম্পৃক্ততা। আর এই কারণেই আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। আন্দোলনের জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর একমাত্র পথ হল জনগণের ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলন তৈরি করা। 

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করা রাজনৈতিক দলগুলো বলছে যে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। এটা নিয়ে আন্দোলন করতে হবে। এছাড়া অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে সামনে এনে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করতে হবে এবং সেখানে অভিনব কর্মসূচি দেওয়া যেতে পারে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে যে পাঁচটি ইস্যু সামনে আনা হয়েছিল সে ব্যাপারে বিএনপি রাজি হয়েছে এবং তারা এই ইস্যুগুলোকে নিয়ে আন্দোলন করতে নীতিগতভাবে সম্মতি দিয়েছে বলে জানা যায়। তবে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বা এক দফা দাবিকে বাতিল করে দিচ্ছে না। সেটি সহ ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলনে তারা মাঠে নামতে চায়।

যে পাঁচটি ইস্যু নিয়ে বিএনপি এবং তার মিত্ররা নতুন করে সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু করতে চায় তার মধ্যে রয়েছে;

১. দ্রব্যমূল্য: দ্রব্যমূল্য ইস্যুটিকে তারা প্রধান হিসাবে বিবেচনা করছে। সামনে রমজানে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে বলেই বিরোধী দলের নেতারা মনে করছেন। আর তাই এই ইস্যুটিকে ঘিরে যদি হাটে বাজারে নতুন ধরনের কর্মসূচি করা যায়, তাহলে সেই কর্মসূচিতে জনগণ সাড়া দেবে বলেই বিরোধী দলের বিশ্বাস। এই কর্মসূচির জন্য তারা কিছু কিছু নতুন পদ্ধতি ঠিক করছেন। অভিনব কর্মসূচি দিয়ে তারা জনগণকে আকৃষ্ট করতে চান।

২. বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি: ইতোমধ্যেই সরকার আগামী মার্চে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। বিরোধী দলগুলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিকে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসাবে চিহ্নিত করে এই ইস্যুটিকে সামনে আনতে চাইছে এবং এটি নিয়ে তারা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালনের জন্য পরিকল্পনা নিচ্ছে। বিরোধী দলগুলো মনে করছে যে, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মার্চ-এপ্রিল থেকে বিদ্যুৎ সংকটও বাড়বে। এই বিষয়টিকে নিয়ে যদি জনসংযোগ বাড়ানো যায় এবং জনসম্পৃক্ত করা যায় তাহলে তারা মানুষকে পাশে পাবে বলে ধারণা করছে। 

৩. অর্থপাচার: অর্থপাচার ইস্যুটিকে তারা সামনে আনতে চাইছে। অর্থপাচার নিয়ে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ অসন্তোষ রয়েছে। অর্থপাচারকারীদের নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ, অর্থপাচারের ব্যাপারে জনগণকে অবহিত করার মতো কর্মসূচিগুলো তারা হাতে নিতে চাইছে।

৪. খেলাপি ঋণ: খেলাপি ঋণের বিষয়টি নিয়েও বিএনপি এবং তার মিত্ররা সরব হতে চাইছেন। এই ইস্যুটিকে জনগণের কাছে আনতে চাইছেন।

৫. দুর্নীতি: সর্বশেষ বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে দুর্নীতির বিষয়টিকে সামনে আনা হয়েছে। দুর্নীতি কোন পর্যায়ে গেছে, দুর্নীতির চিত্র ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তারা কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে। বিএনপি সহ বিরোধী দল গুলো একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, রোজার মধ্যেও তারা কর্মসূচি বন্ধ করবে না। বরং বিভিন্ন রকম অভিনব কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণকে তারা এখন আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭