ইনসাইড পলিটিক্স

এতিম হয়ে ঘুরছেন ১৪ দলের শরিকরা


প্রকাশ: 23/02/2024


Thumbnail

নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ ১৪ দলের ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ১৪ দলের নেতাদেরকে পাত্তা দিচ্ছেন না, ১৪ দলের প্রতি আওয়ামী লীগের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। বরঞ্চ ১৪ দলের নেতাদেরকে এড়িয়ে চলছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। নির্বাচনের পর ১৪ দলের পরাজিত অনেক নেতাই আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। দু তিন বার যোগাযোগের চেষ্টা করার পর হয়তো ফোনে কথা হয়েছে কিন্তু ১৪ দলের কোন আনুষ্ঠানিক বৈঠক এখনও হয়নি। 

আমির হোসেন আমু ১৪ দলের সমন্বয়ক। তিনি নির্বাচনের পর প্রথম দিকে দলের নেতাদেরকে টুকটাক সান্ত্বনা দিতেন। কিন্তু এখন তিনি ১৪ দলের নেতাদেরকে সান্ত্বনা বাণীও আর শোনাচ্ছেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের আগে ১৪ দলের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছিলেন। নির্বাচনের পরও ১৪ দলের দু একজন নেতা ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন কিন্তু এখন ওবায়দুল কাদেরও ব্যস্ত। তিনি ১৪ দলকে সময় দিচ্ছেন না। আওয়ামী লীগ সভাপতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৪ দলের সমন্বয়ক তিন গুরুত্বপূর্ণ নেতার কেউই এখন ১৪ দলকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না। ১৪ দলকে নিয়ে বৈঠক করা বা তাদের মান অভিমান নিয়েই সহানুভূতি দেখানো ইত্যাদির ধারেকাছেও নেই আওয়ামী লীগ। ১৪ দলের নেতারা তাই এতিম হয়ে ঘুরছেন। 

১৪ দলের নেতারা প্রত্যাশা করেছিলেন যে, সংরক্ষিত আসনে তাদের একজনকে অন্তত মনোনয়ন দেওয়া হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যে ৪৮ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে তার মধ্যে শরিকদের কেউ নেই। ১৪ দলের নেতারা আশা করছিলেন মন্ত্রিসভায় অন্তত তাদের একজনকে ঠাঁই দেওয়া হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তার মন্ত্রিসভায় ১৪ দলের কোন সদস্যকে রাখেনি। নির্বাচনে ১৪ দলের যে সমস্ত হেভিওয়েট নেতারা পরাজিত হয়েছিলেন তারাও প্রত্যাশা করেছিলেন এই বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ হয়তো কিছু করবে। অন্তত যারা ১৪ দলের প্রার্থীদের বিপক্ষে আমরা কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেবে কিন্তু আওয়ামী লীগ সে পথেও হাঁটছে না। বরং ১৪ দলের পরাজিত নেতা হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশা, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এখন নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে এ কথা বলারও সাহস পাচ্ছে না। ১৪ দলের যারা নির্বাচন করেনি; যেমন- সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, এদের অবস্থা আরও খারাপ। এখন ১৪ দলের এই নেতারা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা তো দূরের কথা, সাধারণ ছোটখাটো নেতাদের সঙ্গেও কথা বলতে পারছেন না। 

আওয়ামী লীগের যারা ১৪ দলের শরিকদেরকে এড়িয়ে চলছেন তাদের দুটি কারণ রয়েছে। একটি হল চক্ষুলজ্জা। আওয়ামী লীগের একজন সদস্য বলেছেন যে, ১৪ দলের নেতারা ফোন করেন কিন্তু ফোন ধরি না। তাদেরকে কি বলবো? কারণ ১৪ দলের ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত দলের নীতি নির্ধারকদের থেকে কোন সবুজ সঙ্কেত পাননি। তাদের হতাশার কথা শুনে হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই। কারণ ১৪ দলের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী অবস্থান থেকে কোন সুনিদিষ্ট বার্তা আসেনি। আবার অনেকে বলছেন যে, আমরা যে অঙ্গীকারগুলো করেছিলাম সে অঙ্গীকারগুলো পূরণ হয়নি। কাজেই এক রকম লজ্জিত হয়ে তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করি না, তাদেরকে এড়িয়ে যাই।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা স্বীকার করেছেন যে, ১৪ দলের শরিক জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারকে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেওয়ার একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ফলে এখানে একটি চক্ষুলজ্জার বিষয় সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। সে কারণে আওয়ামী লীগের যারা নির্বাচনের আগে আসন ভাগাভাগি নিয়ে ১৪ দলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছিলেন তারা এখন ১৪ দলকে এড়িয়ে চলছেন। আর ১৪ দলের নেতারা এতিমের মতো দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭