ইনসাইড বাংলাদেশ

র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কী প্রত্যাহার হবে?


প্রকাশ: 24/02/2024


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি তিন সদস্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিদল এখন ঢাকা সফর করছেন।  যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট এবং এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের প্রতিনিধি দল। দলটির প্রতিনিধিরা হলেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর এলিন লাউবাকের, ইউএসএআইডির এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার এবং ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার।

মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের পারস্পরিক স্বার্থের অগ্রগতির জন্য কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে তারা। সফরকালে তারা এক তরুণী অ্যাকটিভিস্ট, সুশীল সমাজ, সংগঠন ও মুক্ত গণমাধ্যমের বিকাশের জন্য নিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।  মুক্ত প্যাসিফিক অঞ্চলের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এগিয়ে নেওয়া মানবাধিকারকে সমর্থন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, আন্তর্জাতিক হুমকির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সহনশীলতার শক্তিকে এগিয়ে নেওয়া এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রচারে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়। তবে সব কিছু ছাপিয়ে এই সফরে র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে যে, এই সফরে যারা এসেছেন, তাদের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল এবং ডিপার্টমেন্ট স্টেটের দু জন প্রতিনিধি। বাংলাদেশের র‍্যাবের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে।  এই নিষেধাজ্ঞার পরপরই বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়। আস্তে আস্তে যা তীব্র আকার ধারণ করেছিল। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি এবং হুমকি রীতিমতো জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু নাটকীয়ভাবে ২৮ অক্টোবর বিএনপির সন্ত্রাস তাণ্ডবের প্রেক্ষিতে এবং বিএনপির হঠকারী রাজনীতির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান নমনীয় হয়। এরপর ভারতের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বলতে নারাজ। কিন্তু তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগ্রহী।   

বিভিন্ন কূটনৈতিক মহল মনে করছে, বাংলাদেশের একাধিক বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় আগ্রহের জায়গা এই মুহুর্তে যেটি তৈরি হয়েছে তা হল মিয়ানমার ইস্যু। মিয়ানমারের ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত একটা অভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন এবং সেখানে মার্কিন প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করতে চায়। এজন্য বাংলাদেশ যেন মার্কিন বোয়িং কেনে সে জন্য দেন দরবার করতে চাইছে। এই দেন দরবার ইতোমধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস শুরু করেছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে তেল, গ্যাস অনুসন্ধানে মার্কিন কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ব্যাপারেও প্রতিনিধি দল কথা বলবেন।  অন্যদিকে বাংলাদেশ মনে করছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেনা পাওনার এখনই সময়।  এজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের প্রথম দাবি থাকবে র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ একাধিক ফোরামে র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য দাবি জানিয়েছে।  

গত এক বছর র‍্যাবের কার্যক্রম নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশংসা করেছে।  বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড সহ বিভিন্ন বিষয় র্যাবের উন্নতি প্রশংসনীয়। এরকম বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এখন দেখার বিষয় অংশিদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্য দেনা পাওনার হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি দেয় আর বাংলাদেশ কি পায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭