ইনসাইড বাংলাদেশ

কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের ভোটাদের উৎসাহ কম


প্রকাশ: 25/02/2024


Thumbnail

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে আগামী ৯ মার্চ মেয়র পদের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে ইভিএমে। আনুষ্ঠানিক প্রচারণার তৃতীয় দিন আজ (রোববার)। এর আগে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থীই দিনভর প্রচারণা চালিয়েছেন। কিন্তু, এ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের তেমন উৎসাহ চোখে পড়ে না।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং তথ্যসূত্রগুলো বলছে, এবার কুমিল্লা সিটির উপনির্বাচনে কাউন্সিলরদের ভোট না হওয়ায় নির্বাচনে কিছুটা নিষ্প্রাণ ভাব। এ অবস্থায় নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা নিয়েই চিন্তায় রয়েছেন প্রার্থীরা। 

জানা যায়, এবার মেয়র নির্বাচনে চারজন প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে তাহসীন বাহার ‘বাস’ প্রতীক, মনিরুল হক ‘টেবিল ঘড়ি’ প্রতীক, মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন ‘ঘোড়া’ প্রতীক ও নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম ‘হাতি’ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাহসীন বাহার স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আর মাহমুদ তানিম মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। মনিরুল হক দুবারের সাবেক মেয়র। আর নিজামউদ্দিন গত নির্বাচনে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৯৯ ভোট পান।

কুমিল্লার ইপিজেড এলাকার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে মূলত কাউন্সিলর প্রার্থীরাই ভোটার আনার উদ্যোগ নেয়। আমার ধারণা, কাউন্সিলর ভোট না থাকায় এ নির্বাচনে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশের বেশি ভোটার কেন্দ্রে যাবে না।’

অন্যদিকে, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদ গণমাধ্যমকে বলেন, কাউন্সিলর ভোট না থাকলেও সব কাউন্সিলর মাঠে কাজ করছেন। সবাই কেন্দ্রে ভোটার নেওয়ার চেষ্টা করবেন।

স্থানীয় বাসিন্দা জানান , কয়েকটি কারণে সিটির মেয়র নির্বাচন নিয়ে অনেক ভোটারের মধ্যে সেভাবে উৎসাহ নেই। কারণ, গত ২০ মাসের মধ্যে কুমিল্লা সিটি এলাকার ভোটারদের জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে তিনবার ভোট দিতে হচ্ছে। ফলে একের পর এক ভোটে কিছুটা ক্লান্তিওÍভর করেছে ভোটারদের মধ্যে।

স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের কুমিল্লা জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পরপর তিনটি নির্বাচনকে আমি বিচ্ছিন্ন মনে করি না। তবে জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটারদের যেমন অনীহা ছিল, এখানেও সেটার প্রভাব পড়বে। এ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আস্থার সংকট রয়েছে। নির্বাচনগুলোতে যদি ভোটারদের গুরুত্ব থাকত, তাহলে নির্বাচন প্রাসঙ্গিকভাবে অর্থবহ হতো। এবারের সিটি নির্বাচনেও ভোটারদের অনীহা থাকবে বলে মনে করি।’

গত সিটি নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের চেয়ে কুমিল্লা সিটিতে বিএনপি সমর্থক ভোটার বেশি। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আরফানুল হক ৫০ হাজার ৩১০ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হলেও বিএনপির বহিষ্কৃত দুই নেতা ৭৯ হাজার ৬৬ ভোট পান, যা বিজয়ী আরফানুলের চেয়ে ২৮ হাজার ৭৫৬ ভোট বেশি। অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হলে এবারও সে রকম কিছু হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

মেয়র প্রার্থী মাহমুদ তানিম অভিযোগ করেছেন, কুমিল্লা ভয়ের শহরে পরিণত হয়েছে। আর নিজামউদ্দিন বলেছেন, পুরো বাংলাদেশই তো এখন ভয়ের দেশ। কুমিল্লা হয়তো একটু বেশি। তিনি বলেন, ‘পরিবেশ এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ। কিন্তু আমাদের এই শহরে অশান্তি কোত্থেকে সৃষ্টি হয়, সবাই জানে। এমপি সাহেব (বাহাউদ্দিন) মেয়েকে (তাহসীন বাহার) নিয়ে যত্রতত্র মিটিং করছেন, বর্ধিত সভার নামে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন দেখেও কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।’

অন্যদিকে তাহসীন বাহার এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এমপি সাহেব তো দলের (মহানগর আওয়ামী লীগ) সভাপতি। উনি কি দলের বর্ধিত সভায় যেতে পারবেন না। উনি তো সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবেন না। কিন্তু উনি কি দলীয় সভাও করতে পারবেন না?’



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭