ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিকে কি কেবল সান্ত্বনাই দিল মার্কিন প্রতিনিধি দল


প্রকাশ: 26/02/2024


Thumbnail

তিন সদস্যের মার্কিন প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে গেলেন। তাদের এই সফরের শুরুতেই তারা সাক্ষাৎ করেছিলেন বিএনপির তিনজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সাথে। কিন্তু মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছে, সে ব্যাপারে কোন পক্ষ থেকেই কেউ বক্তব্য রাখেনি।

২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট এণ্ড এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের প্রতিনিধি দল প্রথম বৈঠকটি করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে। এই বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছে বা বৈঠকের ফলাফল কি? এ নিয়ে কোন রকম বক্তব্য পাওয়া যায়নি বিএনপির পক্ষ থেকে। 

বিএনপি নেতারা মন খারাপ করেই ওয়েস্টিন হোটেল থেকে বেরিয়েছেন এবং তারা কোন বক্তব্য রাখেননি। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, এমন কোন আলোচনা হয়েছে যে আলোচনায় বিএনপি নেতারা খুশি হতে পারেননি। তারা চাঙ্গা হওয়ার মতো কোন আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতিও পাননি মার্কিন প্রতিনিধিদলের কাছ থেকে। কারণ পরবর্তীতে মার্কিন প্রতিনিধি দল যেভাবে সরকারের সাথে উচ্ছ্বাসপূর্ণ আলাপ-আলোচনা এবং বৈঠক করেছে তাতে মনে হতেই পারে যে, বিএনপির দাবি, আন্দোলন ইত্যাদিকে পাশ কাটিয়ে নতুন সরকারের সঙ্গেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি সখ্যতার সম্পর্ক এগিয়ে রাখতে চায়। বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকটি ছিল অত্যন্ত হৃদত্যপূর্ণ, আন্তরিক এবং পারস্পরিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দুই পক্ষই ছিল আত্মপ্রত্যয়ী। 

এখান থেকে বোঝা যায় যে, নির্বাচন নিয়ে যে সমস্ত বিষয়গুলো হয়েছে সেগুলোকে নিয়ে আলোচনা করতে চায় না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বরং সামনের দিকে তাকাতে চায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের যে অবস্থান ঘোষণা করেছিল, সেই অবস্থানের পরও তারা বাংলাদেশে এসে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে। সেই বৈঠকটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। এরপর তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাইডেন যে চিঠি লিখেছিলেন তার উত্তরের কপি হস্তান্তর করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বাইডেনকে তার অভিনন্দনের জবাব দিয়েছেন চিঠির মাধ্যমে। এ থেকে বুঝা যায় যে, বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতিবাচক কোনো কিছু ভাবছে না। এটা যে তারা ভাবছে না তা তিন দিনের সফরে সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপি কী করবে? সেটাই এখন দেখার বিষয়। 

তবে বিএনপি নেতারা যেমনটা আশা করেছিল যে, নির্বাচনের পর সরকার নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিবে না বা নিষেধাজ্ঞা দেবে কিংবা আবার নতুন করে নির্বাচন করতে বা করার জন্য সরকারকে চাপ দেবে। বাস্তবে সেই রকম কিছুই হয়নি। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, ওয়েস্টিন হোটেলে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ১ ঘণ্টার বৈঠকটি ছিল সান্ত্বনাসূচক। সেখানে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য গভীর মনোযোগ দিয়ে তারা শুনেছেন। ধারণা করা হচ্ছে যে, এই বৈঠকটির মধ্যে দিয়ে তারা বিএনপিকে একটি বার্তা দিয়েছেন। বর্তমান সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাজ করতে আগ্রহী। কাজেই বিএনপির এখন উচিৎ অপেক্ষা করা অন্তত আগামী নির্বাচন পর্যন্ত। তবে, বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার বা তাদের ন্যয়সঙ্গত গণতান্ত্রিক আন্দোলন ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে তাদেরকে যে শান্তনা দেওয়া হচ্ছে সেটি নিশ্চিত। আর এই সান্ত্বনা যে কোন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব সময় দিয়ে থাকে। এর ফলে বিএনপির মধ্যে হতাশা আরও বেড়েছে বলেই ধারণা করা যায়। কারণ, এই বৈঠকের পর বিএনপি নেতকাদের কথা বার্তা আচার আচোণেই বোঝা যায় যে, তারা আসলে এই বৈঠকে খুশি হতে পারেন নি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭