ইনসাইড বাংলাদেশ

৯৯৯ এ কল দিয়ে জীবন ফিরে পেলেন একই পরিবারের চারজন


প্রকাশ: 27/02/2024


Thumbnail

সৌদি প্রবাসী  লিটন। কর্মস্থল থেকে ছুটিতে পাঁচ বছর পর স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের কাছে আসেন। বৃদ্ধ মায়ের আবদার ডাব খেতে, নিজের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে কেনা সম্পদের একটি গাছ থেকে মায়ের আবদার পূরণ করে বসেন মায়ের দেয়া ভাত খেতে। কে জানতো, মাত্র দুইদিন আগে আসা এই রেমিট্যান্স যোদ্ধা নিজের বাড়িতেই হামলার শিকার হবেন, অপরাধীরা ওঁৎ পেতে ছিলো ক্ষমতা নিয়ে। ডাব পাড়াকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাধররা ভাত খেতে বসা ওই প্রবাসীকে টেনে হেঁচড়ে পাশের বাগানে নিয়ে শুরু করে বেদম প্রহার। 

ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে বৃদ্ধা মা রহিমা এগিয়ে গেলে কুপিয়ে তাকে মারাত্নক আহত করে। মা-ছেলের চিৎকার শুনে এগিয়ে আসে প্রবাসীর স্ত্রী সালমা, প্রবাসীর বোন রত্না ও তার স্বামী বেলাল । ক্ষমতাধররা তাদেরকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে বীরদর্পে চিৎকার শুরু করে। এসময় প্রবাসী ও তাঁর স্বজনদের চিৎকার শুনে ওই বাড়ির কেউ ভয়ে এগিয়ে না আসলেও স্থানীয় দোকানদার মিন্টুসহ কয়েকজন এগিয়ে আসলে তাদেরকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয় একই বাড়ির দেশীয় অস্রধারী মতিন, দিদার, সাংবাদিক নামধারী মমিন, মাহফুজ, মান্নান, টিপু ও সুমাইয়া। পরের ঘটনা আরো ভয়ংকর, গুরুতর আহত ওই প্রবাসীর পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যেতে বাধা দেয় তারা। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ এসে স্থানীয় গ্রাম্য পুলিশকে সাথে নিয়ে আহত প্রবাসী ও তাদের পরিবারকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। বুধবার দুপুরে এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন ওইদিন প্রবাসী ও তাঁর পরিবারের সাথে ঘটে যাওয়া লোমহর্ষক ঘটনার চিত্র, ভয় আর আতঙ্কের ছাপ যেন এখনো লেগে আছে ওই পরিবার আর এগিয়ে আসা মানুষগুলোর মাঝে। পুরো বাড়ি নয়, পুরো এলাকাই এখনো থমথমে। বলছিলাম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের কবিরাজ বাড়ির কথা। 

সৌদি প্রবাসী লিটন, স্ত্রী সালমা, প্রবাসীর বোন রত্না ও তার স্বামী বেলাল চররুহিতা ইউনিয়নের কবিরাজ বাড়ির বাসিন্দা। অভিযুক্ত মতিন, দিদার, নামধারী সাংবাদিক মমিন, মাহফুজ, মান্নান, টিপু ও সুমাইয়া একই বাড়ির বাসিন্দা।

কি ঘটেছিলো সেদিন জানতে চাইলাম স্থানীয়, ভুক্তভোগী, এলাকাবাসীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে। তারা জানান, প্রবাসী লিটন তার ক্রয়কৃত সম্পত্তি থেকে ডাব পেড়ে ভাত খেতে বসেছিলেন। এসময় অভিযুক্ত মতিন ও তার সহযোগীরা এসে  লিটনকে ধরে নিয়ে পাশ্ববর্তী একটি বাগানে নিয়ে মারধর শুরু করে। বাধা দিতে গেলে তার পরিবারকেসহ দেশীয় অস্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্নক আহত করে।  বিগত বছরগুলোতে একই কায়দায় প্রবাসীর পরিবারকে হামলা চালিয়েছে এ দাপুটে পরিবারটি। এসময় তারা বলেন, মতিন, মমিন ও তার পরিবারের ক্ষমতার উৎস কোথায় ? কেউ কেউ বলে উঠেন, তালাশে দেখিয়েছে ভুয়া সাংবাদিকের দৌরাত্ম্য, লক্ষ্মীপুরে এরাই ভুয়া। জমি দখল, অবৈধ কাজকে বৈধ করতে এদের সাথে যোগ দেয় আরো নামে বেনামে কিছু সাংবাদিখ (সাংবাদিক)। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর আইডিয়াল ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল টেকনোলজি নামক একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রবাসীর স্ত্রীর দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত তিন নম্বর আসামী সাংবাদিক নামধারী গাজী মমিন। শহরে থেকেই অল্পদিনেই নিজের কুকীর্তি ঢাকতে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের প্রভাবশালী সদস্য বনে যান এ মমিন। গড়ে তোলেন অপসাংবাদিকতার বিশাল বহর। সম্প্রতি নোয়াখালী প্রেসক্লাবের দায়িত্বশীল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ঘোষণা দেন অপসাংবাদিকতার দায় প্রেসক্লাব নিবে না, দেশের প্রথম সারির ইংরেজী দৈনিক দ্য ডেইলী স্টারের একজন দায়িত্বশীল একটি ঘটনায় অভিযুক্ত হলে কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ তদন্ত করার দাবি জানান, ওই দায়িত্বশীলকে স্বপরিবারে পুলিশ আটক করে। তবে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাব কি মমিনের অক্টোপাসে জড়িয়ে ? বলছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা।

আহত প্রবাসীর স্ত্রীর দায়ের করা মামলা যাহার নং: ৪২/৮০ লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা লিপিবদ্ধ হয়, ওই মামলার আসামীই আবার পাল্টা মামলা ৪৩/৮১ একই থানায় অনেকটা প্রভাব খাটিয়ে দায়ের করেছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা। তবুও পুলিশের কাছে ন্যায় বিচার পাবেন সেই অপেক্ষায় তারা।

অভিযুক্ত মমিন কিংবা তাদের কাউকে বক্তব্য নিতে পাওয়া যায় নি।

গ্রাম পুলিশ মাঈন উদ্দিন সেদিনকার বিভীষিকাময় দুপুরের কথা বলতে গিয়ে আঁতকে উঠে বলেন, সদর থানার পুলিশের উপস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য প্রবাসীর রক্তাক্ত পরিবারকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মাইন উদ্দিন পাঠান বলেন, সাংবাদিকতা এখন আর আগের স্থানে নেই,   অপরাধী যেই সাংবাদিকদের উচিত সত্য তুলে ধরা। 

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭