ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পশ্চিমাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কেন সবাই?


প্রকাশ: 28/02/2024


Thumbnail

আর এক সপ্তাহ পরেই গাজা যুদ্ধ পঞ্চম মাসে পা দিতে চলেছে। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর চলমান বর্বর হামলায় একতরফা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব। এ সংঘাত মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশেই বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও গাজা যুদ্ধে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। গাজায় প্রায় পাঁচ মাসে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনের ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, যার অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত হয়েছে গাজার ২৩ লাখ মানুষ। খাদ্যসংকটে বহু মানুষ ক্ষুধার্ত। নজিরবিহীন এ হামলা বন্ধে পশ্চিমা বিশ্বের উদাসীনতাই প্রমাণ করে আরবদের জীবনের মূল্য তাদের কাছে কতটা মূল্যহীন।

স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে যারা খোঁজ রাখেন, তাদের কাছে এ বিষয়টি খুবই পরিচিত। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে পশ্চিমাদের দ্বিমুখী নীতি এখন সবার কাছে স্পষ্ট। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের অধ্যাপক ফাওয়াজ এ জর্জেস তার নতুন বই ‘হোয়াট রিয়েলি ওয়েন্ট রং: দ্য ওয়েস্ট অ্যান্ড দ্য ফেইলিওর অব ডেমোক্র্যাসি ইন দ্য মিডল ইস্ট’-এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন।  
 

যার সারকথা হলো: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব প্রায় এক শতাব্দী ধরে হস্তক্ষেপবাদী, সামরিকবাদী এবং গণতান্ত্রিক বিরোধী বৈদেশিক নীতি পালন করে আসছে, যা মূলত মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করছে। পশ্চিমা নীতিগুলো ঐতিহাসিকভাবে সাম্যবাদকে ফিরিয়ে আনার এবং উদার পুঁজিবাদের আধিপত্যকে সুরক্ষিত করার আকাঙ্ক্ষার জন্য চালিত হয়ে আসছে।

এ নীতিকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের একটি শূন্য-সমষ্টি পছন্দের প্রস্তাব দেয়: হয় পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা জোটে যোগ দাও, যা তাদের অর্থনীতিকে বিশ্বব্যাপী পুঁজির জন্য উন্মুক্ত করবে, অন্যথায় শত্রু হিসেবে বিবেচিত হবে। স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং তেলের বাজার নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ সুরক্ষিত করার নামে পশ্চিমা শক্তিগুলো মধ্যপ্রাচ্যের স্বৈরাচারী নেতাদের সঙ্গে দর-কষাকষিতে লিপ্ত হয়।

১৯৫১ সালে ইরানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন দেশটির জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের নেতা মোহাম্মদ মোসাদ্দেক। এর আগেও দুবার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মোসাদ্দেক ইরানের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ পরিচিত ছিলেন। ৩৫তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ইরানের তেল সম্পদকে জাতীয়করণ করেন তিনি। এতে করে মোসাদ্দেক সরকারের ওপর ক্ষিপ্ত হয় ব্রিটেন। কেননা সে সময় ইরানের তেল সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছিল ব্রিটিশদের।
 
মোসাদ্দেক দেশীয় সম্পদকে জাতীয়করণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণ করেছেন ঠিকই। কিন্তু ইরানের তৎকালীন রাজা (শাহ) মোহাম্মদ রেজা পাহলভীর সঙ্গে সম্পর্ক-স্থাপন করেননি কিংবা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে বসতেও চাননি। অন্যদিকে ইরানের তেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রিটেন তখন বন্ধুরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য কামনা করে। এই ডাকে সাড়া দিয়ে ইরানে মোসাদ্দেক বিরোধী অভ্যুত্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে নেমে পড়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭