ইনসাইড পলিটিক্স

মন্ত্রিত্ব না পাওয়া নেতাদের মানবে কর্মীরা?


প্রকাশ: 01/03/2024


Thumbnail

আজ কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যরা শপথ গ্রহণ করবেন। এই শপথ গ্রহণের পরপরই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন টানা চতুর্থ বারের মতো সরকারের মন্ত্রিসভা পূর্ণতা পাবে। 

গত ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে এবং ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকেই আলোচনা ছিল যে, মন্ত্রিসভা সম্প্রসারিত হবে। আজ সেই সম্প্রসারণের কাজ চূড়ান্ত হয়েছে। তবে মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে যত না চমক ছিল তার চেয়ে বেশি চমক দেখানো হয়েছে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে। আর এক্ষেত্রে আনকোরা নতুন মুখদেরকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। প্রাধান্য পেয়েছেন নারীরা। অন্তত চারজন নারী সংসদ সদস্য নতুন মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদিকা ডা. রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত কোটায় সংসদ সদস্য হওয়া চট্টগ্রাম থেকে ওয়াসিকা আয়শা খান এবং নাহিদ ইজহার খান। তাছাড়া, রাজশাহী-নওগাঁ থেকে মন্ত্রিসভায় সদস্য নেওয়া হয়েছে। এটি একটি বড় চমক হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 

প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগে যারা জনপ্রিয় নেতা, যারা সংগঠনের জন্য কাজ করেন এবং দলের কর্মীদের মধ্যে যাদের গ্রহণযোগ্যতা বেশি, সাধারণ মানুষের যাদের নিয়ে আগ্রহ বেশি তারা এবারও মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হননি।

বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন এর মতো জনপ্রিয় নেতাদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত না করার কারণ কি? এর ব্যাখ্যায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা নানা রকম মত প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ বলছেন যে, প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির এটি একটি রাজনৈতিক কৌশল। তিনি ইচ্ছে করেই তাদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেননি। 

যদিও এবারের মন্ত্রিসভায় সরকার এবং দলের আলাদা করার কৌশল অনেকটাই ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা এবার মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। কিন্তু তারপরও যারা সংগঠনের জন্য নিবেদিত প্রাণ এরকম বেশ কয়েকজনকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আর এটির প্রধান কারণ হলো, সংগঠন গোছানো। 

গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে এবং পরে আওয়ামী লীগের অন্তঃকলহ, বিভক্তি অত্যন্ত দৃশ্যমান ভাবে বেড়ে গেছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের একাধিক গ্রুপে বিভক্ত। সংগঠনকে ঢেলে সাজানো এখন আওয়ামী লীগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এরকম বাস্তবতায় যারা সংগঠনে সময় দেন, তাদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলেই অনেকে মনে করেন৷ কিন্তু এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। 

অনেকেই মনে করছেন যে, টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে মন্ত্রীদের ব্যাপারে কর্মীদের আগ্রহ বেড়েছে। বিশেষ করে মন্ত্রীদের কাছে গেলে কর্মীদের বিভিন্ন সমস্যা এবং সুযোগ সুবিধার জন্য দেন দরবার করা সহজ হয়। একজন মন্ত্রী একজন কর্মীকে যেভাবে সহায়তা করতে পারেন, একজন নেতা সেটি পারেন না। যার ফলে এখন কর্মীরা তাদের নেতাদেরকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। মন্ত্রী না হলে কর্মীদের জন্য বা দলের জন্য কিছুই করা যায়না এরকম একটি ধারণা আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে। 

আর একারণেই দেখা যাচ্ছে যে, মন্ত্রীত্ব না পাওয়া নেতাদেরকে আগের মত শ্রদ্ধা-সম্মান করছেন না। বরং মন্ত্রীদের কাছেই ধর্না দিচ্ছেন কর্মীরা। এরকম বাস্তবতায় জনপ্রিয় নেতাদেরকে মন্ত্রিত্ব থেকে দূরে রাখার ফলে সংগঠনে বিরোধ এবং অন্তঃকলহ মেটানোর লক্ষ্য কতটা পূরণ হবে তা নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রিত্ব না পাওয়া নেতাদের কর্মীরা মানবে কিনা সে নিয়েও দেখা দিয়েছে সন্দেহ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭