ইনসাইড বাংলাদেশ

বেইলি রোডে আগুনের বিচার নিয়ে সন্দিহান সাবেক মন্ত্রী


প্রকাশ: 01/03/2024


Thumbnail

রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিচার হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম। একই সাথে বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভও প্রকাশ করেন তিনি।

শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে আবেগঘন পোস্ট করেন শ ম রেজাউল।

বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা ৪৬ জন উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্টে এই সংসদ সদস্য লেখেন, ‘এর দায় অবশ্যই তাদের নিতে হবে, যাদের গাফিলতির কারণে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হলো। স্বজন হারাদের আর্তনাদ, অপূরণীয় ক্ষতি এবং অনেক পরিবারের সুন্দর ভবিষ্যৎ কীভাবে নির্মমতায় শেষ হয়ে গেল, এর বিচার হবে কি না জানি না।’

সাবেক এই মন্ত্রী আরও লেখেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে দায়ীদের সব তথ্য দিয়েছিলাম দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক)। অপ্রিয় হলেও সত্য, তদন্ত রিপোর্টে যাদের দায় নিরূপন হয়েছিল তাদের সবার বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করা হয়নি। আরও আশ্চর্য যে, তদন্ত শেষে আরও অনেককেই বাদ দিয়ে দেয়া হয় অভিযোগপত্রে। যাদের দায় নির্ধারণ করেছিল উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি, তাদের চেয়ে অনেক নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ওই দায়ীদের একটি অংশকে অব্যাহতি দিয়ে দিলেন।’
 
‘বনানীর এফআর টাওয়ারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছিল, আমাদের ভবনগুলোর অব্যবস্থাপনা এবং দেখভাল করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন সংস্থার ব্যর্থতা। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি করেছিলাম একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে। তদন্তে ৬২ জনের দায় নিরূপণ হয়েছিল ভবন নির্মাণ এবং তদারকির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মধ্য থেকে।’
 
‘অতি দ্রুততার সঙ্গে তাদের জামিন হয়ে গেল। এমনও নজির রয়েছে, কোনো কোনো আসামিকে একদিনের জন্যেও জেল হাজতে যেতে হয়নি। বিচারে শাস্তি হওয়াতো অনেক দূরের কথা। যতদূর জানি এই মামলার বিচার আজও হয়নি। ওই ঘটনা দেশি-বিদেশি সব গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।’
 
ওই ঘটনার পরে ফায়ার ব্রিগেড ও সিভিল সার্ভিসের সক্ষমতা বাড়াতে অনেক যন্ত্রপাতি আনা হয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ (রাজউক) অন্যান্য সংস্থাকে এ জাতীয় ভবনের তদারকের ওপরে গুরুত্ব দিয়ে নির্দেশনা দেয়া হয় কিন্তু সবকিছুই অল্প সময়ে স্থিমিত হয়ে যায়  বলে উল্লেখ করে রেজাউল। বলেন, ‘এভাবেই অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে ভূলুণ্ঠিত করে দিয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়।’
 
প্রভাবশালীদের হাত অনেক লম্বা মন্তব্য করে তিনি লিখেন, ‘তারা সবকিছুই ম্যানেজ করে ফেলতে পারেন। বেইলি রোডের নির্মমতা আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করলেও অনেকেই এই সব অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহ ঘটনায় দায়ীদের বাঁচানোর জন্যই তৎপর হয়ে যান। নারায়ণগঞ্জের হাশেম ফুডের ঘটনায় পোড়া দেহগুলো স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করার আগেই জামিন হয়ে যায় আসামিদের। আমাদের বিবেক কি নির্বাক হয়ে এসব দেখেই যাবে? নিহতদের পরিবারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা ছাড়া কী আর বলার আছে?’
  
সবশেষে চিকিৎসাধীন সবার আরোগ্য কামনা করে এই সাংসদ বলেন, ‘এই ঘটনায় দায়ী অপরাধীরা যেহেতু শক্তিশালী, তাদের হাত অনেক লম্বা, তাই তাদের নিয়ে না হয় কোনো মন্তব্য করলাম না।’
 
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৯টা ৫৬ মিনিটে। পরে আগুনের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়লে আরও ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে পুলিশ, আনসার, র‌্যাব ও এনএসআই। ১৩টি ইউনিটের ২ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুনের এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৬ জন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭