ইনসাইড পলিটিক্স

নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের কোন্দল


প্রকাশ: 03/03/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগ নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা এতে উদ্বিগ্ন-আতঙ্ক অনুভব করছেন। 

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা স্বীকার করেছেন যে, সংগঠন বলে এখন আর কোন কিছু নেই। এখন যে যার মতো করে ফ্রি স্টাইলে আওয়ামী লীগ চালাচ্ছেন। প্রত্যেকটা জেলায় জেলায় আওয়ামী লীগে তৈরি হয়েছে দখলদারিত্ব এবং যে যার মতো পাচ্ছে সংগঠনকে ব্যবহার করছে। এটি আওয়ামী লীগের জন্য এটি ভয়ঙ্কর প্রবণতা বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা। 

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার জন্য কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে। এই কৌশলগত অবস্থানই ছিল যারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা তাদের পদে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ফলে আওয়ামী লীগের কোন্দল ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। 

নির্বাচনের পরই কোন্দল বন্ধের জন্য একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়। আওয়ামি লিগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে নেতাদেরকে কোন্দল বন্ধ করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। কিন্তু এতেও কাজ হয়নি। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে একই রকম আহ্বান জানানো হয়। এর ফলও খুব একটা ইতিবাচক হয়নি। সর্বশেষ আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা করে কোন্দল বন্ধের জন্য তাগিদ দেয়। কিন্তু তারপর দেখা যাচ্ছে যে কোন্দল বন্ধ হয়নি। 

এই মুহূর্তে দুটি সিটি নির্বাচন চলছে, যেখানে দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ মার্চ। এই নির্বাচনকে ঘিরে ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লায় আওয়ামী লীগ স্পষ্ট বিভক্ত এবং পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়ে রেখেছে। সামনে উপজেলা নির্বাচনের পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

কিছু কিছু পদক্ষেপের কারণে কোন্দল আরও বেড়ে গেছে বলে আওয়ামী লীগ মনে করছে। বিভিন্ন স্থানে যেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন সেখানে তাদের কাছে পরাজিত আওয়ামী লীগের প্রার্থীদেরকে নারী সংসদ সদস্য হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছে। আবার কোথাও মনোনয়ন না পাওয়া নারী সংসদ সদস্যরা সংরক্ষিত কোটায় এমপি হয়েছেন। এখন এমপিদের সাথে সংরক্ষিত কোটায় নারীরা মুখোমুখি দাঁড়িয়েছেন। 

উপজেলা নির্বাচন নিয়েও আওয়ামী লীগের ভেতর মধ্যে একাধিক বিভাজন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যারা আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি হয়েছেন তারা উপজেলা নির্বাচনে তাদের কর্তৃত্ব অব্যাহত রাখার জন্য পছন্দের প্রার্থী দিচ্ছেন। অন্যদিকে যারা এই আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি হতে পারেনি, স্বতন্ত্রদের কাছে পরাজিত হয়েছেন তারা এখন নিজেদের হারানো অবস্থান পুনরুদ্ধারের জন্য উপজেলা নির্বাচনকে বেছে নিয়েছেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী লীগে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছেন। সবকিছু মিলিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে একটি লেজেগোবরে অবস্থা তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো যে, আওয়ামী লীগের যে অঙ্গ সহযোগী সংগঠন আছে তারাও এখন ক্রমশ বিভক্ত হয়ে পড়ছে। দলীয় এমপিদের পক্ষে, পরাজিত স্বতন্ত্রদের পক্ষে ইত্যাদি নানা ভাগ উপভাগে আওয়ামী লীগ এখন বিভক্ত। থেমে থেমে বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার ঘটনাও ঘটছে। সবকিছু মিলিয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের কোন্দল।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭