এডিটর’স মাইন্ড

হাল ছেড়ে দিয়েছেন বিএনপি নেতারা


প্রকাশ: 04/03/2024


Thumbnail

সরকার পতনের আন্দোলনে হাল ছেড়ে দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপিতে এখন চলছে হতাশার রাজত্ব। কর্মী এখন ইতিউতি ঘোরাফেরা করছেন। কেউ কেউ চাকরি নিচ্ছেন, কেউ কেউ রাজনীতি ছেড়ে ব্যবসা বাণিজ্য করার চেষ্টা করছেন। আর নেতারা এখন বাড়িতে আরামে আয়েশে বিশ্রাম করছেন। 

কদিন আগেও বিএনপির মধ্যে এক ধরনের আশাবাদ ছিল। তারা নতুন করে আন্দোলন শুরু করার চেষ্টাও করেছিল। কিন্তু এখন বিএনপির মধ্যে সেই আশাবাদ উঠে গেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগার থেকে বের হওয়ার পর বাড়িতেই অবস্থান করছেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাকে খুব একটা সক্রিয় দেখা যায়নি। এখন তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গেছেন। অন্যদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরাও চুপচাপ ঘরে বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। 

একাধিক মামলা থেকে জামিন পেয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে মুক্তি পেয়েছিলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। মুক্তি পাওয়ার পর তিনিও আর সরব নেই। বরং তিনি বাড়িতেই বিশ্রাম নিচ্ছেন। 

বিএনপির আরেক নেতা মির্জা আব্বাসের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। মির্জা আব্বাস এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন। 

আর যে সমস্ত নেতারা জেলের বাইরে ছিলেন, তাদের মধ্যে ড. মঈন খান এবং রুহুল কবির রিজভী অন্যতম। মঈন খান যতদিন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জেলে ছিলেন, ততদিন টুকটাক কিছু কাজকর্ম করেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে কিছু চিত্কার চেঁচামেচি করতে দেখা গেছে তাকে। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্ত হওয়ার পর তিনিও নীরবতা অবলম্বন করছেন। দু একটা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়া ছাড়া তার কোন কাজকর্ম নেই। 

রুহুল কবির রিজভী সব সময় সরব থাকেন। সেই রিজভীও এখন বিবৃতি বন্দি হয়ে গেছে। দু একটা বিবৃতি দেওয়া ছাড়া তার কোন তৎপরতা নেই। বিএনপির কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। বিএনপি বলেছিল যে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর তারা আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে। কিন্তু সেই কর্মসূচি বিএনপি অব্যাহত রাখতে পারেননি। আর এর ফলে বিএনপিতে এক ধরনের হাল ছেড়ে দেওয়া ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। 

বিএনপির কোন নেতাই অদূর ভবিষ্যতে আন্দোলন গড়ে তোলা বা সরকারের বিরুদ্ধে একটা প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য চিন্তা করছেন না। এটাকে তারা দুরাশা মনে করছেন। এর বড় কারণ হল যে, আন্তর্জাতিক মহল থেকে সরকারের ওপর কোন চাপ নেই। সরকারকে সকল মহলই স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের সফরের পরই বিএনপি চুষে গেছে। এই সফরে মার্কিন প্রতিনিধি দল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ওই বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিএনপি নেতাদের মধ্যে হতাশা লক্ষ্য করা গেছে। এখান থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে যে, বিএনপির আন্দোলনের প্রতি বা এই সরকারকে হটিয়ে নতুন সরকার বসানোর ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোন ইতিবাচক সম্মতি নেই। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিচ্ছে। এটি বিএনপির জন্য হতাশার সবচেয়ে বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিএনপির নেতাদের মধ্যে তারেক জিয়াকে নিয়ে এক ধরনের অসন্তোষ, ক্ষোভ এবং হতাশা তৈরি হয়েছে। তিনি আন্দোলনের যে কৌশল দিচ্ছেন সেই কৌশলগুলো অবাস্তব এবং বাংলাদেশের বাস্তবতায় কোনভাবেই কার্যকর নয় বলে অধিকাংশ নেতা মনে করছেন। 

বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, তারেক জিয়ার পাগলামির কাছে বিএনপি এখন জিম্মি হয়ে আছে। কর্মীদের মধ্যে অধিকাংশই নানারকম মামলায় জর্জরিত। তারা কোর্টে হাজিরা দেওয়া আর পালিয়ে থাকা নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। মামলা থেকে বাচার জন্য অনেকে সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করছেন, অনেকে রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন। কেউ কেউ চাকরি বা ব্যবসা বাণিজ্য করার চেষ্টা করছেন। সবকিছু মিলিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে ক্রমশ অস্তিত্বের সংকটে পড়ছে বিএনপি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭