ইনসাইড বাংলাদেশ

অগ্নিনিরাপত্তা অভিযানে নেমেছে রাজউক, দক্ষিণ সিটি ও পুলিশ


প্রকাশ: 05/03/2024


Thumbnail

দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে গাউসিয়া টুইন পিক নামের একটি বহুতল ভবনের সামনে রাজউকের একটি গাড়ি দেখা যায়। সেখানে দেখা যায়, বিকেলে গাউসিয়া টুইন পিকে অভিযান চলিয়ে ১৪টি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং একটি ভেঙে ফেলা হয়।

এদিকে ধানমন্ডির কেয়ারি ক্রিসেন্ট প্লাজায় (৪ মার্চ) সোমবার একই সময়ে অভিযান চালায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। তারা ১৫ তলা ভবনটিতে থাকা ১১টি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়ে পুরো ভবনটি সিলগালা করে দেয়।

ওদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) (৪ মার্চ) সোমবার অভিযান চালিয়েছে ওয়ারীতে। সেখানে ১৪টি রেস্তোরাঁয় চালানো অভিযানে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ১৬ জনকে আটক করা হয়। ডিএমপি জানিয়েছে, (৩ মার্চ) রোববার থেকে (৪ মার্চ) সোমবার পর্যন্ত পুলিশ ২৮৫টি রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়েছে। এতে ৩৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ২০৪টি।

তিন পক্ষের এই অভিযান শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের একটি আটতলা ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যুর পর। ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল। সেখানে খেতে গিয়ে মানুষ আগুনে মারা যান। পরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জানায়, ভবনটিতে রেস্তোরাঁ করার অনুমতি ছিল না। অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভবনটি যে অগ্নিনিরাপত্তার ঝুঁকিতে ছিল, তা তিন দফা চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল। তবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো সমালোচনার মুখে পড়ে। জাতীয় সংসদেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ভবনমালিকদের দায়মুক্তি দেওয়ার অভিযোগ করেন সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং বর্তমানে সরকারি দলের সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিম। এই পটভূমিতে অভিযানে নেমেছে রাজউক, সিটি করপোরেশন ও পুলিশ।

রাজউক, দক্ষিণ সিটি ও পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে যে যার মতো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের জীবন বাঁচাতে, অগ্নিঝুঁকি দূর করতে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভিযান চালাতেই হবে। তবে তা হতে সমন্বিত, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ভিত্তিতে। এতে আরও বেশি সুফল পাওয়া যাবে।

অভিযান সমন্বিত কি না, জানতে চাইলে গণপূর্তসচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, রাজউক আপাতত নিজেদের মতো করে অভিযান পরিচালনা করছে। সরকারের অন্য দপ্তর জনবলের অভাব ও অন্য কাজের চাপে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করতে পারছে না। ফলে সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে এখন অভিযান চালানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, রাজধানীর ধানমন্ডি, সাতমসজিদ রোডসহ অন্যান্য এলাকায় নিয়ম না মেনে যেসব রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, রাজউক সেখানে অভিযান চালাবে। পরে সরকারের অন্য দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে অভিযান চালানো হবে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাদের পরিদর্শনে আসা রাজধানীর ২ হাজার ৬০৩টি ভবন অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি—১ হাজার ১০৬টি বিপণিবিতান। ৮০১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৩৪৫টি হাসপাতাল ও ৩২৫টি আবাসিক ভবন রয়েছে ঝুঁকির তালিকায়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ২০১০ ঢাকায় অগ্নিঝুঁকি নিয়ে বেশি আলোচনা হয় ডাকার নিমতলীতে আগুনে ১২৪ জনের মৃত্যুর পর। এরপর বিভিন্ন সময় সরকারি সংস্থাগুলো অভিযান চালায় কিন্তু সমন্বিত, কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদি অভিযান চালানো হয়নি। ফলে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যুঝুঁকি কমেনি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭