ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজনীতির মাঠে ড. ইউনূসের পদধ্বনি


প্রকাশ: 06/03/2024


Thumbnail

দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং শ্রমিক ঠকানোর মামলা থেকে ড. ইউনূস রাজনীতির আশ্রয় নিচ্ছেন। এখন তিনি গণতন্ত্র, সুশাসন এবং জনগণের মত প্রকাশের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন সাক্ষাৎকারই শুধু দিচ্ছেন না, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নানারকম বক্তব্য ও সাক্ষাৎকারও দিচ্ছেন। এর ফলে ড. ইউনূসের ইস্যুটি যেমন একটি রাজনৈতিক আবহ পেতে শুরু করেছে তেমনি রাজনীতির মাঠেও ইউনূসের আবির্ভাব ঘটছে। 

তবে ড. ইউনূসের সাথে ঘনিষ্ঠ যারা তার জানেন যে, ড. ইউনূস সরাসরি রাজনীতির মাঠে নামবেন না বা তিনি নিজে কোন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেবেন না। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যেন আওয়ামী লীগের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে, আন্তর্জাতিক মহল যেন সরকারের ওপর আবার ক্ষুব্ধ হয় সেজন্য সব রকমের প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছেন ড. ইউনূস। যদিও ড. ইউনূস বলেছেন যে, তার কোন রাজনৈতিক অভিপ্রায় নেই। তাকে ১/১১ এর সময় মসনদে বসার আহ্বান জানানো হয়েছিলো, সে আহ্বানে তিনি সাড়া দেননি। কিন্তু বাস্তবতা হলো ড. ইউনূস যেটি বলেন সেটি করেন না। যা বিশ্বাস করেন তা মুখে বলেন না। যা বলেন তা বিশ্বাস করেন না। এ কারণে ড. ইউনূস যা করবেন বা যা বলবেন তা সবকিছুই নিজের স্বার্থের জন্য বলবেন। নিজের স্বার্থ ব্যতিরেকে কিছুই বলেন না। 

বর্তমানে শ্রম আদালতের একটি মামলায় ছয় মাসের কারাদণ্ডে দন্ডিত হয়ে তিনি জামিনে আছেন। অর্থ পাচারের মামলায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। সে মামলা থেকে তিনি জামিন নিয়ে এটিকে বিস্ময়কর একটি ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন। এ মামলার জামিনের পর থেকেই ড. ইউনূস সরব হয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে। রাজনীতির মাঠে তিনি বিভিন্ন রকম প্ররোচনা ও উস্কানি দিচ্ছেন। বিশেষ করে বিরোধী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে না, গণতন্ত্রের জন্য কথা বলছেন না এবং দেশে গণতন্ত্র নেই এ নিয়ে তার অন্তহীন আহাজারি এখন ক্রমশই দৃশ্যমান হচ্ছে। এর পিছনে একটি সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি রয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। 

ড. ইউনূস মনে করছেন যে, যদি সরকারের ওপর তিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করতে পারেন তাহলে সরকার তার প্রতি নমনীয় হবে। অন্যদিকে তিনি রাজনীতির মাঠে নেমে তার ইস্যুটি সরকারের একটি আক্রোশমূলক বা প্রতিহিংসামূলক বলেও অনেক চেষ্টা করবেন। আর একারণেই ড. ইউনূসের এখনকার বক্তব্য বা তৎপরতাগুলো রাজনৈতিক। 

২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরও ড. ইউনূস রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সাথে ধারাবাহিকভাবে বৈঠকও করেছিলেন। তখন ড. ইউনূস বলেছিলেন, তার এই রাজনৈতিক অভিযাত্রায় তিনি বিপুল সাড়া পাচ্ছেন। তিনি বিস্মিত ও অভিভূত এমন মন্তব্যও তিনি করেন। তবে শেষ পর্যন্ত বাস্তবতা বুঝে নিজের স্বার্থে তার রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে সরে আসেন। এখন ড. ইউনূস যেটি চাচ্ছেন তা হলো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক মঞ্চ গড়ে তোলা এবং সেই মঞ্চ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মহল যেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পাশে দাঁড়াই সেজন্য তিনি ওকালতিও করছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

ড. ইউনূস একজন খ্যাতিমান লবিস্ট। বিভিন্ন সময়ে তিনি অর্থের বিনিময়ে মার্কিন নীতি নির্ধারকদের কাছে লবিং করেন। এবারও বিরোধী দলগুলোকে চাঙ্গা করতে এবং সরকারের বিরুদ্ধে তারা যেন ঐক্যবদ্ধ হয় তার জন্য লবিং করছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে ড. ইউনূস যা কিছু করেন তা নিজের স্বার্থের জন্যই করেন, নিজের স্বার্থের বাইরে তিনি কিছুই করেন না। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭