ইনসাইড বাংলাদেশ

সংসদ সদস্য বনাম ডিসি


প্রকাশ: 06/03/2024


Thumbnail

চারদিন ব্যাপি ডিসি সম্মেলন আজ শেষ হলো। ডিসি সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ে ডিসিদের করণীয় এবং তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনের দিনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরকে সুনির্দিষ্ট কিছু দায়িত্ব এবং সতর্ক বাণী দিয়েছেন। তবে এবারের ডিসি সম্মেলনে সবকিছু ছাপিয়ে যে মূল বিষয়টি সামনে এসে দাঁড়িয়েছে তা হলো একটি জেলার নিয়ন্ত্রণ কার কাছে থাকবে একজন ডিসির কাছে, না একজন সংসদ সদস্যের কাছে। 

একাধিক সংসদ সদস্য বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে, ডিসিদেরকে জেলা প্রশাসক বলাটাই আপত্তিকর এবং অসাংবিধানিক। কারণ ডিসি কখনোই জেলা প্রশাসক হতে পারেন না। উল্লেখ্য যে, ডিসি সম্মেলনের আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে সাংবাদিকরা ‘ডিসিরা কেন জেলা প্রশাসক’ সেই প্রশ্নটি করেছিলেন। কিন্তু সেই প্রশ্নের তিনি উত্তর দিতে পারেননি। 

সংসদ সদস্যরা মনে করেন যে, ডিসি সম্মেলনে যেভাবে মাঠ কর্মকর্তাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তাদেরকে যেভাবে বিভিন্ন ইস্যু তদারকি করার জন্য ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে তাতে সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা খর্ব হবে। তবে সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী বলেছেন যে, ডিসিরা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন, সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব হলো আইন প্রনয়ন করা এবং জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের বিভিন্ন সমস্যা এবং বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখভাল করা। আর তাই দু’টির মধ্যে কে ক্ষমতাবান এ প্রশ্নটি অবান্তর। 

তারা মনে করেন যে, সংসদ সদস্য হলেন জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি। কাজেই স্থানীয় প্রশাসন সংসদ সদস্যদের পরামর্শ, উপদেশ যদি ন্যায় সঙ্গত হয় সেটি শুনবেন। প্রশাসনিক ব্যাপারে সংসদ সদস্যরা হস্তক্ষেপ করবেন না এটি প্রত্যাশিত। তবে গত কয়েক বছর ধরে দেখা গেছে যে, জেলায় ডিসিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন, তারা সংসদ সদস্যদের পাত্তাই দিচ্ছেন না, এমনকি কোন কোন বিষয়ে সংসদ সদস্যদের প্রতি ন্যূনতম সম্মান প্রদর্শন করারও প্রবণতা নেই ডিসিদের। 

অনেক স্থানে দেখা গেছে যে, ডিসিরা সংসদ সদস্যদের কথা-তো শুনেনই না, তাদের ফোন পর্যন্ত ধরেন না। এ বিষয়গুলো নিয়ে গত ৫ বছরে জাতীয় সংসদে বহুবার হুলস্থুল হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ বিষয়টি অমিমাংসিতই রয়ে গেছে। যেহেতু প্রতিটি জেলার দায়িত্ব এখন একজন সচিবকে দেয়া হয়েছিলো সেহেতু ডিসিরা সরাসরি সচিবদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতো এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরকে গুরুত্ব দিতো না। কিন্তু নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর আগের যে দায়িত্ব বণ্টন তা আপনা আপনি বাতিল হয়ে যাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আর সেটি যদি হয় তাহলে এখন সচিবরা আর জেলার দায়িত্বে নাই। 

অনেকেই মনে করেন, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলার অবস্থান লক্ষ্য রেখেছেন, সেকারণে মন্ত্রীদেরকেই এবার জেলার দায়িত্ব দেওয়াটা উচিত হবে। তবে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী কি সিদ্ধান্ত নিবেন সেটি তার ব্যাপার। কিন্তু জেলার দায়িত্বে যদি সচিবরা থাকে তাহলে ডিসিদের মাঠ পর্যায়ে দৌরাত্ব কমবে না। জেলায় তারা সর্বেসর্বা হয়ে উঠবে এবং সব বিষয়ে নাক গলিয়ে জনপ্রতিনিধিদেরকে উপেক্ষা করবেন। নতুন সরকারের নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। এই নতুন সরকার প্রথম ডিসিদের নিয়ে সম্মেলন করলো। এখন সকলে মনে করে যে, মাঠে একটা শৃঙ্খলা আনার জন্য জনপ্রতিনিধি এবং ডিসিদের পারস্পারিক শ্রদ্ধা এবং মর্যাদার সম্পর্ক ধাকা উচিত। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭