ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপিতে প্রকাশ্য বিদ্রোহ-অসন্তোষ


প্রকাশ: 06/03/2024


Thumbnail

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। শুধু অংশগ্রহণ করবে না এমন ঘোষণা করেই তিনি ক্ষান্ত হননি। রিজভী এটিও জানিয়ে দিয়েছেন যে, বিএনপির যদি কোন নেতা সে যে কোন পর্যায়েই হোক না কেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, তাহলে তাকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের এই ঘোষণা বিএনপির তৃণমূলের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। অনেক স্থানেই সিদ্ধান্তকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতারা। 

বিএনপি তৃণমূলের নেতারা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন। শুধু অবস্থান জানিয়ে তারা ক্ষান্ত হননি। তৃণমূলের নেতারা যারা উপজেলা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তারা এখন উপজেলা নির্বাচন করার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তারা মনে করছেন যে, দল যা ইচ্ছা করতে পারে, কিন্তু দলের অস্তিত্বের কারণেই তারা উপজেলা নির্বাচন করতে চান। 

বিএনপির অন্তত দুইশ উপজেলায় এরকম নেতাদের সন্ধান পাওয়া গেছে যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি এবং জনসংযোগ অব্যাহত রেখেছে। তারা বলছেন যে, এই ধরনের একতরফা অবিবেচক সুলভ সিদ্ধান্ত তারা মানতে রাজি নন। আর এ নিয়ে বিএনপিতে এখন নতুন করে শুরু হয়েছে অসন্তোষ এবং বিদ্রোহ। 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও বিএনপির অনেক নেতা নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে যারা জনপ্রিয়, তারা নির্বাচন করতে করতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু তারা সেই সময় বিএনপির মাঠ পর্যায়ে অনেকের হিসেব ছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো যে ভূমিকা নিয়েছে তাতে আমরা একতরফা নির্বাচন করে সরকার টিকতে পারবে না। সেই আশায় বিএনপির অনেকে নির্বাচন করেনি এবং শেষ মুহূর্তে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে এসেছে। তবে এই সময়ে বিএনপির অন্তত একশ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এমনকি বেগম খালেদা জিয়ার এক সময় উপদেষ্টা শওকত মাহমুদসহ আরও কেন্দ্রীয় নেতারাও নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু ওই নির্বাচনের পর বিএনপিতে বড় ধরনের ভাঙন দেখা যায়নি। বরং যারা নির্বাচিত অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের সিদ্ধান্তই ভুল ছিল এমন একটা বার্তা প্রচারিত হয়েছে। 

এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। এখন মনে করা হয় যে, বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল। না নির্বাচন, না আন্দোলনে এরকম অবস্থানে থেকে বিএনপি নিজেকেই একটি সংকটের মধ্যে ফেলেছে বলে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন। আর এই অবস্থায় তৃণমূলের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে হতাশা। তারা নানা দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রথমত, এই নির্বাচন বর্জনের ফলে তাদের বিরুদ্ধে নানা রকম মামলা হয়েছে। তারা নানা রকম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, জনগণের কাছে তাদের যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে, জনসংযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে স্থানীয় যে অবস্থান সে অবস্থান তারা হারিয়েছেন। সর্বশেষ কর্মীদেরকে ধরে রাখা বা কর্মীদের চাঙ্গা রাখার যে সুযোগ সেই সুযোগও তারা এখন পাচ্ছেন না। আর এ কারণেই আসন্ন উপজেলা নির্বাচন তাদের জন্য একটি বড় ধরনের সুযোগ তৈরি করেছে বলে তারা মনে করেন। এর মাধ্যমে তারা একদিকে যেমন মামলা হামলার হাত থেকে বেচে প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসতে পারেন অন্যদিকে কর্মীদের নিয়ে সংগঠন গোছাতে পারেন। এছাড়া জনগণের কাছে গিয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারেন। আর এ কারণেই বিএনপির সিদ্ধান্ত অমান্য করে বহু বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭