ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির স্থায়ী কমিটির পদ কি নিলামে উঠছে?


প্রকাশ: 07/03/2024


Thumbnail

বিএনপির স্থায়ী কমিটির পাঁচটি পদ শূন্য রয়েছে। স্থায়ী কমিটির এই পদগুলো পূরণের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দেনদরবার হচ্ছে। বিএনপি নেতারা মনে করেন আন্দোলনের গতি বাড়াতে হলে সংগঠন গোছাতে হবে। আর সংগঠন গোছানোর জন্য প্রথম প্রয়োজন স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির কোন কোন সদস্যের মৃত্যুর কারণে যে পদগুলো শূন্য হয়েছে তার মধ্যে অনেকগুলো পদই পূরণ করা হয়নি। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বছর দুয়েক আগে স্থায়ী কমিটির কয়েকটি পদ পূরণ করেছিলেন। সেখানে ইকবাল মাহমুদ টুকু, সেলিমা ইসলাম সহ কয়েকজনকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। কিন্তু এরপরও স্থায়ী কমিটির পাঁচটি পদ শূন্য রয়েছে। এই পদগুলো দ্রুত পূরণ করা প্রয়োজন এমন কথা বলা হচ্ছে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, কাউন্সিলের আগেই স্থায়ী কমিটির সদস্য পদ পূরণের একটি উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে। এ নিয়ে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। তারেক জিয়া যে কোন কমিটি গঠন করার ক্ষেত্রে অর্থ নেন, যেখানে তার টাকাপয়সা ঠিকমতো মেলে সেখানে কমিটি দ্রুততার সাথে হয়। 

সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রেও আর্থিক লেনদেনের বড় ধরনের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।যারা কমিটিতে জায়গা পাননি, তারা প্রকাশ্যে বলছেন যে, কে কত টাকা দিয়ে ছাত্র দলের নেতৃত্ব পেয়েছেন। অন্যান্য কমিটির ক্ষেত্রেও টাকা লেনদেনের কথা বিএনপিতে ওপেন সিক্রেট। তারেক জিয়ার কাছে টাকা পৌঁছলে বা তার এজেন্টের হাতে টাকা পৌঁছলে তারপর কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়, তার আগে নয়। এমনকি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য পদ লাভের জন্য ইকবাল মাহমুদ টুকু লন্ডনে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়েছেন এমন আলোচনা বিএনপির মধ্যে জোরেশোরেই হয়। 

বিএনপির অনেকেই মনে করেন যে, ইকবাল মাহমুদ টুকু এত বড় নেতা নন যে স্থায়ী কমিটিতে জায়গা পেতে হবে। বিশেষ করে আবদুল্লাহ আল নোমান, রুহুল কবির রিজভীর মত নেতৃত্বদের বাদ দিয়ে টুকুর স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়া ছিল বিস্ময়কর এবং সেই সময় সকলেই জানত যে, টাকার বিনিময়ে টুকু স্থায়ী কমিটির স্থায়ী পদ পেয়েছেন। যদিও স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়ার পর তিনি তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেননি বিএনপির জন্য।এবার স্থায়ী কমিটির পাঁচজন সদস্য পদ নিয়োগের ক্ষেত্রে বড় রকমের টাকার লেনদেন হবে বলে বিএনপির মধ্যে জোর আলোচনা হচ্ছে। বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন যে, যাদের টাকা আছে, তারা স্থায়ী কমিটিতে সদস্য হতে পারবেন। 

তারেক দুইভাবে টাকা নেন। একটি হল এককালীন টাকা। স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়ার জন্য ৫ কোটি বা ১০ কোটি ধার্য করা হবে এবং সেই টাকা তারেকের হাতে পৌঁছলে তারপর তিনি স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে কাউকে নিয়োগ দেবেন। আরেকটি হল নিয়মিত চুক্তি। যেমন স্থায়ী কমিটির অনেক সদস্যই আছেন, যারা নিয়মিতভাবে তারেক জিয়াকে অর্থ জোগান। যেমন- বিএনপির নেতা আমীর খসরু মাহমুদ তিনি তারেক জিয়ার অন্যতম অর্থ যোগানদাতা। তিনি নিজে ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে নিয়মিত অর্থ পাঠান। এমনকি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও নিয়মিত তারেককে মাসোহারা দেন বলে বিএনপির মধ্যেই গুঞ্জন রয়েছে। 

যারা তারেককে নিয়মিত মাসোহারা দিতে পারবেন তারাও স্থায়ী কমিটিতে জায়গা পাবেন। আর সে কারণেই বিএনপির মধ্যে যারা ধনাঢ্য ব্যক্তি আছেন তারাই স্থায়ী কমিটিতে আসবেন যদি শেষ পর্যন্ত স্থায়ী কমিটি পূরণ করা হয়। যদিও বিএনপির কিছু কিছু নেতা বলছেন, স্থায়ী কমিটি যেহেতু একটি স্পর্শকাতর জায়গায় সেজন্য শুধুমাত্র যে টাকা দিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়া যাবে এমন নয়। হয়তো পাঁচজন সদস্যের মধ্যে তিনজন হবেন টাকা দিয়ে আর বাকি দুইজন হবেন রাজনৈতিক যোগ্যতার বিবেচনায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭