ইনসাইড বাংলাদেশ

সমঅধিকারের পরেও কি প্রয়োজন নারী দিবসের!


প্রকাশ: 08/03/2024


Thumbnail

কোনো মানুষ যখন তার প্রাপ্য সম্মান, অধিকার থেকে দিনের পর দিন বঞ্চিত হতে থাকে, তখনই মানুষ প্রতিবাদ করতে চায়, রুখে দাঁড়াতে চায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং সেখান থেকে কথা ওঠে ন্যায্য অধিকার এবং সম্মানের। প্রয়োজন দেখা দেয় আলাদা করে দিবস উদযাপনের।

এরই ধারাবাহিকতায় লিঙ্গবৈষম্য দূর করে নারীর প্রতি সম্মান ও সমানাধিকারের বার্তা জানাতে প্রতিবছর ৮ই মার্চ বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করা হয়।

এবারের নারী দিবসে সবচেয়ে বেশি সম্মুখীন হওয়া একটি প্রশ্ন হলো- একবিংশ শতাব্দীর নারীরা পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে নেই কোন অংশেই। তারপরেও কি প্রয়োজন নারীদের দিবসের!!

ইতিহাস: দিনটি ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। ঘটনাস্থল যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহর। রাস্তায় নেমে এলেন সুতা কারখানার একদল নারী শ্রমিক। শ্রমিকদের নানা সুযোগ-সুবিধা, মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে তাদের এ প্রতিবাদ। দেশটির সরকার সেই মিছিলে লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন চালায়।

এরই জের ধরে, ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ এবং জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন।

এরপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন।

২০২৪ এ নারী দিবস:  বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় এখনো প্রতিটা নারী কোন না কোন ভাবে নির্যাতনের শিকার। তার মানে এই না যে, তারা শুধু পুরুষদের থেকেই নির্যাতিত হচ্ছেন। নারীরাই নারীদের অগ্ৰগতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, এখনো ৬০% মেয়ে চাকরি জীবনের শুরুতে মায়ের কাছ থেকেই প্রথম বাঁধাটা পেয়ে থাকে। তারপর খালা, চাচী, মামী নামক  আত্মীয়ের কথা তো বাদই দিলাম।

এরপর আসি শ্বশুরবাড়ির কথায়, বিয়ে পর ডানা কাটা পরে প্রায় ৮০% নারীর। শ্বশুরবাড়ির অনুমতি নিয়েই পরবর্তী সব কিছু করতে হবে এই ধারণা থেকে আমরা আজও বের হতে পারিনি।  এই ডানা কাটার ব্যবস্থা যত দিন থাকবে, তত দিন নারী দিবসের প্রাসঙ্গিকতা থাকবে।

ডানা কাটার পক্ষে যুক্তিধারী মানুষের সংখ্যা যত দিন ১০ জনে ৯ জন থাকবেন, তত দিন নারী দিবসের বদলে মানুষ দিবস করার সুযোগ ঘটবে না।

আর আপনি যদি হন ৯ জনের বাইরে থাকা ১ জন নারী বা পুরুষের প্রতিনিধিত্ব করা মানুষ, তবে আপনার  চারপাশের অসাম্যের বিরুদ্ধে আপনার সাধ্য অনুযায়ী কিছু করুন। আপনি জীবনসঙ্গী হলে সংসার আর সন্তান লালনপালনে কাজ ভাগ করে নিন, ভাই বা বোন হলে সম্পদে ন্যায্য অধিকারের ব্যবস্থা করুন, বাবা বা মা হলে সন্তানকে বলুন, কখনো কোনো পরিস্থিতিতে তার ডানা আপনি ছেঁটে দেবেন না। নারী বা পুরুষ হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে সম্মান করুন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭