ইনসাইড পলিটিক্স

পশ্চিমা দেশগুলো বিএনপিকে ‘অপেক্ষা’ করতে বলেছে


প্রকাশ: 08/03/2024


Thumbnail

নতুন করে সরকার বিরোধী আন্দোলনের যে পরিকল্পনা বিএনপি নিয়েছে তাতে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্মতি নেই। বরং পশ্চিমা দেশগুলো বিএনপিকে ধৈর্য ধরা এবং অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলো এখনই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিএনপিকে না যেতে বলা উপদেশ দিচ্ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর এ কারণেই বিএনপি যেমন একদিকে আন্দোলনের কর্মসূচি থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে দলের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। 

একাধিক সূত্র বলছে যে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপি আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা নিয়েছিল। বিশেষ করে বিএনপি ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি এবং বিভিন্ন দাবি দাওয়াতে হরতাল, অবরোধ ইত্যাদি কর্মসূচি তারা অব্যাহত রাখতে চেয়েছিল। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া ছিলেন এ ব্যাপারে আগ্রাসী। তিনি সরকারকে কোন ছাড় না দেওয়ার নীতিতে ছিলেন। কিন্তু দুটি কারণে বিএনপি সে অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে। 

প্রথমত, নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা এবং আগ্রহের অভাব। নেতাকর্মীরা ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নানা রকম চাপের মধ্যে ছিলেন এবং তাদের বহু নেতাকর্মী জেলে আটক অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। যারা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এড়াতে সক্ষম হয়েছেন তারাও পলাতক জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থায় বিএনপির পক্ষে বড় ধরনের আন্দোলনকে অব্যাহত রাখা সম্ভব নয় বলে বিএনপির নেতৃবৃন্দ সাফ জানিয়ে দিয়েছে। 

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে যে, নির্বাচনের পর পশ্চিমা দেশগুলোর যে সমস্ত কূটনীতিকদের সাথে বিএনপি কথা বলেছে তারা সবাই বিএনপিকে অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসে প্রথম সাক্ষাৎকারে বিএনপির সাথে। সেই বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে কোন পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও একাধিক সূত্র বলেছে যে, নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় এই সরকার গণতন্ত্র, সুশাসন, মানবাধিকারের জন্য কি করে, তাদের কার্যক্রমগুলো তারা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন, নির্যাতন ইত্যাদি বিষয়ে নতুন সরকার কতটুকু সহনশীল অবস্থা গ্রহণ করে, সেটিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষণ করতে চায়। তার আগে নতুন সরকারের ব্যাপারে কোন ধরনের নেতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে তাদের অনীহা রয়েছে। আর এই বার্তাটি ‘কূটনীতিক ভাষায়’ বিএনপিকে দেওয়া হয়েছে বলেও বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

এরপর থেকে বিএনপিতে হতাশা তৈরি হয়েছে। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নও বলেছে যে, একটি নির্বাচন যখন হয়ে গেছে, নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। যে ভাবেই হোক এই নতুন সরকারকে সময় দেওয়া দরকার এবং তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা দরকার। নতুন সরকার আইনের শাসন, মত প্রকাশের অধিকার এবং মানবাধিকার বিষয়ে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেটিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেখতে চায় বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বিশেষ করে ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠনের পর কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একদিকে যেমন বিএনপির আটক নেতাকর্মীদের ব্যাপারে সরকার উদার নীতি গ্রহণ করেছে অন্যদিকে এখন পর্যন্ত কোন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেনি। এ কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরও অপেক্ষার নীতি গ্রহণ করতে চায়। একই পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এ কারণেই বিএনপি এখন তাদের মূল আন্দোলন থেকে সরে এসেছে। আগামীকাল থেকে বিএনপি বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ইত্যাদি কারণে কর্মসূচি করবে এবং এই কর্মসূচিগুলো খুবই নমনীয় মামুলি কর্মসূচি। যে কর্মসূচিগুলো সরকারের ওপর কোন ধরনের চাপ ফেলবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭