ইনসাইড বাংলাদেশ

গ্রামীণ কল্যাণ নিয়ে ড. ইউনূসের লুকোচুরি ধরে ফেলেছে বিদেশিরা


প্রকাশ: 08/03/2024


Thumbnail

ড. ইউনূস গ্রামীণ কল্যাণ নিয়ে রীতিমতো নাটক করছেন। তিনি বলছেন যে, গ্রামীণ কল্যাণ তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে হাইকোর্ট গ্রামীণ কল্যাণকে ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১১৯ কোটি টাকা আয়কর পরিশোধের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এরকম আয়করের আরও কয়েকটি মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত আয়কর পরিশোধ বা অন্যান্য বিষয়কে ছাপিয়ে মূল প্রশ্ন যেটা আসে তা হল গ্রামীণ কল্যাণের মালিক আসলে কে? 

যদিও গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামীণ কল্যাণের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে আবার তা ছেড়ে দিয়েছে। গ্রামীণ কল্যাণের আওতাধীন গ্রামীণ টেলিকম ভবনের যে সাতটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল, সেই নিয়ন্ত্রণ তারা ছেড়ে দিয়েছেন। এখন প্রতিষ্ঠানগুলো চালাচ্ছেন ড. ইউনূস। প্রশ্ন হল গ্রামীণ কল্যাণ কার?

ড. ইউনূসের দাবি যদি সত্যি হয় যে, গ্রামীণ কল্যাণ তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান তাহলে এখানে গুরুতর আইনের ব্যত্যয় ঘটে। কারণ ড. ইউনূস ২০১১ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এবং আইন অনুযায়ী তিনি যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন সরকারি বেতনভুক্ত কর্মকর্তা ছিলেন। সরকারি একজন কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া বা সরকারের লিখিত অনুমোদন ছাড়া কোন ব্যবসা বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না। এটা চাকরিবিধির লঙ্ঘন এবং ফৌজদারি অপরাধ। তাই যদি হয় তাহলে গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান হিসেবে ড. ইউনূসের অবস্থান চাকরিবিধির লঙ্ঘন, প্রতারণা, জালিয়াতি।

আবার ড. ইউনূসের যে আয়কর বিবরণী হিসাব দেখা যাচ্ছে তাতে গ্রামীণ কল্যাণের জন্য তিনি অর্থ কোথায় পেয়েছেন সে সম্পর্কে কোন তথ্য নেই। গ্রামীণ কল্যাণের প্রধান অর্থ এসেছে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে। গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামীণ কল্যাণকে প্রাথমিক তহবিল হিসাবে ৬৯ কোটি টাকা দিয়েছিল। যেটি গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়। ওই বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান থাকবেন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে মনোনীত ব্যক্তি। সে হিসাবে ড. ইউনূসকে গ্রামীণ কল্যাণে চেয়ারম্যান করা হয়। এখন প্রশ্ন হল গ্রামীণ কল্যাণ কিভাবে ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান হয়। 

শুধু তাই নয়, প্রতারণার আরেকটি চাঞ্চল্যকর বিষয় হল যে, যখন ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বয়স শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে অপসারিত হন ঠিক তার পরপরই তিনি গ্রামীণ কল্যাণের বোর্ড সভা করেন এবং সেই বোর্ড সভায় গ্রামীণ ব্যাংকের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করেন। এই বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে যে একজন প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে, যিনি গ্রামীণ কল্যাণে চেয়ারম্যান হবেন সেই বিধানটি বাতিল করা হয়। এরকম বিধান গ্রামীণ কল্যাণ এককভাবে করতে পারে কিনা সেটিও দেখার বিষয়।

ড. ইউনূস যখন বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করছেন, সরকার তাকে হয়রানি করছে, সরকার তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে, সরকার তার প্রতি আক্রোশ বশত হয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, গ্রামীণ কল্যাণ তার প্রতিষ্ঠান তখন আন্তর্জাতিক মহল পুরো প্রক্রিয়াটি যাচাই বাছাই করছেন এবং তথ্যগুলো পর্যালোচনা করছেন। আর এই তথ্য পর্যালোচনা করতে গিয়ে ইউনুসের প্রতারণা এবং জালিয়াতি তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর এ কারণেই তারা ড. ইউনূস এবং গ্রামীণ কল্যাণের ব্যাপারে তাদের অবস্থান থেকে আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছেন অথবা নরম হচ্ছেন। 

পুরো বিষয়টি হল যে, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি প্রতারণামূলক ভাবে আত্মসাৎ করা এবং ড. ইউনূস একজন চৌকিস বক্তা এবং যে কোন বিষয় তিনি অকপটে গুছিয়ে মিথ্যা বলতে পারেন। আর এ কারণেই তিনি এখন গ্রামীণ কল্যাণ নিয়ে রীতিমতো নাটক করছেন। কিন্তু কাগজপত্র এবং অন্যান্য দলিল দস্ত্র কথা বলছে তার বিরুদ্ধে। গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে শিগগির গ্রামীণ টেলিকম সহ সাতটি প্রতিষ্ঠানের জন্য আদালতে যাওয়া হবে। এখন আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলছে। সেই আইনি লড়াই ড. ইউনূসের জন্য আরেকটি বিপর্যয় আনবে। তখন ড. ইউনূস কি বলবেন যে, তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল পশ্চিমা দেশেগুলো যারা কদিন আগেও ড. ইউনূসের ব্যাপারে খুবই সংবেদনশীল ছিলেন তারা এখন বুঝতে পারছেন ইউনূস যা কিছু করছেন সবকিছুই নিজের স্বার্থে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭