রাজধানীর বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনে নিহত গণমাধ্যমকর্মী অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ বাবার কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআিইডি)।
অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত বৃষ্টি খাতুনের প্রকৃত পরিচয় জানতে ডিএন-এর নমুনা পরীক্ষা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগ। ঘটনার ১১ দিন পর নিহতের বাবার দাবির সত্যতা মেলায় বৃষ্টির মরদেহ পরিবারকে দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে ওই নারী সাংবাদিকদের মরদেহ হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর। বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ডিএনএ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মরদেহ নিয়ে কুষ্টিয়ার খোকসায় নিজ গ্রামের বাড়িতে বৃষ্টি খাতুনকে দাফন করা হবে বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। সেই আগুনে নিহত ওই নারী সাংবাদিক ফেইসবুক ও কর্মস্থলে নিজেকে পরিচয় দিতেন অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে।
তার মৃত্যুর পর বাবা, ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা এসে দাবি করেছেন, আগুনে নিহত সাংবাদিকের নাম বৃষ্টি খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায়।
ঘটনার পর অভিশ্রুতির পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করা হয়েছে বলে তখন জানান রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা।
তিনি বলেন, অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় নিশ্চিত করতে রমনা থানা ওসি ও ঢাকা জেলা প্রশাসক বরাবর রমনা মন্দির থেকে আবেদন করা হয়েছে।
এই অবস্থার মধ্যে ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করে নিহতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে উদ্যোগ নেয় পুলিশ। গত ১১ দিন বৃষ্টির মরদেহ থাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের মর্গে।
অবশেষে সেই পরীক্ষায় জানা যায়, অভিশ্রুতি মূলত কুষ্টিয়ার সবুজ শেখ দম্পতির সন্তান বৃষ্টি খাতুন।
বৃষ্টি কাজ করতেন দা রিপোর্ট ডট লাইভ-এ। তার সিভি ও জন্ম সনদেও লেখা অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়েই মরদেহ নিতে খোকসা থেকে ছুটে আসেন তার বাবা সাবরুল আলম সবুজ। তিনি বলেন, জন্ম নিবন্ধনসহ সর্বত্র তার নাম বৃষ্টি।
ওই নারী সাংবাদিকের জন্ম নিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, চাকরির জন্মবৃত্তান্তে বাবা-মায়ের নামে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া যায়। স্থায়ী ঠিকানা সব জায়গায় একই।
আর এতেই বৃষ্টির মৃত্যুর পর প্রকৃত পরিচয় নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। তাই তার মরদেহ হস্তান্তর না করে ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করে সিআইডি।