ইনসাইড বাংলাদেশ

তোফায়েল আহমেদের ধারেকাছেও নয়, তবে টিপু মুনশির চেয়ে ভালো


প্রকাশ: 12/03/2024


Thumbnail

পবিত্র রমজান শুরু হয়েছে। রমজানের প্রথম দিন থেকে বাজারে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন দামে বেসামাল সাধারণ মানুষ। এরপরও মানুষ কেনাকাটা করছে। বিভিন্ন জায়গায় স্বল্প মূল্যে বা সাশ্রয়ী মূল্যে মাংস, ডিম, দুধ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ করা হচ্ছে বলে কিছু কিছু মানুষ স্বস্তিতে আছে। এছাড়া টিসিবির ভ্রাম্যমাণ বিপণন মানুষ কিছু স্বস্তি পাচ্ছে। তবে সবকিছু মিলিয়ে বাজারের অবস্থা নাজুক এবং সবকিছুর দাম লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি মানুষকে অসহনীয় অবস্থার মধ্যে ফেলেছে। কিন্তু এই অবস্থার মধ্যেও নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুকে সবাই নাকচ করে দিচ্ছেন না। বরং টিটুর গত দুই মাসের কর্মকাণ্ডকে অনেকেই ইতিবাচক বলছেন।

আহসানুল ইসলাম টিটু বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন জানুয়ারির ১১ তারিখে। দুই মাস দায়িত্ব গ্রহণের সময় তিনি একটি দৃশ্যমান চেষ্টা করেছেন বাজার নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। আর এ কারণেই সাধারণ জনগণ টিটুর সম্বন্ধে যেটা বলছেন তা হল তোফায়েল আহমেদের ধারেকাছেও তিনি নন বটে। তবে টিপু মুনশির চেয়ে অনেক ভাল বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন এই তরুণ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে সফল মন্ত্রী হিসেবে মনে করা হয় তোফায়েল আহমেদকে। তিনি দুই দফায় বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং দুই দফার কোন বারই জিনিস পত্রের দাম নিয়ে কোন রকমের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। দ্রব্যমূল্য ছিল সহনীয় পর্যায়ে। এমনকি রমজানের সময়ে জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বগতি না ঘটা ছিল একটা বিরল বিস্ময়। 

তোফায়েল আহমেদ জাদরেল রাজনৈতিক নেতা। তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংকটে ব্যবসায়ীদেরকে ডেকে আনতেন এবং তাদের সাথে বৈঠক করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেন। বাজারের ওপর বাড়তি কোন চাপ সৃষ্টি করতেন না। হুমকি ধামকি দিতেন না। বরং একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সহমর্মিতার মাধ্যমে তিনি বাজার ব্যবস্থাপনায় একটি পারস্পরিক বিশ্বাস এবং আস্থার সম্পর্কের জায়গা তৈরি করেছিলেন। 

বাণিজ্যমন্ত্রী হিসাবে জি এম কাদেরও কম অসফল না। জি এম কাদের ২০০৯ মেয়াদে অর্ধেকের বেশি সময় বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেই সময় তিনি বাজার ব্যবস্থাকে একটা শৃংখলার মধ্যে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। তবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্যতম বাণিজ্যমন্ত্রী মনে করা হয় টিপু মুনশিকে। ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তিনি বাজার ব্যবস্থাপনাকে শুধু ছিন্নভিন্ন করেননি, বেসামাল লাগামহীন কথাবার্তা বলে তিনি একটি অসহনীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলেন। যে জঞ্জাল এখন পরিষ্কার করতে হচ্ছে তরুণ এই প্রতিমন্ত্রীকে। 

টিপু মুনশি একদিকে যেমন বেসামাল কথাবার্তা বলতেন এবং তিনি কি বলেছেন, না বলেছেন তার কোন ঠিক ঠিকানা থাকত না, অন্যদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে তার সমস্ত পদ্ধতি ছিল ভুল। আর এই কারণে বাজার চলে গিয়েছিল সিন্ডিকেটের হাতে। তাছাড়া বাজার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তিনি আমলাদের হাতে ছেড়ে দিয়েছিলেন। তার নিজের তদারকি বা মনিটরিং এর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল খুবই পরিত্যক্ত এবং দুর্বল। সেদিক থেকে আহসানুল ইসলাম টিটু অনেক ভালো। তিনি কথা কম বলছেন, প্রয়োজনের বাইরে কথা বলছেন না। বেসামাল কথাবার্তা একেবারেই বলছেন না। সবচেয়ে বড় কথা হলো তিনি শুধু আমলাদের ওপর নির্ভর করছেন না। তোফায়েল আহমেদকে অনুসরণ করে বাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে বৈঠক করছেন। তবে সকলে মনে করেন যে, এখন তরুণের হাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ছেড়ে দেওয়াটা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। তার সাথে যদি একজন সিনিয়র মন্ত্রীকে দেওয়া হতো তাহলে পরে একদিকে যেমন আহসানুল ইসলাম টিটু শিখতে পারতেন তেমনি বাজারও মানুষের সহনীয় সীমার মধ্যে আসতে পারতো।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭