ইনসাইড পলিটিক্স

যূথীকে নিয়ে উভয় সংকটে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 13/03/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগে উভয় সংকটে পড়েছে। মামলার প্রধান আসামি নাহিদ সুলতানা যূথীকে এখন পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আবার তাকে গ্রেপ্তার না করার ফলে অন্যান্য আসামিদের বিচার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যূথীকে গ্রেপ্তার করা হবে কি হবে না এ নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যানের স্ত্রী নাহিদ সুলতানা যুথী। তবে তার নিজের পরিচয়ও রয়েছে। তিনি একজন আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টে তাকে প্রভাবশালী সরকারপন্থি আইনজীবী হিসেবে মনে করা হয়। 

এবার তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি প্যানেলের সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামীপন্থি প্যানেলের যারা নিয়ন্ত্রক তারা নাহিদ সুলতানা যুথীকে মনোনয়ন দেননি। যারা এই প্যানেল মনোনয়ন করেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন শেখ ফজলে শামস পরশের ছোট ভাই শেখ ফজলে নূর তাপস। 

শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রও বটে। এর আগেও তিনি যূথীকে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বীতা থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। এবার অবশ্য পরশের স্ত্রী সেটি মেনে নেননি। না নিয়ে তিনি নিজেই স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে প্রার্থী হন এবং এবার নির্বাচনের ভোটের দিন রাতের বেলা সদলবলে চলে যান নির্বাচন কমিশনে এবং ভোট গণনার স্থানে। সেখানে গিয়ে তিনি জোর করে তাকে নির্বাচিত ঘোষণার দাবি জানান এবং সেই দাবি হাঁসিল করেও ছাড়েন। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি সরকারের হাইকমান্ডের কাছে যাওয়ার পর সরকারের নীতি নির্ধারক মহল এই বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। এরপরই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নড়েচড়ে বসে। 

এর আগে যখন সুপ্রিম কোর্টে যূথী এবং তার সমর্থকরা লঙ্কা কাণ্ড ঘটাচ্ছিলেন, তখন কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছিল। তারা কোন ব্যবস্থাই নেননি। যখন এ ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে কঠোর বার্তা ঘোষণা করা হল, তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঘুম ভাঙ্গে এবং তারা এই ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি মামলা গ্রহণ করে, যে মামলার প্রধান আসামি নাহিদ সুলতানা যুথী। কিন্তু মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করা হলেও বিশেষ করে বিএনপিপন্থি প্যানেলের সম্পাদক পদপ্রার্থী কাজলকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত যূথীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যূথীকে গ্রেপ্তার না করা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। 

বিভিন্ন মহল মনে করছেন যে, যূথীকে আসলে শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হবে না। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বা তার বাসায় অভিযান স্রেফ আইওয়াশ। তবে কোন কোন মহল বলছেন যে, সর্বোচ্চ মহল এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নেবে। যূথীকে গ্রেপ্তার করা না করা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে সংকট তৈরি হয়েছে। যূথীকে নিয়েও তৈরি হচ্ছে উভয় সংকট। তার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত নেবে তা নিয়ে চলছে দ্বিধাবিভক্তি।

কোন কোন মহল মনে করছেন যে, বিষয়টিকে আর গড়াতে দেওয়া উচিত না। এটা যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের বিষয়, উভয় পক্ষ মিলে মিশে একটি সম্মানজনক সমঝোতা দরকার এবং তাহলে পরে সে ক্ষেত্রে যূথীর আর গ্রেপ্তার হওয়ার শঙ্কা থাকে না। আবার কেউ কেউ বলছেন যে, এটি অমাজর্নীয় অপরাধ। কাজেই এই ঘটনা থেকে মুুক্তির একটাই পথ। তা হল আইনের সঠিক এবং যথাযথ প্রয়োগ। এরকম বাস্তবতায় শেষ পর্যন্ত যূথীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা বা যূথীর রাজনৈতিক ভবিষ্যত কি তা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরাই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এই ঘটনায় কিছু স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে। যূথীর বিরুদ্ধে ইতিবাচক নেতিবাচক দুটোর যে কোন একটির সিদ্ধান্ত নেয়া হলে তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে আওয়ামী লীগে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭