এডিটর’স মাইন্ড

প্রশাসনে শীর্ষ দুই পদ নিয়ে ‘টাগ অব ওয়ার’


প্রকাশ: 13/03/2024


Thumbnail

প্রশাসনের শীর্ষ দুই পদ শূন্য হচ্ছে চলতি বছরেই। প্রশাসনের শীর্ষ পদ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর অবসরে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন। তার চুক্তির মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না বলেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব কে হবেন—এ নিয়ে এখন প্রশাসনের মধ্যে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। তবে এই আলাপ আলোচনায় সবচেয়ে এগিয়ে আছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্‌ উদ্দিন চৌধুরী। মোহাম্মদ মেজবাহ্‌ উদ্দিন চৌধুরী মন্ত্রিপরিষদ সচিব অবসরে গেলে জ্যেষ্ঠতম সরকারি কর্মকর্তা হন। তবে তার চাকরির মেয়াদ আছে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কাজেই তিনি দুমাসের জন্য এই মাহবুব হোসেনের পদে যেতে পারেন। এরপর বিবেচনার বিষয় হবে যে, সরকার তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেবে কি দেবে না। 

এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার দু রকম নীতি অনুসরণ করেছে। এর আগে কবির বিন আনোয়ার মাত্র ১৪ দিনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অন্যদিকে বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং তার আগের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন। তবে যেহেতু এখানে জ্যেষ্ঠতার নীতি সরকার কঠোরভাবে অনুসরণ করে কাজেই মেজবাহ্‌ উদ্দিন চৌধুরী যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হতে যাচ্ছেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত। যদি না মাহবুব হোসেনকে আবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দেওয়া হয়।

অন্য যে পদটি নিয়ে বেশি আলোচনা এবং তোলপাড় হচ্ছে, সেটি হল কেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে বর্তমানে যিনি আছেন, তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে ৫ জুলাই। তিনি আবার নতুন করে মুখ্য সচিব হিসেবে নিয়োগ পাবেন কিনা সেটি নিয়ে যেমন আলোচনা আছে তেমনই আলোচনা আছে যে তাকে হয়তো আর নতুন করে নিয়োগ দেয়া হবে না। বরং সেখানে নতুন কাউকে মুখ্য সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। 

মুখ্যসচিব হিসেবে কে নিয়োগ দিতে পারেন—তা নিয়ে রীতিমতো একটা টাগ অব ওয়ার চলছে। একাধিক প্রশাসনের উচ্চ পদে আসীন কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী। যেহেতু এটি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মতো নয়, এখানে জ্যেষ্ঠতার নীতি অনুসরণ করা হয় না। বরং দেখা হয় যে, প্রধানমন্ত্রী কাকে পছন্দ করছেন বা প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব ইচ্ছা অনিচ্ছার বিষয়টি যেহেতু এখানে মুখ্য হয়ে ওঠে, সে কারণেই এই পদটির জন্য অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তারা বিভিন্ন জায়গায় দেন দরবারও শুরু করে দিয়েছেন। একাধিক ব্যক্তি এই নিয়ে আলোচনায় আছেন। 

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব হিসেবে যাদের নাম আলোচনায় আছে বা যাদের নাম আলোচনা হচ্ছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছে প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এর নাম। তিনি যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, সেহেতু তার মুখ্য সচিব হিসেবে পদোন্নতির জায়গা নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে কোন কোন মহল মনে করছেন।

তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব হিসেবে থাকলেও তিনি ১৩ তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তার আগে অন্তত দুটি ম্যাচ আছে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী জ্যেষ্ঠতার বিষয়টি যদি বিবেচনা করেন তাহলে মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন মুখ্য সচিব নাও হতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে জ্যেষ্ঠতার বিচার যদি করা হয় তাহলে নৌ পরিবহন সচিব মোস্তফা কামাল এগিয়ে থাকেন। মোস্তফা কামাল দশম ব্যাচের কর্মকর্তা। তার চাকরির মেয়াদ আছে আগামী বছরের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে মোস্তফা কামাল এর একই ব্যাচে রয়েছেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা। জাকিয়া সুলতানার চাকরি শেষ হবে ২০২৭ সালের পহেলা জানুয়ারি। তিনি জ্যেষ্ঠতার বিচারেরও মোস্তফা কামাল এর চেয়ে পিছিয়ে। এ কারণে হয়তো  মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন অথবা মোস্তফা কামাল এর মধ্যে কেউ একজন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হতে পারেন। তবে আরও কয়েকজন আছেন যারা মুখ্য সচিব হতে আগ্রহী।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭