ইনসাইড পলিটিক্স

কোন্দল ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে আওয়ামী লীগে


প্রকাশ: 14/03/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এখন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই কোন্দলকে কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। এই কোন্দলের মধ্যে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা যারা মাঠের রাজনীতি করেন, সাংগঠনিক তৎপরতা করেন তারা নিজের হাত পা গুটিয়ে রেখেছেন। ফলে এখন কিছুতেইে কোন্দল থামানো যাচ্ছে না। আর সামনে উপজেলা নির্বাচনে এই কোন্দল মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। 

বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতারা রমজান মাস উপলক্ষে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছেন। দুই পক্ষ একে অন্যের বিরুদ্ধে এখন প্রকাশ্যে বিষোদগার শুরু করেছেন। তারা এক পক্ষ অন্য পক্ষকে কুৎসিত নোংরা ভাষায় আক্রমণ করছেন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সারাদেশে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য যে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে থেকেই আওয়ামী লীগের ভেতরে বিভক্তি এবং কোন্দল বেড়ে গিয়েছিল। এই সময় আওয়ামী লীগে যারা মনোনয়ন পেয়েছিল তাদের সাথে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ পদবিধারী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরোধ এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটে। 

অনেকেই মনে করেছিলেন যে, নির্বাচনের পর এই সহিংসতা বন্ধ হবে। কিন্তু নির্বাচনী সহিংসতা এমন এক ধরনের যুদ্ধ যেটি  যুগ যুগ ধরে চলে। এখন আওয়ামী লীগকে সেই ভার বহন করতে হচ্ছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একাধিক বার বিভিন্ন ভাবে বলা হয়েছে যে, যেন বিরোধগুলো মীমাংসার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু সেই বিরোধের মীমাংসার জন্য কেউই আসলে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। 

আওয়ামী লীগের মূল সমস্যা দাঁড়িয়েছে ৭ জানুয়ারির পর যে মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে, সেই মন্ত্রিসভায় মাঠের নেতারা জায়গা পাননি। বিশেষ করে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মাঠে যারা জনপ্রিয় তারা মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি। ফলে স্বাভাবিক ভাবে তাদের মধ্যে একটি হতাশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই হতাশা থেকে তারা রাজনীতিতে নিজেদেরকে কম সময় দিচ্ছেন এবং দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মীমাংসায় উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না। 

অবশ্যই সমস্ত জনপ্রিয় নেতাদের পক্ষ থেকে অন্য ধরনের কথা বলা হচ্ছে। তারা বলছেন, মাঠের নেতারা এখন মন্ত্রী ছাড়া নেতাদের কথায় খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেন না। তারা মন্ত্রীদের কথা শুনতে চান। অথচ মন্ত্রীরা কোন্দল নিরসনে কোনো  তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করছে না। ফলে মাঠে যখন কোন্দল নিরসনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ভূমিকা নেওয়ার কথা, তারা সেই ভূমিকা নিতে পারছেন না। 

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের যারা এমপি হয়েছেন দলীয় প্রতীকে, তারা এখন স্বতন্ত্রদের নির্মূল করার অভিযানে নেমেছেন। আবার স্বতন্ত্রদের যারা আওয়ামী লীগকে টেক্কা দিয়ে এমপি হয়েছেন, তাদেরকে কোণঠাসা করার জন্য পরাজিত প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন। যেমন, বরিশালের কথাই যদি ধরা যায় পঙ্কজ দেবনাথ সেখানে বিজয়ী হয়েছেন। শাম্মী নারী কোটায় এমপি হয়ে নির্বাচনে জনগণ ভোট দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের এ সমস্ত মন্তব্য আওয়ামী লীগকেই শুধু বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলছে না, দলকে চিরস্থায়ী বিভক্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এরকম সব জায়গায় আওয়ামী লীগের বিরোধ এখন স্থায়ী রূপ নিয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে এই বিরোধ মীমাংসা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। পাশাপাশি উপজেলা নির্বাচন উন্মূক্ত করে দেওয়ার ফলে এখন যে যার মত করে প্রার্থী হচ্ছেন। এটি স্বতন্ত্র এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে শক্তি পরীক্ষার একটা বড় ধরনের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। এই শক্তি পরীক্ষা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের কোন্দল ভয়াবহ রূপ নিতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭