ইনসাইড পলিটিক্স

আবারও বেগম জিয়ার বিদেশে যাওয়ার গুঞ্জন


প্রকাশ: 14/03/2024


Thumbnail

গতকাল বেগম জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাকে সিসিইউতে রাখা হয়েছিল। আজ সন্ধ্যায় বেগম খালেদা জিয়াকে আবার ফিরোজার বাসভবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল রয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি কোনো জটিলতায় আক্রান্ত নন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা স্বীকার করেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাভাবিক পরীক্ষার অংশ হিসেবেই এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিন্তু তারপরও আবার নতুন করে বেগম জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর জন্য চেষ্টা তদবির শুরু হয়েছে। 

বেগম খালেদা জিয়া দুটি মামলায় দণ্ডিত। এই দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে তিনি২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারিতে কারান্তরীণ হয়ে যান। প্রায় দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর ২০২০ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে বেগম খালেদা জিয়াকে বিশেষ বিবেচনায় দুই শর্তে জামিন দেওয়া হয়। এই শর্তগুলোর মধ্যে ছিল তিনি বাড়িতে থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং চিকিৎসা ছাড়া অন্য কোনো কর্মকাণ্ড করবে না। এই শর্তের জন্যই বেগম খালেদা জিয়া নিজেকে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে রেখেছেন। কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি অংশগ্রহণ করছেন না। আর এর আগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তার ভাই শামীম ইস্কান্দার এবং বোন সেলিমা ইসলাম গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুনয় বিনয় করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা প্রয়োগ করে তাকে বিশেষ বিবেচনায় জামিন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। সেখান থেকে প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর জামিন বৃদ্ধি করে বেগম জিয়া এখন পর্যন্ত ফিরোজা আছেন। 

বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা মাঝখানে অবনতি হয়েছিল। এসময় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু যেহেতু তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ অনুযায়ী ইতোমধ্যে জামিন পেয়েছেন, কাজেই তার বিদেশে যাওয়ার আবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে আইন মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ লক্ষ করা গিয়েছিল। বিএনপি নেতারা বলেছিল, বেগম খালেদা জিয়া মরণাপন্ন, তিনি যে কোন সময় মারা যেতে পারেন। তার প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেল বেগম খালেদা জিয়া মোটামুটি সুস্থই আছেন। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরে গিয়ে একটু জটিলতা মুক্ত জীবন যাপন করছেন। 

তবে নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর কোন কোন মহল আবার নতুন করে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেন দরবার করছেন। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার আবার নতুন করে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই মার্চে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদের ছয় মাস শেষ হবে। এই সময়ে নতুন করে বেগম খালেদা জিয়ার আবেদনে তার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হচ্ছে। 

তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয়নি। সরকার মনে করছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার যে শারীরিক অবস্থা তাতে তার এখন বিদেশ যাওয়ার কোন দরকার নেই। তাছাড়া বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে, আদালতের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করতে পারেন। তবে বেগম জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে বিষয়টি তুলতে চাচ্ছেন না। কারণ আদালত যদি একবার না বলেন তাহলে তাদের সকল দরজাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এ কারণেই আপীল বিভাগে বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলার শুনানিও বিএনপির আইনজীবীরা এগোতে দিচ্ছেন না। আরেকটি মামলা হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার এখন যে অবস্থা সরকারের করুণা এবং সরকারের ছাড় দেওয়া ছাড়া তার আর কোন আশ্রয়স্থল বলে কিছু নেই। এখন দেখার বিষয় সরকার আবার বেগম খালেদা জিয়াকে নতুন করে জামিন দেয় কিনা এবং বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয় কিনা।

সরকারের সূত্রগুলো বলছে, বেগম খালেদা জিয়ার আরও ছয় মাস জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হবে। কিন্তু তার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে সরকার আগের অবস্থান থেকে সরে আসেনি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭