ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতারা নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন


প্রকাশ: 15/03/2024


Thumbnail

নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের অনেক জনপ্রিয় নেতা নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। তাদেরকে শুধুমাত্র রুটিন রাজনৈতিক কর্মসূচি গুলোতে দেখা যাচ্ছে, সাংগঠনিক বিষয়ে আগের মতো তৎপর নন। দলের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণী ফোরামে তাদেরকে নিথর নীরব দেখা যাচ্ছে। 

বিভিন্ন মহল মনে করছে, অনেকেই হতাশা থেকে হয়তো নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। আবার অনেকে মনে করছেন যে, সংগঠনের যে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়েছে সেখান থেকে উদ্ধারের কোন পথ না পেয়ে তারা হাত পা গুটিয়ে বসে আছেন। এরকম পরিস্থিতিতে দল যাদের ওপর নির্ভরশীল তারা নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকায় সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। 

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সময়ে যারা গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং যাদের সাথে কর্মীদের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে, কর্মীরা যাদেরকে পছন্দ করে, কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে যাদের প্রভাব রয়েছে এরকম অনেক নেতাকে এখন রুটিন কর্মকান্ডের বাইরে সাংগঠনিক তৎপরতায় একেবারেই দেখা যাচ্ছে না। এদের মধ্যে রয়েছেন;

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া: মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, একজন ভালো সংগঠক হিসেবে স্বীকৃত ও প্রশংসিত। তিনি আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য। এক সময় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ তিনি এবং প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলে গুছিয়ে ছিলেন। তার সাংগঠনিক দক্ষতা এবং কর্মীদের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নিয়ে কোনরকম সংশয় সন্দেহ নেই। কিন্তু মায়াকে সাম্প্রতিক কালে নিষ্পৃহ দেখা যাচ্ছে। তিনি দলীয় কর্মকাণ্ডে খুব একটা উৎসাহী নন। তার বিপুল পরিমাণ কর্মী এবং সমর্থক থাকলেও তাকে আগের মতো উদ্যোমী লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এবার মন্ত্রিসভায় তার মন্ত্রী থাকার গুঞ্জন ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দু দফায় গঠিত মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি এই তুখোড় সংগঠকের। আর এ কারণেই কি অভিমান করে তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন? এই প্রশ্ন অনেকের। 

মাহবুবউল আলম হানিফ: মাহবুবউল আলম হানিফ সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাদের অন্যতম। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হলেও তিনি একজন কর্মীবান্ধব নেতা এবং কর্মীদের সঙ্গে নিবিড় এবং সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার জন্য তিনি আলোচিত ও প্রশংসিত। মাহবুবউল আলম হানিফ কর্মীদের একটা আস্থার জায়গায় পরিণত হয়েছেন। কিন্তু ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর মাহবুবউল আলম হানিফকেও আগের মতো তৎপর দেখা যাচ্ছে না। তিনি দলীয় কর্মসূচিগুলোতে নিয়মিত উপস্থিত হচ্ছেন। কিন্তু সংগঠনের জন্য তার যে উৎকণ্ঠা বা স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজ করার প্রবণতা সেটা এখন আগের মতো নেই বলেই অনেকে মনে করছেন। মাহবুবউল আলম হানিফ হলেন আওয়ামী লীগের সেই বিরল নেতা, যিনি একবারও মন্ত্রী হতে পারেননি। ২০০৯ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হয়েছিলেন। এরপর থেকে আর তিনি ক্ষমতা কেন্দ্রের নেই। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থাকা মাহবুবউল আলম হানিফ এর এবার পদাবন্নতি হয়েছে। তিনি প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে এখন দ্বিতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকে পরিণত হয়েছেন। এসব কারণেই কি অভিমান করে তিনি নিজেকে আস্তে আস্তে গুটিয়ে নিচ্ছেন? আওয়ামী লীগের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। কর্মীদের কাছে তার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। এই অবস্থায় তার গুটিয়ে নেওয়াটাকে অনেক নেতাকর্মী হতাশাজনক বলে মন্তব্য করছেন।

মির্জা আজম: আওয়ামী লীগের তুখোড় জনপ্রিয় নেতা মির্জা আজম। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হলেও আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রাণভোমরা মনে করা হয় এই তরুণ নেতাকে। সাত বারের সংসদ সদস্য মির্জা আজম ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত। ঢাকা বিভাগের সম্পাদক হলেও সারা দেশের কর্মীরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আওয়ামী লীগের যে কয়েকজন নেতার বাসভবনে বিপুল নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় তার মধ্যে মির্জা আজম অন্যতম। যুবলীগ থেকে বেড়ে উঠা আওয়ামী লীগের এই কর্মীবান্ধব নেতাকেও এখন অনেক ম্লান ম্রিয়মান দেখা যাচ্ছে। সংগঠনে আগের মত তিনি সপ্রতিভ নন। সাত বারের এমপি হয়ে তিনি একবার শুধু প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। এই অভিমান থেকেই তিনি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে তার উপস্থিতি আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭