ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির চেয়েও বড় বিএনপি তারা কিন্তু...


প্রকাশ: 15/03/2024


Thumbnail

বিএনপির চেয়েও বড় বিএনপি হিসাবে তারা আবির্ভূত হওয়ার চেষ্টা করছেন। বিএনপির চেয়েও বেশি কট্টর অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তারেক জিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখাচ্ছেন বিএনপি নেতাদের চেয়েও বেশি। চাটুকারিতা করছেন সারাদিন ব্যাপী কিন্তু তারপরও তাদের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারছে না বিএনপির হাই কমান্ড। বিএনপির সঙ্গে জোট করতে আগ্রহী কিছু নেতা এতই খড়কুটোর মতো এবং অস্তিত্বহীন পরগাছায় পরিণত হয়েছেন যে, তারা এখন বিএনপিকে যেকোনো মূল্যে তোষণ এবং বিএনপির আশ্রয়লাভের জন্য যা খুশি সব কিছু করতে প্রস্তুত। এ কারণে তারা তাদের নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্বকে এই বিকিয়ে দিচ্ছেন। 

বিএনপি এখন আনুষ্ঠানিক কোন জোটে নেই। ২০ দলীয় জোটের মৃত্যু হয়েছে বলে বিএনপি নেতারা ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে বিএনপি যে সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে লাগাতার কয়েক দফা বৈঠক করেছিল তাদের সাথে কোন আনুষ্ঠানিক জোট করেনি। বরং তাদেরকে পাশে রেখে বিএনপি নির্বাচনের আগে যৌথ আন্দোলন করেছিল। যদিও সেই আন্দোলনের ফলাফল ছিল শূন্য। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে নির্বাচনের পর জোট সঙ্গীদের পরামর্শ হচ্ছে নতুন করে আন্দোলন শুরু করা। কিন্তু সেই আন্দোলনও বিএনপি শুরু করতে ইতস্তত করছে। বিএনপির মধ্যে সাংগঠনিক সমস্যা যেমন তীব্র, তেমনি আন্দোলনের কৌশল নিয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য প্রবল। এরকম অবস্থায় বিএনপি না পারছে আন্দোলন করতে, না পারছে সংগঠন গোছাতে। দলের মধ্যে হতাশা দানা বেঁধে উঠেছে। 

বিএনপি যখন নিজেই এখন অস্তিত্বের সঙ্কটে সেই সময় বিএনপিকে আরও বেশি উৎসাহ দিচ্ছে, বিএনপিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করছে তার জোটে যুক্ত হতে আগ্রহী নামসর্বস্ব পকেট রাজনৈতিক দলগুলো। এই রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা জানে যে, বিএনপি যদি ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ তাদের না আছে কর্মী, না আছে সমর্থক। তারা রাজনীতিতে একেবারে পরগাছা, অস্তিত্ববিহীন শেকড়হীন। আর এই কারণেই তারা এখন বিএনপির চেয়ে বড় বিএনপি সাজার চেষ্টা করছে। বিএনপির হতাশা দূর করার জন্য তারাই যেন মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। এরকম নেতাদের মধ্যে রয়েছেন;

মাহমুদুর রহমান মান্না: মাহমুদুর রহমান মান্না নাগরিক ঐক্যের একজন নেতা। তার বক্তব্য এখন এত বেশি অতিরঞ্জিত এবং বাস্তবতা বিবর্জিত যে, বিএনপির লোকজনও তার বক্তব্য শুনে হাসে। তিনি যখন বলেন যে, সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই বা সরকার পড়ে যাবে, তখন বিএনপি নেতারা তাকে উপহাস করেন। তিনি বিএনপিতে এখন কৌতুকের পাত্র হয়েছেন। নিজে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য বিএনপিকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তারেক জিয়াকে তৈলমর্দন করে মাহমুদুর রহমান মান্না তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের অন্তিম লগ্নে এসে দাঁড়িয়েছেন বলে জানা গেছে। ব্যক্তিত্বহীন প্রগলভ একজন শেকড়হীন রাজনীতিবিদের কি করুণ পরিণতি হয় মাহমুদুর রহমান মান্না তার প্রমাণ।

জোনায়েদ সাকি: জোনায়েদ সাকি আরেকজন পরগাছা। আদর্শহীন, বিভ্রান্ত, উদ্বাস্তু রাজনীতিবিদ। রোহিঙ্গাদেরও একটি ঠিকানা আছে, কিন্তু জোনায়েদ সাকির মত উদ্বাস্তু রাজনীতিবিদের কোন রাজনৈতিক ঠিকানা নেই। আর এই কারণেই তারা  বিএনপির চেয়ে বড় বিএনপি হয়ে রাজনীতিতে কোন ভাবে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর বিএনপির ভুল ত্রুটি তার চোখে পড়ে না। বিএনপির ব্যর্থতা তিনি দেখেন না। বিএনপি যা বলতে পারে না, সেটি বলেন জোনায়েদ সাকি। একদা চৈনিক বাম নেতা এখন বিএনপির কর্মীদের কাছে বিরক্তির কারণ।

কনের্ল অলি আহমেদ: বিএনপি থেকে বিচ্যুত কনের্ল অলি আহমেদ বিএনপিতে ফিরে আসার জন্য বহুরকম ভাবে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিএনপি তাকে বিশ্বাস করে না। তারেক জিয়া তাকে বিশ্বাস করে না। কিন্তু তাতে কি! তিনি এখন বিএনপির চেয়েও বড় বিএনপি। বিএনপির ভবিষ্যত কি এবং কিভাবে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে তা নিয়ে তিনি নানারকম জ্ঞানগর্ব বক্তৃতা দেন। তার বক্তব্য বিএনপি নেতাদের কাছে একট উৎকর চিৎকারের মত মনে হয়। বিএনপির নেতারা তাকে বিশ্বাস করেন না। ভবিষ্যতে হালুয়া রুটি পাওয়া জন্য তিনি বিএনপির বন্দনা করেন। যে তারেক জিয়া তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বিএনপি থেকে বের করে দিয়েছেন সেই তারেক জিয়ার স্তুতি এবং পদ্যলেহন করে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি ব্যক্তিত্বহীন এক কৌতুক অভিনেতা হচ্ছেন। এরকম আরও কিছু বিএনপির চেয়েও বড় বিএনপি নেতা আছেন যারা রাজনীতিতে এখন এক ধরনের পরগাছা এবং রাজনীতিতে তারা শুধুমাত্র করুণার পাত্র।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭