প্রকাশ: 16/03/2024
রমজান মাসে খাওয়া-দাওয়ার ধুম পড়ে যায় আমাদের দেশে। রোজায় প্রতিদিনের খাবারের মেন্যুতে আসে ভিন্নতা, তার সঙ্গে সময়ের ব্যবধান তো রয়েছেই। আপাতদৃষ্টিতে অনেকেরই মনে হতে পারে, রোজায় ১৪-১৫ ঘণ্টা না খেয়ে থেকে স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে। তাই ইফতারে বেশি খাওয়া ভালো।
কিন্তু রোজায় খাবারের বিরতি কম হওয়ায় প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাওয়া হয়ে যায়। তবে দৈনিক চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখেই খাদ্য নির্বাচন করা দরকার। রোজা পালনের জন্য প্রয়োজন সঠিক ডায়েট নির্বাচন, শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শক্তি এবং অদম্য ইচ্ছা ও আনুগত্য। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, কিছু নিয়মনীতি ও পরামর্শ অনুসরণ করলে কষ্ট ছাড়াই রোজা পালন করা যায়।
ইফতারে যা খাবেন
রমজান মাসে বাঙ্গালিদের এসব ইফতারের মধ্যে অন্যতম হলো- ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনি, ডালবড়া, সবজিবড়া, আলুর চপ, খোলা খেজুর, হালিম, জালি কাবাব, জিলাপি, বুন্দিয়া ইত্যাদি। আরও রয়েছে বিভিন্ন ফল ও ফলের রস, আখের গুড়ের শরবত, নানা রং মিশ্রিত বাহারি শরবত। তাছাড়া মুখরোচক বিরিয়ানি ও তেহারি তো আছেই।
প্রশ্ন হলো, এসব মুখরোচক খাবার স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়েছে কিনা। বেসনে ও উপাদানে কৃত্রিম রং মেশানো হয়েছে কিনা, সেদিকে নজর দেওয়া উচিত। যে তেলে ভাজা হয়, সেই তেল একবারের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ, ব্যবহৃত তেল পুনরায় আগুনে ফোটানো হলে কয়েক ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য তৈরি হয়। তাছাড়া অপরিষ্কারভাবে ইফতারি তৈরি করলে পেটের পীড়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সুস্থভাবে বাঁচার জন্য যত্রতত্র খোলা খাবার না খাওয়াই উচিত। খুব কম ফলই পাওয়া যাবে যা ভেজালমুক্ত।
এক্ষেত্রে দোকানের তৈরি ইফতার ও সাহরিসামগ্রী না খাওয়া বা এড়িয়ে চলাই ভালো। সুস্থ, স্বাস্থ্যবান রোজাদারের জন্য ইফতারে খেজুর বা খোরমা, ঘরের তৈরি বিশুদ্ধ শরবত, কচি শসা, পিঁয়াজু, বুট, মৌসুমি ফল থাকা ভালো। ফলমূল খেলে ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং সহজে তা হজম হয়। রুচি অনুযায়ী বাসার রান্না করা নুডলসও খেতে পারেন। বেশি ভাজা-ভুনা, তেহারি, হালিম না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে বদহজম হতে পারে। রুচি পরিবর্তনের জন্য দু-একটি জিলাপি খেতে পারেন। তা ছাড়া গ্রীষ্মকালীন রমজানে পরিমাণমতো বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। এশা ও তারাবির নামাজের পর অভ্যাস অনুযায়ী পরিমাণমতো ভাত, মাছ অথবা মুরগির মাংস, ডাল ও সবজি খাবেন।
সাহরিতে যা খাবেন
রমজানে স্বাভাবিক নিয়ম পরিবর্তন করে সুবহে সাদিকের আগে ঘুম থেকে উঠে খাওয়া-দাওয়া সেরে নিতে হয়। সকালের নাশতার পরিবর্তে খুব ভোরে সারাদিনের উপবাসের সময় চলার মতো খাবারের প্রয়োজন হয়। শরীরটাকে সুস্থ রাখার জন্য সাহরি খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, সাহরির খাবার মুখরোচক, সহজপাচ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া প্রয়োজন। অধিক তেল, অধিক ঝাল, অধিক চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া একদম উচিত নয়।
ভাতের সঙ্গে মিশ্র সবজি, মাছ অথবা মাংস খাবেন। অনেকেই মনে করেন, যেহেতু সারাদিন না খেয়ে থাকতে হবে, তাই সাহরির সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত বেশি বেশি খাবার খেতে হবে, তা মোটেই ঠিক নয়। কারণ, চার-পাঁচ ঘণ্টা পার হলেই খাদ্যগুলো পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে গিয়ে হজম হয়ে যায়। তাই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি না খাওয়াই ভালো, বরং মাত্রাতিরিক্ত খেলে ক্ষতির শঙ্কাই বেশি।
রমজানে ডায়েট
রমজান মাসে রোজা রাখার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সহজেই তাঁর স্বাস্থ্যের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটাতে পারেন, যদি ঠিক ডায়েট অনুসরণ করা হয়। কিছু টিপস মনে রাখুন:
১১ মাস পর এ সময়ে রোজাদারদের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রায় হঠাৎ বেশ পরিবর্তন আসে। তাই যারা নিয়মিত রোজা রাখেন, তাদের খাদ্য গ্রহণ ও স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। ইফতার ও সাহরির খাবার নিয়ে যত্নবান হতে হবে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭