ইনসাইড বাংলাদেশ

শতাধিক সরকারি প্রতিষ্ঠান আমলাদের দখলে


প্রকাশ: 16/03/2024


Thumbnail

আমলারা কেবল চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ নিয়েই সন্তুষ্ট নন। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে অবসরের পর যোগদান করছেন। এই সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং কমিশনগুলোকে তারা রীতিমতো অবসর ক্লাব বানিয়ে ফেলেছেন।

অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, ১০০ এর বেশি সরকারি বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান এখন আমলাদের দখলে। আমলারাই এখন এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রক। এধরনের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক ডজন কমিশন রয়েছে, বিভিন্ন সেক্টর কর্পোরেশন রয়েছে এবং আছে ব্যাংক। এধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অবসর নেওয়া আমলারা চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে বিভিন্ন দায়িত্ব গ্রহণ করে রীতিমতো দখল করে রেখেছেন।

বাংলাদেশের যেসমস্ত কমিশনগুলো আছে সেসব কমিশনই এখন আমলাদের দখলে। এসমস্ত কমিশনগুলোর মধ্যে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে থাকাটা যেন আমলাদের জন্য চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য পদেও আমলাদেরকেই রাখা হচ্ছে। গত কয়েকটি পাবলিক সার্ভিস কমিশনে অন্যদের অবস্থান আস্তে আস্তে ক্রমশ ক্ষুণ্ন হয়ে গেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান পদটিও আমলারা স্থায়ীভাবে দখল করে নিয়েছেন। এই কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে আমলাদেরকে। তথ্য অধিকার কমিশনের প্রধান এখন আমলারাই হচ্ছেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রথমবার একজন শিক্ষককে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপর এটি এখন চিরস্থায়ীভাবে আমলাদের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। এমনকি এটির স্থায়ী সদস্যপদও আমলারাই দখল করেছেন। প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান পদ আমলাদের দখলে চলে গেছে। এবং আমলারাই এটি নিয়ন্ত্রণ করছে।

এভাবে যতগুলো কমিশন সরকার গঠন করেছে সবগুলো কমিশনেই এখন আমলাদের জয় জয় কার। অথচ এধরনের কমিশনগুলোর মূল চেতনা ছিল অন্যরকম। এধরনের কমিশনগুলোর লক্ষ্য ছিল, শিক্ষাবিদ, স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এধরনের কমিশনগুলোর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু আস্তে আস্তে এধরনের কমিশনগুলো আমলারা কুক্ষিগত করেছে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনে দীর্ঘদিন একজন শিক্ষাবিদ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন কিন্তু কিছু দিন ধরে এটি আমলাদের দখলে। একইভাবে মানবাধিকার কমিশন, তথ্য অধিকার কমিশনসহ অন্যান্য সব কমিশন দখল করে নিয়েছে আমলারা।

আমলাদের এখন দুই ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রথমত, তারা চেষ্টা করেন, চাকরির মেয়াদ ৫৯ বছর শেষ হলে নতুন করে চুক্তি পেতে। যখন তারা নতুন করে চুক্তি লাভে ব্যর্থ হন, দেন-দরবার, তদবির করেও সফল হতে পারেননা। তখন তারা দ্বিতীয় পদ্ধতি গ্রহণ করেন। তাহলো, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তারা ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন এবং সে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে তারা চেয়ারম্যান অথবা কোন পদ গ্রহণ করেন। এভাবেই সবগুলো কমিশন আমলারা এখন কুক্ষিগত করেছেন।

আমলাদের যারা কমিশনে জায়গা পান না তাদের জন্য রয়েছে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রায়ত্ত সবগুলো ব্যাংকের চেয়ারম্যান এখন আমলারা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ছাড়াও সাধারণ বীমা কর্পোরেশন, জীবন বীমা কর্পোরেশনের মতো বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোর চেয়ারম্যানও হয়েছেন আমলারা। এভাবেই সরকারি সব প্রতিষ্ঠানগুলো আমলারা দখল করে নিয়েছেন। বাংলাদেশে আমলাতন্ত্রের কোন অবসর নেই। অবসরের পর যে আমলারা কোথাও জায়গা পান না তাদের মতে হতভাগ্য আর কেউ নেই।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭