ইনসাইড বাংলাদেশ

নওগাঁয় বাড়ছে পানি সংকট


প্রকাশ: 17/03/2024


Thumbnail

নওগাঁয় বছর বছর পানির স্তর নিচে নামছে। ফলে ক্রমেই বাড়ছে পানি সংকট। এতে প্রভাব পড়ছে কৃষি, অর্থনীতি ও জনজীবনে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে এখনই পানির ব্যবহার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে নওগাঁয় ভূগর্ভস্থ পানির বর্তমান অবস্থা ও করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে নওগাঁ শহরের উকিল পাড়ায় বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) মৌসুমি মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও একুশে পরিষদ নওগাঁ এর উদ্যোগে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমাতে কম পানি ব্যবহার করে ফলনশীল ফসল চাষাবাদ করা সহ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে ব্যবহার ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে- ১ কেজি ধান উৎপাদন করতে বাংলাদেশে ৬৫০ লিটার পানির প্রয়োজন। ১ কেজি ধান থেকে মোটামুটি ৬৬০ গ্রাম চাল পাওয়া যায়। যেখানে একজন বাঙালি ৪০০ গ্রামের মতো ভাত খায়। অর্থাৎ দেড় দিনের ভাতের চাল উৎপাদন করতে পানির দরকার হয় ৬৫০ লিটার। এটি আবার স্বাদু বা মিঠা পানি।

মৌসুমি উপ-সহকারী কৃষি অফিসার লিয়াকত আলী বলেন- প্রতিদিন সাংসারিক বিভিন্ন কাজে আমরা প্রায় ৫০ লিটার পানি ব্যবহার করে থাকি। পানির অপচয় রোধ করতে এবং উঁচু ভবনের ছাদে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিছু পদ্ধতি পরিবর্তন করে পানি সংরক্ষণ ও অপচয় রোধ করা সম্ভব।

বাপা সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন- বরেন্দ্র এলাকায় ধানের আবাদ করা হচ্ছে। আর ধান চাষে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। এটি পানি সংকটের একটি কারণ। তবে যে এলাকায় যেসব ফসল চাষে উপযোগী সেসব ফসল রোপণ করা দরকার। এতে করে পানি সাশ্রয় হবে।

নওগাঁ সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন- কৃষিকাজে ভূগর্ভস্থের ৯০ শতাংশ, শিল্প ও কলকারখানায় ৬ শতাংশ এবং প্রাত্যহিক বা খাবার কাজে ৪ শতাংশ পানি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কৃষিতে অতিরিক্ত যে পানি ব্যবহার হচ্ছে তা কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে ব্যবহার করায় অভ্যস্ত হতে হবে।

তিনি বলেন- ভূগর্ভের নিচে পাইরেক্স শিলা অবস্থিত। যেখানে ভূগর্ভস্থ পানি বিদ্যমান। শুষ্ক মৌসুম এটি নিচের দিকে নেমে যায় এবং বর্ষা মৌসুমে উপরের দিকে আসে। অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের ফলে এই শিলাটির পানি শুকিয়ে যাবে। এতে এক ধরণের মৌলিক পদার্থ অর্থাৎ আর্সেনিক নির্গত হবে। এই পানি ব্যবহারের ফলে জনজীবনে ক্ষতি বয়ে নিয়ে আসবে। তাই ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার কমাতে হবে।

সাপাহার উপজেলার বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বলেন- এলাকা ভেদে পানির গভীরতা ১৯০ থেকে ২৫০ ফুট। বেশ কিছুদিন থেকে পানির স্তুর নিচে নেমেছে। এতে করে পানি উত্তোলন করতে খরচ বেশি পড়ছে। প্রতি ঘণ্টায় বলা যায় ১০-১২ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে একুশে পরিষদের সভাপতি এডভোকেট ডিএম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- নওগাঁ সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান, সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, মৌসুমির নির্বাহী পরিচালক হোসেন শহীদ ইকবাল রানা, উপ-নির্বাহী পরিচালক ইরফান আলী, ডাঃ ময়নুল হক দুলদুল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন জেলা শাখার সহ-সভাপতি এডভোকেট মকুল চন্দ্র কবিরাজ ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, একুশে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এম.এম রাসেল সহ অন্যরা। এসময় জেলার সংবাদকর্মী, সরকারি দপ্তরে কর্মকর্তা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭