ইনসাইড পলিটিক্স

যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের নির্বাচনকে বৈধতা দিল?


প্রকাশ: 17/03/2024


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল তাদের পূর্ণাঙ্গ কারিগরি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিআই) ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট (আইআরআই) এর যৌথ কারিগরি পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে গতকাল। 

এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নির্বাচনে বিভিন্ন ত্রুটি বিচ্যুতি হলেও সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে যে, পূর্ববর্তী নির্বাচনের তুলনায় এবার শারীরিক এবং অনলাইন সহিংসতা কম হয়েছে। তবে নির্বাচনে প্রতিযোগিতা অনুপস্থিতি এবং নিরাপত্তায় সরকারের বাড়তি নজর দেওয়ার প্রসঙ্গটিও উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এসব পদক্ষেপ এবং ইতিবাচক দিক সত্ত্বেও ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের গুণগত মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে কারিগরি রিপোর্টে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। 

এই প্রতিবেদনে রাষ্ট্রশাসক দল ও বিরোধীদের সহিংসতা রাজনৈতিক মেরুকরণ বৃদ্ধির প্রাক নির্বাচনী পরিবেশ রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে সহিংসতা, নাগরিক, স্বাধীনতার সংকোচন, বাকস্বাধীনতা ও সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতার অবনতির কারণে এ রকম ঘটেছে, নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ বলে তারা মন্তব্য করেছেন।

নিজেদের অভিজ্ঞতার আলোকে নির্বাচন কমিশন, সরকারের নির্বাহী আইন বিভাগ, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও অন্যান্য অংশীজনদের কাছে বেশ কিছু সুপারিশ রেখেছে এই নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দল। তারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আরও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য একটি মূল্যবান পথনকশা হিসেবে এই সুপারিশকে বিবেচনা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। অহিংস রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নির্বাচনী রাজনীতির নিয়মও অনুশীলনে সংস্কারের কথাও বলা হয়েছে এই কারিগরি প্রতিবেদনে।

আইআরআই এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জেষ্ঠ্য পরিচালক জোহানা কাও নির্বাচনে সহিংসতা নাগরিকদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচনকে পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক করতে হলে সব পক্ষকে অহিংস রাজনীতিকে প্রাধান্য দিতে হবে। এখানে তিনটি বিষয় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। 

প্রথমত, এই নির্বাচনে সহিংসতা কম হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে। সহিংসতা বন্ধের জন্য সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল বলেও এই প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয়েছে এবং এই নির্বাচন যে ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে তার দায় শুধুমাত্র একা ক্ষমতাসীন দল বা সরকারের নয়, বিরোধী দলেরও আছে। এবং সহিংসতার অভিযোগে বিরোধীদলও দুষ্ট এমন মতামত উঠে এসেছে এখান থেকে এবং এই নির্বাচনকে বাতিল করা নাকচ করে দেওয়া ইত্যাদি কোনো বক্তব্য আসেনি মার্কিন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কারিগরি প্রতিবেদনে। 

এ থেকে সুস্পষ্ট ভাবে বোঝা যায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে একটি মধ্যবর্তী অবস্থান গ্ৰহণ করেছেন। এই নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ হলেও নির্বাচনকে নাকচ করে দেননি। 

দ্বিতীয়ত, এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হওয়ার জন্য বিরোধী দলের দায় দায়িত্ব আছে বলে মার্কিন প্রতিবেদনে পরোক্ষভাবে উঠে এসেছে।

তৃতীয়ত, ভবিষ্যতে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য একটি পথনকশা তৈরি করা প্রয়োজন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এর ফলে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকে পরোক্ষ ভাবে হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৈধতা দিবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭