ইনসাইড পলিটিক্স

মির্জা ফখরুল: অসুস্থতা নাকি অভিমান


প্রকাশ: 17/03/2024


Thumbnail

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। তিনি এবং তার স্ত্রী সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও তার স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত। তারও শারীরিক অবস্থা ভালো না। একারণেই রাজনীতি থেকে তিনি দূরে রয়েছেন।

যদিও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন যে, তিনি রাজনীতিতে আছেন, থাকবেন এবং জিয়ার আদর্শের প্রতি তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে যে সমস্ত তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে এবং ঘটনাবলি যেদিকে মোড় নিচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির রাজনীতিতে থেকেও নেই, তিনি নিষ্ক্রিয়। 

অন্য সময় যখন তিনি সিঙ্গাপুরে গেছেন তখন তিনি সিঙ্গাপুর থেকে দলের নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নির্দেশনা দিতেন। এবার সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পর তার নামে দায় সারা বিবৃতি ছাড়া আর কোন কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করছেন খুবই কম। এ যোগাযোগগুলো তার শারীরিক অসুস্থতা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে বেশি। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অসুস্থতা নিয়ে বিএনপির মধ্যেও এক ধরনের ধোঁয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কোন নেতাই স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না তিনি কি অসুস্থ, কিভাবে চিকিৎসা নেওয়া হচ্ছে এবং এ অসুস্থতার পরবর্তীতে তিনি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। 

অন্যদিকে একাধিক সূত্র বলছে, ২৮ অক্টোবর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন জেলে ছিলেন সেই সময় বিএনপির নেতৃবৃন্দ যে আচরণ করেছে তাতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিমান করেছেন। যে দলটির জন্য তিনি এত ত্যাগ স্বীকার করলেন সেই দলের থেকে এই প্রতিদান, এটি তিনি বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন বলেও জানা গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেপ্তার হওয়ার পর, তার প্রতি সহানুভূতি দেখানো হয়নি, তার পরিবারের প্রতিও সহানুভূতি দেখানো হয়নি। এমনকি বিএনপির কোন নেতা তার অসুস্থ স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করারও কোন প্রয়োজন মনে করেনি বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

উল্লেখ্য যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরেই ক্যান্সারে ভুগছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম গ্রেপ্তার হওয়ার পর সকলেই প্রত্যাশা করেছিল যে, ফখরুলের স্ত্রীর সঙ্গে বিএনপির নেতৃবৃন্দ যোগাযোগ করবে এবং তার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে খোঁজ-খবর নিবে। কিন্তু বাস্তবে সে ধরনের কোন ঘটনায় ঘটেনি। এটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পুরো পরিবারকেই ব্যথিত করেছে বলে জানা গেছে। তখন থেকেই মির্জা ফখরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা অর্থাৎ তার কন্যা এবং স্ত্রী বিএনপির ব্যাপারে একটি অভিমান পুষে রেখেছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। 

সুস্থ হওয়ার পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন বিদেশে যাওয়ার অভিমত ব্যক্ত করেন তখনও অনেক নেতৃবৃন্দ তাকে বিদেশে যেতে বারণ করেছে। বিশেষ করে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এরকম পরিস্থিতিতে বিদেশে না গিয়ে দেশেই চিকিৎসা নেওয়ার কথা বলেছেন। এসময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার স্ত্রীর বিষয়টি তুলে ধরলেও বিএনপির হাই-কমান্ড থেকে তাকে কোন কিছু বলা হয়নি। এটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্য একটি বড় ধরনের অপমান হিসেবেই চিহ্নিত করা হচ্ছে। 

এরপর তিনি সিঙ্গাপুরে গিয়ে একরকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের যোগাযোগ এখন খুবই কম বলে বিএনপির একাধিক সূত্র দাবি করেছে। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পারিবারিক ভাবে এতটাই বিপর্যস্ত যে এখন তিনি রাজনীতির ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এজন্য আপাতত রাজনীতির মাঠে তাকে সরব দেখা যাবে না। তার স্ত্রীর অসুস্থতাই তাকে মুষড়ে দিয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র বলছে।

দলের প্রতি অভিমান বা অন্যান্য বিষয়গুলো অতটা তাৎপর্যপূর্ণ নয়। বরং স্ত্রীর অসুস্থতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কাতর করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। তবে অভিমান নাকি অসুস্থতা কোন কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দূরে আছেন তা নিয়ে বিএনপির মধ্যেও চর্চা চলছে। তবে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুপস্থিতি বিএনপিকে আরও কোণঠাসা অবস্থায় নিয়ে গেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭