ইনসাইড পলিটিক্স

মিন্টুর আওয়ামী কানেকশন: স্তম্ভিত তারেক


প্রকাশ: 18/03/2024


Thumbnail

নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে একশ কোটি টাকার বেশি উৎকোচ গ্রহণ করেছেন। সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করছেন। কাকে কাকে আটক করতে হবে এবং কারা কারা বিএনপিতে বড় ধরনের আন্দোলন করতে চায়, সরকারের জন্য বিপজ্জনক সেই নামের তালিকা সরবরাহ করেছেন। কাদেরকে বাইরে রাখলে কোন সমস্যা নেই সে নামও জানিয়েছেন সরকারি দলের লোকজনকে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেন বিএনপি কোনো বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে পারে সেজন্য আশ্বাসও দিয়েছেন। তার এই আশ্বাসের কারণেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনেকটা নির্ভর অবস্থায় নির্বাচন করেছে এবং বিএনপি যথারীতি নির্বাচন প্রতিরোধে কোন বড় ধরনের সহিংসতা বা নাশকতা করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। 

সম্প্রতি বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাছে আবদুল আউয়াল মিন্টুর একাধিক কর্মকাণ্ডের গোপন তথ্যাদি হাজির হয়েছে। বিএনপির এই নেতা ২৮ অক্টোবরের ঘটনার আগেই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ২৮ অক্টোবরেই কিছু করতে হবে, করে বিএনপিকে আটকানোর জন্য শাসক দলের নীতিনির্ধারকদের কাছে পরামর্শ দিয়েছিলেন। 

উল্লেখ্য যে, এই সংক্রান্ত বেশ কিছু খুদে বার্তা, টেলি আলাপ এখন তারেকের হাতে রয়েছে। ওই সমস্ত ক্ষুদে বার্তায় দেখা যায় যে, ২৮ অক্টোবরে বিএনপি কিছু একটা করবে, ঢাকা শহর দখল করবে। এ ব্যাপারে আগাম সতর্কবার্তা তিনি ক্ষমতাসীন দলের কাউকে কাউকে জানিয়েছিলেন। এই সময়ে যদি সরকার সক্রিয় না থাকে, সরকার যদি আগে থেকেই তৎপর না থাকে তাহলে ঢাকার রাজপথ বিএনপি দখল করে ফেলবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারের পতন ঘটবে না ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের এই অবস্থান অব্যাহত থাকবে বলে আবদুল আউয়াল মিন্টু ক্ষমতাসীন দলের কাছে একাধিক ব্যক্তির কাছে ক্ষুদে বার্তা দিয়েছিলেন। 

আবদুল আউয়াল মিন্টুর এই ক্ষুদে বার্তা পেয়েই আওয়ামী লীগ ২৮ অক্টোবরের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে এবং সতর্ক প্রহরা তৈরি করে। আওয়ামী লীগের অনেকের মনে করেছিলেন যে, ২৮ অক্টোবর বিএনপি আর কয়েকটি সমাবেশের মতো সমাবেশ করবে। বিএনপির পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তেমন বার্তাই দিয়েছিলেন। কিন্তু আবদুল আউয়াল মিন্টুর কাছে খবর ছিল যে, বিএনপি এদিন ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান গ্রহণ করবে এবং শেষ পর্যন্ত তারা সেই অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই সরকারের পতন দাবি করবে। আর এই সব ২৮ অক্টবরের গোপন পরিকল্পনার কথা বিএনপির অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতারাই জানতেন না। এমনকি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানতেন না। আবদুল আউয়াল মিন্টু এই তথ্য সরকারের কাছে বিক্রি করেছে বলে বিএনপির একাধিক নেতা দাবি করছেন। 

শুধু তাই নয়, ২৮ অক্টোবরের পরে আবদুল আউয়াল মিন্টুর সাথে সরকারের একাধিক ব্যক্তির গোপন যোগাযোগ হয় এবং প্রায় সার্বক্ষণিক এই যোগাযোগে আবদুল আউয়াল মিন্টু কারা কারা বিএনপির সংগঠন চালায়, সংগঠনের জন্য কারা কারা গুরুত্বপূর্ণ, কারা বাইরে থাকলে সংগঠনের বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে তাদের নাম প্রকাশ করেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। 

আবদুল আউয়াল মিন্টু পরামর্শ অনুযায়ী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে আমীর খসরু মাহমুদ সরকারের তালিকায় ছিল না। কিন্তু আবদুল আউয়াল মিন্টু, আমীর খসরু মাহমুদের নামটি উল্লেখ করেন। 

ধারণা করা হয় যে, আর্থিক লেনদেন এবং টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে আবদুল আউয়াল মিন্টুর সঙ্গে আমীর খসরুর মাহমুদের গোলযোগ থাকার কারণে আমীর খসরু মাহমুদের নাম দিয়েছিলেন মিন্টু এবং মিন্টুর কথায় শেষ পর্যন্ত আমীর খসরু মাহমুদ গ্রেপ্তার হন। আবার নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এদের ব্যাপারে মিন্টু উদার নীতি গ্রহণ করেন। কারণ তারা রাজনীতিতে আন্দোলনের বড় মাথাব্যাথার কারণ হবে বলেই মিন্টু অত্যন্ত দুটি ক্ষুদে বার্তায় সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তিকে জানিয়েছিলেন। 

এছাড়াও আবদুল আউয়াল মিন্টু ঢাকা শহরের বিভিন্ন মারকুটে নেতাদের তালিকা তৈরি করে এবং এদের অবস্থান কোথায় তা জানিয়ে দিয়েছিলেন সরকারের বিভিন্ন মহলকে। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, আবদুল আউয়াল মিন্টু বিএপির ঢাকা মহানগরের নেতা আমিনুলকে টেলিফোন করে তার গোপন অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান। আমিনুল তাকে গোপন অবস্থানের কথা জানান। এর পরপরই আমিনুল গ্রেপ্তার হন। আবদুল আউয়াল মিন্টু এরকম ভাবে সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে বলে বিএপির নেতারা এখন দাবি করছেন। এ সংক্রন্ত বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ এখন তারেক জিয়ার কাছে। তারেক জিয়া এ সমস্ত তথ্য পেয়ে অনেকটা হতবাক হয়ে গেছেন। এখন দেখা যাক মিন্টুর বিরুদ্ধে বিএনপি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭